আল্লাহর প্রিয়বান্দারা অন্যায় হত্যা করেন না

আল্লাহর প্রিয়বান্দারা অন্যায় হত্যা করেন না

মুফতী সালমান মানসুপুরী [ভারত] : আল্লাহর বিশেষ বান্দাগণ ও তাদের গুণাবলী অন্যায় হত্যা থেকে বেঁচে থাকা ‘ইবাদুর রাহমান’- এর গুণাবলীর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ এটাও হচ্ছে যে, সে কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা থেকে পরিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল্লাহর বিশেষ বান্দা তাঁরা, যারা কোন প্রাণ যাকে আল্লাহ তায়ালা হত্যা করা হারাম করেছেন তাকে সত্য কারণ ছাড়া হত্যা করে না।

প্রকাশ থাকে যে, ইসলামের দৃষ্টিতে কোন ব্যক্তিকে অন্যায় ভাবে হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ। কুরআনুল কারীম একজন নিরপরাধ ব্যক্তির হত্যাকে পুরো মানবজাতির হত্যা বলে ঘোষণা দিয়েছে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, এ কারণেই আমি বনী ইসরাঈলের প্রতি বিধান দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি প্রাণের বিনিময় ছাড়া প্রাণ অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ সৃষ্টি করার দণ্ডদান উদ্দেশ্য ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষকেই হত্যা করল। এবং যে কারো প্রাণ রক্ষা করল সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। (সূরা মায়েদা : ৩২) এ ছাড়া সূরা বানী ইসরাঈলে বলা হয়েছে : সে প্রাণকে হত্যা করে না, যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন, কিন্তু ন্যায়ভাবে। যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে নিহত হয়, আমি তার উত্তরাধিকারীকে ক্ষমতা দান করি। অতএব, সে যেন হত্যার ব্যাপারে সীম লঙ্গন না করে। নিশ্চয় সে সাহায্যপ্রাপ্ত। (সূরা বানী ইসরাঈল : ৩৩)

ঘটনা হচ্ছে যে, যদি পৃথিবীতে বিনা কারণে হত্যাযজ্ঞ শুরু হয়ে যায় তবে কোন মানুষের প্রাণ রক্ষা পাবে না এবং ভয় ও ত্রাসের কারণে মানব জীবনের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে যাবে। সুতরাং শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য খুন-খারাবী থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এ জন্য হাদীস শরীফে অন্যায় হত্যাকে ‘কবীরা’ গোনাহের মধ্যে গণণা করা হয়েছে। হযরত আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সর্ববৃহৎ কবীরা গোনাহ হচ্ছে চারটি : আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে শরীক করা, কোন ব্যক্তিকে অবৈধভাবে হত্যা করা, মাতা পিতার অবাধ্য হওয়া ও মিথ্যা কথা বলা। বর্ণনাকারী বলেন, হয়তো বা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। (সাহীহ বুখারী ২/১১৫, নং : ৬৮৭১)

হযরত ইবনে উমার রা. থেকে আরও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মুমিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ স্বস্তিতে থাকে, যে পর্যন্ত না সে কোন হারাম হত্যা ঘটায়। (সাহীহ বুখারী ২/১০১৪, নং : ৬৮৬২)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত লোক হচ্ছে তিনজন। যে লোক হারাম শরীফে অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়। যে লোক ইসলামী যুগে জাহিলী যুগের রেওয়াজ অন্বেষণ করে। যে লোক ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া কারো রক্তপাত দাবি করে। [সাহীহ বুখারী : ২/১০১২৬ নং : ৬৮৮২]

এ সকল হাদীস দ্বারা অন্যায় হত্যার কুফল সম্পর্কে জানতে আর কোন দ্বিধা থাকল না। পৃথিবীতে প্রথম হত্যাকাণ্ড ঘটনাকারীর উপর গোনাহের অংশ কুরআনুল কারীমে হযরত আদম আ.-এর দু ছেলে হাবিল ও কাবিলের আলোচনা করা হয়েছে। বিয়ের ব্যাপারে হিংসাত্মকভাবে কাবিল তার আপন ভাই হাবিলকে হত্যা করে। যা পৃথিবীর সর্বপ্রথম হত্যাকাণ্ড। এই অপরাধের কারণে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে যত অন্যায় হত্যা হবে তার অপরাধের অংশীদার কাবিলও হবে।

বুখারী ও মুসলিমে হযরত ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোন মানুষকে হত্যা করা হলে আদম আ. এর প্রথম সন্তান (কাবীল) এর উপর (অপরাধের) কিছু অংশ অবশ্যই পড়বে। কেননা সেই সর্বপ্রথম তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে রক্তপাতের রীতি প্রবর্তন করেছে। কোন কোন তাফসীরী বর্ণনা দ্বারা জানা যায় যে, কবর জগতে কাবীলের জন্য এ শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে যে, তার পা উরুর সাথে বেধে উল্টোভাবে লটকানো হয়েছে এবং তার মুখ সূর্যের দিকে থাকে। সূর্যের ঘুর্ণনের সাথে তার মুখও ঘুরতে থাকে। (যাতে সূর্যের তাপ সে অনুভব করতে পারে)। [মুজাহিদ, ইবনু জুবাইর, তাফসীরে ইবনে কাসীর মুকাম্মাল : ৪১৭-দারুস সালাম রিযাদ]

পৃথিবীর প্রথম হত্যাকারীর এই কঠিন শাস্তির কারণ হচ্ছে, অন্যায় হত্যার বিষয় শুধু নিহত ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত থাকে না বরং পরবর্তী বংশধরদের মাঝেও তার বিষয় বিস্তার লাভ করে। যখন যাকে সুযোগ পায় খুনের প্রতিশোধ নিয়ে নেয়। পৃথিবীতে কত যে সম্প্রদায় শুধু হত্যাযজ্ঞের কারণেই ধ্বংস হয়েছে। একজন মুমিনকে হত্যা করার গোনাহ এমনিই তো নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা কবীরা গোনাহ। কিন্তু বিশেষভাবে ঈমানদার ব্যক্তিকে হত্যা করা অনেক বড় গোনাহ। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছাশ্রমে মুসলমানকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন। (সূরা নিসা : ৯৩)

উক্ত আয়াতে কয়েকটি শাস্তি একসাথে বর্ণনা করা হয়েছে। (১) জাহানন্নামের অগ্নি। (২) অতঃপর তাতে দীর্ঘকাল পর্যন্ত থাকা। (৩) আল্লাহর ক্ষুব্ধ হওয়া। (৪) অতঃপর আল্লাহর অভিসম্পাত। (৫) অতঃপর ভীষণ শাস্তির প্রস্তুতি। কথা হলো, যদি এগুলোর মধ্যে একটি শাস্তিও হতো তাহলে ভয় দেখানোর জন্য যথেষ্ট হতো। কিন্তু এখানে আল্লাহ তায়ালা ক্ষুব্ধতায় এত জোশ এল যে, পাঁচটি শাস্তি এক জায়গায় একত্র করে দিলেন। [আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অন্যায় হত্যা থেকে হেফাযত করুক-আমীন] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী (গোনাহ) ও তাকে হত্যা করা কুফুরী কাজ। [সাহীহ বুখারী : ১/১২ নং : ৪৮, মুসলিম : ১/৫৮ নং : ৬৪]

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঐ সত্ত্বার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, কোন মুসলমানকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা আল্লাহর কাছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া অপেক্ষাও গুরুতর। (নাসায়ী : ২/১৬২ নং : ৩৯৯২, তিরমিযী : ১/২৫৯) মুসনাদে আহমাদে হযরত মুআবিয়া রা. থেকে বর্ণিত আছে যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আশা করা যায় সকল গোনাহ আল্লাহ মাফ করে দেবেন, কিন্তু ঐ ব্যক্তি যে কাফির অবস্থায় মারা যাবে অথবা ঐ ব্যক্তি যে কোন মুমিনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করবে। (তার ক্ষেত্রে আশা করা যায় না)। [মুসনাদে আহমাদ ১৬৯০৭, নাসায়ী : ২/১৬২ নং : ৩৯৯, আবু দাউদ : ২/৫৮৭]

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. ও আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যদি আসমান ও জমিনের সব অধিবাসী কোন একজন মুসলমানের হত্যায় শরীক হয় তবে আল্লাহ তায়ালা (সে অপরাধের শাস্তিস্বরূপ) এদের সবাইকে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করবেন। [আযযাওয়াজির আনিল বাইহাকী ১৫০, তিরমিযী নং : ১৩৯৮, আত-তারগীব নং : ৩৮১৩] একটি দুর্বল বর্ণনায়া আছে যে, যদি কোন ব্যক্তি এক বা অর্ধেক শব্দ দ্বারা কোন হত্যাকারীর সাহায্য করে তবে সে আল্লাহ তায়ালার সম্মুখে এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে, তার কপালে লেখা থাকবে, এ লোকটি আল্লাহ তায়ালার রহমত থেকে বঞ্চিত। [ইবনে মাজাহ : ২৬২০, আযযাওয়াজির : ১৫১] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজে সম্বোধন করে বলেন, আমার পরে তোমরা একে অন্যকে হত্যা করে কাফির হয়ে যেওনা। (বুখারী : ২/১০১৪ নং : ১৩৯৮, মুসলিম : ১/৫৮)

হরত উবাদা ইবনুস সামিত রা. থেকে বর্ণিত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে হত্যা করে আনন্দিত হয় আল্লাহ তায়ালা তার নফল বা ফরয কোন ইবাদাত কবুল করেন না। [জামিউল মুহলিকাত : ৮১, আবু দাউদ : ২/৫৮৭ নং : ৪২৭১]
আল্লামা গাসসানী রাহ. বলেন, এই হাদীসের অর্থ হলো যে, ফেতনার যামানায় যে ব্যক্তি নিজেকে সত্যের উপর মনে করে অন্যকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে, সে তার এমন কৃত খারাপ কাজের উপর শান্ত থাকে এবং তার তাওবার তাওফিক হয় না। [আযযাওয়াজির : ১৫২] হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে মুসলমান ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদ ও আমার রেসালতের স্বাক্ষ্য দেয় তার রক্ত তিন কাজের কোন এক কাজ করলে হালাল হয়ে যায়। (১) প্রাণের বদলা প্রাণ অর্থাৎ কেসাস। (২) বিবাহিত যিনাকার (যে শরীয়তসম্মত ভাবে যিনা করেছে বলে প্রমানিত হবে।)।

(৩) এবং ইসলাম ধর্ম থেকে ফিরে গেলে ও মিল্লাতে ইসলাম থেকে পৃথক হয়ে গেলে (মুরতাদ হয়ে গেলে)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন, যখন আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান গণী রা. বিদ্রোহীদের বেষ্টনীর কারণে তার ঘরে আটকা ছিলেন এবং বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছিল তখন একদিন তিনি লোকদেরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন, ‘‘তোমরা বল, তোমরা কি কারণে আমাকে হত্যা করতে চাও? আমি নিজে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি, তিন কারণ ছাড়া কোন মুসলমানকে হত্যা করা হালাল নয়। (১) বিবাহিত যিনাকার। যার উপর শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাকে পাথর মেরে হত্যা করার শাস্তি দেয়া হবে। (২) কোন মুসলমানকে জেনে বুঝে হত্যাকারী। তাকে কেসাস হিসাবে হত্যা করা হবে।

(৩) ঐ মুরতাদ, যে ইসলাম গ্রহনের পর ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে। সুতরাং আমি না মুসলমান থাকাকালীন কোন ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছি, না ইসলামের আগে জাহিলিয়াতের যুগে এমন গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়েছি, না আমি কাউকে অন্যায় হত্যা করেছি যে, তার প্রতিশোধ হিসাবে আমাকে হত্যা করতে হবে, না আমি ইসলাম গ্রহণের পর মুরতাদ হয়েছি। আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া ইবাদাত বন্দেগীর যোগ্য কেউ নেই এবং আরোও স্বাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তার রাসূল।” [মুসনাদে আহমাদ/তাহকীক-আহমদ শাকির : ১/৩৫৮, নং : ৪৫২- দারুল হাদীস কায়রো]

উপরোক্ত হাদীসে যে তিন ব্যক্তিকে হত্যা জায়েয হওয়ার কথা বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে স্মরণ রাখতে হবে যে, তার সম্পর্ক শাস্তি ও কেসাসের সাথে। যার প্রয়োগ যে কোন ব্যক্তি চাইলেই সে করতে পারবে না। বরং তা প্রয়োগের অধিকার কেবল ইসলামী হুকুমাতের। সুতরাং ইসলামী হুকুমাত যদি শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত শর্তাবলীর ভিত্তিতে প্রমাণ পেয়ে এ শাস্তি কার্যকর করে তবে তা মানব সমাজের জন্য শিক্ষণীয় হয়ে সমাজে শান্তি নিরাপত্তা এবং জান-মালের হেফাযতের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু যদি হুকুমাত ব্যতিত সাধারণ জনগনকে শাস্তি প্রয়োগের অধিকার দেয়া হয় তবে খুন-খারাবী বন্ধ হবে না বরং আরও বৃদ্ধি পাবে।

লেখক : মুহাদ্দিস ও প্রধান মুফতী, জামিআ কাসেমিয়া শাহী মুরাদাবাদ, উত্তর প্রদেশ, ভারত।


অনুবাদ : মাওলানা নুরুল ইসলাম শ্রীপুরী
সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *