ইকরা মসজিদে গুণীজ্ঞানীদের সংস্পর্শে সমৃদ্ধ এক ইতেকাফ : এবিসি জাবের

ইকরা মসজিদে গুণীজ্ঞানীদের সংস্পর্শে সমৃদ্ধ এক ইতেকাফ : এবিসি জাবের

এবিসি জাবের। সমাজকর্মী, উদ্যোক্তা ও সংগঠক। পড়াশোনার পাঠ নিয়েছেন মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিতর্ক, লেখালেখি, আবৃত্তিসহ নানান সাংস্কৃতিক কাজে জড়িয়ে ছিলেন এবং আছেনও বটে। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কাজ করছেন সামাজিকভাবে নানান অবহেলিত জনগোষ্ঠীর কল্যাণে। পথশিশুদের কল্যাণে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবা ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা লোকাল এডুকেশন এন্ড ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-লিডোতে কাজ করছেন। পাশাপাশি ভাস্ট ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও আলেম মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম ফোরামে তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মমুখী জীবনের এক অদম্য বাসনায় নানান সামাজিক, সাংস্কৃতিক কল্যাণমূলক উদ্যোগে জড়িত এই মানুষটার সাথে আড্ডায় কথা হচ্ছিল নানান বিষয়ে। তারই কিছু অংশ পাথেয়’র পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন কাউসার মাহমুদ

পাথেয় : কর্মব্যস্ততায় রমজান কেমন উপভোগ করছেন?

এবিসি জাবের : আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো। দশ দিনে তারাবির খতম শেষ করেছি। কর্মব্যস্ততায় তারাবির চলমান জামাত ধরা মুশকিল। এবার একটু ভিন্ন আমেজে রমজান কেটে যাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। ইবাদতের হক আদায় কতটুকু হচ্ছে সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। বাকি আল্লাহর উপর আশা দয়া ও ক্ষমার।

পাথেয় : রমজানে বিশেষ কোন সামাজিক ক্যাম্পেইন করছেন?

এবিসি জাবের : রমজানকে কেন্দ্র করে শিশুদের জন্য আর্থিক অনুদানের একটা আহ্বান রাখছি। পথশিশুদের জন্য লিডো’র একটা হোম আছে ‘পিস হোম’ বলি আমরা। সেখানে স্বাভাবিক শিশুদের সাথে বিশেষ শিশুরাও থাকে। তাদের পরিবার নাই। তাদের জন্য একটা চ্যারিটি ইফতার আয়োজন করেছি। আর এছাড়া, আমাদের স্কুল আণ্ডার দ্য স্কাইতে শিশুদের জন্য ইফতার ও ঈদের খাবার ও পোশাকের ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি। বিস্তারিত আমাদের পেইজ www.facebook.com/leedo.org  তে দেখা যাবে। এছাড়া, একটা ক্যাম্পেইনের আওয়াজ তুলেছি সেটা হলো, দাসমুক্তির। জাকাত ও সাদকার মাধ্যমে দাসমুক্তির আহ্বান জানিয়েছি।

পাথেয় : সেটা কেমন?

এবিসি জাবের : যৌনপল্লীর সেই আমিনা, উর্মি আর জান্নাতদের কথা ভেবে দেখুন। যারা আজ এই নিগ্রহের শিকার। তারা একপ্রকার দাসীই বটে। যদি কেউ সে জাহান্নামের জীবন থেকে মুক্তি চায় তার জন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হয়। এছাড়া এ জায়গায় আরও জটিলতা, অপরাধ জগতসহ ও অনেক দুর্বিষহ আলাপ আছে। তাদের জন্য আমাদের কিছু করা দরকার বলে মনে করি। কেউ তো ভিকটিম আবার কেউ প্রয়োজনের শিকার। এছাড়া আমাদের সামাজিক অবক্ষয় ও কথিত কর্পোরেট সমাজের নোংরামির কথা ভাবলে গা কাঁটা দিয়ে উঠে।

পাথেয় : অবশ্যই একটা ভাল চিন্তা। এদের কথা ভাবা হয় না সেইভাবে। ভাবা উচিত। আচ্ছা, সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। এই ব্যাপারে কী কিছু বলবেন?

এবিসি জাবের : এটার স্বপ্ন বহুদিনের। সুযোগ পেয়েছি তাই শুরু করেছি কিছু সুহৃদের সাথে। আসলে আমরা যারা মাদরাসায় পড়েছি বা ইসলামী জীবনযাপনে অভ্যস্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদেরকে দেশের বিরুদ্ধে প্রমাণের একটা ঘৃণ্য ক্যাম্পেইন চালু আছে। আমরা আমাদের কথা বলিনি তাই এই চক্র এটাকে কাজে লাগিয়েছে। সময়ক্ষেপণ হয়েছে এবং সময় বয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে ৭১ এ আমাদের উলামাদের অবস্থান এবং মুক্তিযুদ্ধের সাথে ইসলামের বিপরীতমুখী অবস্থানের ঘৃণ্য প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠানো এবং আগামী প্রজন্মকে সচেতন করা সময়ের দাবী।

পাথেয় : নানামুখী ব্যস্ততায় আপনি থাকেন। ঈদ নিয়ে ভাবনা কী?  

এবিসি জাবের :  তেমন কিছুই না। কিছু স্বপ্ন দেখি সমাজ, সংস্কৃতি নিয়ে। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগুতে চাই। শিল্প, সাহিত্য আর সংস্কৃতির জগতে পরিচ্ছন্ন কিছু কাজ করতে চাই। আমাদের দেশের কালচারাল সংকট প্রকট আর দেয়াল চারপাশে। এই দেয়াল ভাঙ্গা ও সংকট দূরীকরণে কিছু স্বপ্ন দেখি। আর ঈদের তেমন কোন প্রস্তুতি নাই। ঢাকায় থাকি। আমরা তো ঢাকায় প্রবাসী টাইপ। এখানেই ছোট পরিসরে ঈদ কাটবে। তবে ঈদের দিন আমাদের আশ্রয়ে থাকা শিশুদের দ্বারা পথে অবস্থানরত শিশুদের খাবারের একটা আয়োজন প্ল্যান করছি। সেখানে থাকবো ইনশাল্লাহ। আনন্দ করবো। এই শসিহুরা গত কয়েক বছর আগে ঈদে নতুন জামা আর খাবারের অপেক্ষায় থাকতো আজ তারা দিচ্ছে। বিষয়টা গর্বের।

পাথেয় : আপনি তো ইকরা মসজিদের ইতেকাফে কিছু সময় কাটালেন, কেমন লাগলো?

এবিসি জাবের : আলহাদুলিল্লাহ। ভালো লাগলো। ইকরা মসজিদে গুণীজ্ঞানীদের সংস্পর্শে সমৃদ্ধ এক ইতেকাফ চলছে। ভালো লাগছে।

পাথেয় : ভালো লাগলো আপনার সাথে কথা বলে। ভালো থাকবেন। কখনও সময় নিয়ে আড্ডা হবে। আলাপ হবে ইনশাআল্লাহ।

এবিসি জাবের : শুকরিয়া। পাথেয়’র অগ্রযাত্রা কামনা করছি। ইনশাল্লাহ আড্ডা হবে। অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *