ইসলাম ছাড়া আর কোথাও শান্তি, মুক্তি ও আশ্রয় নেই

ইসলাম ছাড়া আর কোথাও শান্তি, মুক্তি ও আশ্রয় নেই

ইসলাম ছাড়া আর কোথাও শান্তি, মুক্তি ও আশ্রয় নেই

মুহাম্মাদ আইয়ুব :: সপ্তাহ দুয়েক আগে সারা দুনিয়ায় হৈচৈ ফেলে আত্মহত্যা করে পরপারে চলে গেল বলিউডের উঠতি জনপ্রিয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। মাস ছয়েক ধরে প্রচন্ড মানসিক রোগে ভুগছিল সে। কোটি কোটি টাকা, জশ-খ্যাতি, ভক্ত-অনুরক্ত সবকিছু থাকা সত্ত্বেও সে আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেছে নেয়। কিন্তু কেন?!

সুশান্তের মতো ভারতে প্রত্যেকদিন অনেক মানুষ শান্তি হিসেবে, পৃথিবীর জঞ্জাল থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে!(নাউজুবিল্লাহ) আচ্ছা সুশান্তকে কি কেউ নিকৃষ্ট এ পথ থেকে উদ্ধার করতে কেউ তৎপর ছিল? হ্যাঁ ছিল! মানসিক ডাক্তার। কিন্তু সেও এ যাত্রায় ব্যর্থ। তবে আজ কিছু সফল ব্যক্তিদের গল্প আপনাদের জানাব, যারা মানসিক রোগে ভুগে এর থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে। এবং এর জন্য তারা একটি শীতল ছায়ার বৃক্ষের নিচে আশ্রয় নিয়েছে।

সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে সেই বৃক্ষের নিচে একবার যে আশ্রয় নেয় তার আর অবসাদ আর ভুলে ভরা জীবনের দিকে ফিরে যেতে হয় না। তাই আজ আমি সেই শীতল ছায়ার বৃক্ষের শীতলতার তিনটি টাটকা গল্প শোনাব।

১. লকডাউনের এই সময় পৃথিবীর প্রায় দুই কোটি মানুষ গৃহবন্দী। গৃহবন্দীর এই সময়টাতে অনেকে অনেক কাজ করে সময় পার করছেন। কেউ নেটে কেউ সন্তানদের সাথে কেউ কেউ স্ত্রীর সাথে, কেউ বা আবার অফিসের কাজে, কেউ তো দিন পার করছে বই পড়ে আবার কেউ নিত্য নতুন আবিষ্কার করে। তবে সবার থেকে ব্যতিক্রম অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় রেসলার উইলহেলম। করোনার ঘরবন্দী সময়ে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনায় বসে যান। ইসলাম সম্পর্কে যতই পড়ছেন ততই অভিভূত হচ্ছেন। অতঃপর তার জীবনে নেমে আসে জান্নাতি সুবাস। গত ১৬ এপ্রিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সেদিন কালিমা পাঠ করে তার ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। ইন্সটাগ্রামের সেই পোস্টে তিনি লেখেন, করোনাকালে ঘরে বসে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করেছি। এই পড়াশোনা আমাকে আমার বিশ্বাস খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে। যখনই আমার কঠিন সময় ছিল তখনই ইসলামিক বিশ্বাস আমাকে শক্তি দিয়েছে। আমার ধর্ম বিশ্বাস এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। আমি আমার প্রকৃত সত্তাকে চিনতে পেরেছি। আমি গর্বিত যে কালিমা পাঠ করেছি। এখন থেকে আমি একজন মুসলমান।

সুবহানাল্লাহ! তার লিখনীর প্রতিটা শব্দে আমার পশম দাঁড়িয়ে গেছে! কতই না চমৎকার আমার ধর্ম ইসলাম। এর পরশে যেই আসে স-ই প্রশান্তি অনুভব করে।

২. তানাশা দোনা বারবিয়ারি অকেচ। কেনিয়ার জনপ্রিয় রেডিও উপস্থাপক, উদ্যোক্তা ও মডেল। লকডাউনের এই দিনগুলোতে ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করতেই অস্থির জীবনে আসে সুস্থিরতার ঢেউ। প্রশান্ত চিত্তে উচ্চারণ করেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’। আহ! কত সুন্দর জীবন ওদের!! কেনিয়ার গণমাধ্যম নাইরোবি নিউজ জানিয়েছে, লকডাউন চলাকালে গত এপ্রিলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন কেনিয়ান মডেল তানাশা দোনা। মুসলিম হয়ে নিজের নাম রাখেন আয়েশা। গত ২৫ এপ্রিল ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি প্রকাশ করেন এবং সেদিনই জীবনের প্রথম রোজা রাখেন তানাশা দোনা।

৩. লকডাউনে তৃতীয় তারকা নওমুসলিম হলেন লিসা মার্সেদেজ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম মেট্রো জানিয়েছে, লকডাউন চলাকালীন ইসলাম গ্রহণ করেন ব্রিটিশ জ্যামাইকার এই নৃত্যশিল্পী। তবে দুই মাস পর ৩মে ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি প্রকাশ করেন লিসা। এদিকে ইসলাম গ্রহণের কারণে লিসা হুমকি পেয়েছেন বলে ড্যান্স হল ম্যাগ নামে স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।

পাঠক! রেসলার উইলহেলমের কথাগুলো পড়ার পর ইসলাম ধর্মের শান্তি আর শীতলতা সম্পর্কে আর কিছু কি বলার আছে?! নাহ, একদমই না। সূর্যের যেমন পরিচয় লাগেনা; তার আলোই তার পরিচয় ঠিক তেমনি ইসলামেরও কোন পরিচয় লাগেনা; তার শান্তির বাণী, শীতলতার গল্প, সাম্যনীতিই তার পরিচয়। তার সবখানেই একটা সুখ আর প্রশান্তির ছাপ স্পষ্ট যা ভাষায় অব্যক্ত।

এই তো চার পাঁচ দিন আগেও বাংলা নাটকের জনপ্রিয় চেনা মুখ তরুণী এ্যানি খাঁন। সবধরণের অভিনয় থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বললেন, আমি মুসলিম, একদিন আমাকে মরতে হবে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে, জবাবদিহি করতে হবে। তাই আমি আল্লাহর ভয়ে অভিনয় থেকে সরে যাচ্ছি। মাশাআল্লাহ কি চমৎকার উপলব্ধি।

এ্যানি খাঁনকে তার ধর্ম স্বস্তি দিয়েছে, শীতল ছায়ায় আশ্রয় দিয়েছে, চীর শান্তির পথ দেখিয়েছে কিন্তু সুশান্ত সিং রাজপুত?! তার ধর্ম তাকে প্রশান্তির চাদরে জড়িয়ে নিতে পারেনি,হতাশার বৃত্ত থেকে বাঁচাতে পারেনি। সে তো দূরের কথা তার ধর্ম তো তাদের ভগবানকেই বাঁচাতে পারেনা তাকে আর কেমন করে বাঁচাবে?!! কত অসহায় এক ধর্ম!!!

ইসলাম ছাড়া আর কোথাও আজ শান্তি নেই, মুক্তি নেই, আশ্রয় নেই। তাইতো আজ সাড়ে চৌদ্দশ বছর পরেও মানুষ দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করছে। তারপরও তুমি বলবে এটা সেকেলের ধর্ম! অসাড় চিন্তার ধর্ম! সাম্প্রদায়িকতার ধর্ম! সন্ত্রাসীদের ধর্ম! নাউজুবিল্লাহ মিন যালিক। পরিশেষে সকল নওমুসলিম ভাই বোনদের জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ।

লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *