কাউসার মাহমুদ : শীত আসি আসি ভাব। শীতের হালকা মৃদু আবেশ এখন প্রকৃতির গায়। কুয়াশার সকাল শীতের এ আগমনি বার্তা নিয়ে এখন হাজির। প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়েছে অন্যরকম আনন্দ হিল্লোল। পাখীদের কিচিরমিচির আওয়াজে মুগ্ধ চারপাশ। অবশ্য শীত এলেই সবুজ বাংলায় এসে ভীর জমে অতিথি পাখির। দলবেঁধে তারা ছুটে আসে আমাদের প্রাণের বাংলায়। শীতের সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের হাওর-বাঁওড়, নদী, খাল-বিলে আগমন ঘটে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির। রঙবেরঙয়ের বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখির কলতানে মুখরিত হয় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন খাল-বিল।
শীতের এ সময় সাইবেরিয়াসহ সংলগ্ন এলাকায় বৈরী আবহাওয়া থাকে। এই সময়ে শুরু হয় তুষারঝড়ের দাপট। তাই হিমশীতল সেই অসহিষ্ণু পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে অতিথি পাখিরা ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের বিল-ঝিল-হাওরে। যাদের একটা অংশ প্রতি বছরই অতিথি হয়ে আসে বাংলাদেশে এবং শীত মৌসুম শেষে স্বদেশের দিকে পাড়ি দেয় তারা। বাংলার হাওর-বাঁওড়ে তখন দেখা যায় এক অন্যরূপ। অতিথি পাখিদের কুজন আর তাদের দলবেঁধে ছুটে চলার যে মনোরম দৃশ্য। তা এক কথায় অসাধারণ। পাখিদের আগমণে প্রকৃতির রূপে যেন তখন অন্যরকম সৌন্দর্যের ছোঁয়া লাগে।
অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়েই দেশের হাওরগুলোয় অতিথি পাখির আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ হাওর হাকালুকিসহ কাউওয়া দীঘি ও বাইক্কার বিলে এসে ভীর করে অতিথি পাখিরা। প্রতিদিন সন্ধ্যার আগে এ স্নিগ্ধ ভোরে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠে হাওর-তীরবর্তী এলাকা। অনেকেই তখন সেখানে অতিথি পাখিদের দেখতে যায়। পাখিদের রাজ্যে কেই-বা না যেতে চায়। ছোট-বড় ২৩৮টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত হাকালুকি হাওর। দেশের অন্যান্য হাওর- বিলেও অতিথি পাখির আনাগোনা শুরু হয় প্রায় একই সময়ে। প্রতিটি হাওরে পাখির কলতানে মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
তবে রাজধানীতে যারা থাকেন, তারাও কিন্ত অতিথি পাখিদের চাইলেই দেখতে পারেন। এজন্য খুব বেশী ঝামেলা পোহাতে হবে না অাপনাদের। একটু কষ্ট করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ে গেলেই হবে। শীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকেও অতিথি পাখিদের আগমন ঘটে। প্রতি সন্ধ্যায় তথন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেক মুখরিত হয়ে উঠেছে অতিথি পাখির কলতানে। শীত মৌসুমে হাজার হাজার মাইল দূর থেকে বিশেষত রাশিয়ার সাইবেরিয়া ও সংলগ্ন এলাকা থেকে অতিথি পাখি আসে আমাদের দেশে।