উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় নগরবাসী, পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ

উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় নগরবাসী, পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সমাবেশ এবং বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশ ঘিরে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। এদিন বিএনপির লোকজন ঢাকায় এসে সমাবেশ শেষে বসে পড়বেন কি না, কী অবস্থান থাকবে সরকারি দলের এবং এসব ক্ষেত্রে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

আগের সমাবেশগুলোয় যে ধরনের যানজটে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে, ২৮ তারিখ সেই রূপ দেখা মিলবে কি না, এসব বিষয় নিয়ে চায়ের দোকান থেকে উচ্চ স্তরের আড্ডায় আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। যদিও যত সময় কাছাকাছি হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী বক্তব্য আলোচনার পালে আরও হাওয়া দিচ্ছে।

যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ওই দিন অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে। তবে সব ধরনের শঙ্কা পেছনে ফেলে সুষ্ঠুভাবে সমাবেশ কিংবা মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, এমনটাই আশা করছে পুলিশ।

ডিএমপি সূত্র বলছে, ২৮ অক্টোবর সমাবেশ ও মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ বেশ কিছু দল চিঠি দিয়েছে। ডিএমপি কমিশনার এসব বিষয় পর্যালোচনা করার জন্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে দফায় দফায় মিটিং করছেন। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তার কোনও হুমকি রয়েছে কি না, এসব বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

সমাবেশ করতে ডিএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করার বেশ কয়েক দিন পেরিয়ে গেলেও, মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত পর্যন্ত কাউকেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আরও যে সময় বাকি আছে, সব বিবেচনা করে ডিএমপির সিদ্ধান্তের বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে এখন পর্যন্ত অনুমতির বিষয়ে ইতিবাচক রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনও ধরনের গুজব কিংবা জানমালের ক্ষতি, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটাতে না পারে, সে ব্যাপারে বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক মামলাগুলোর অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অগ্রগতি জানাতে বলা হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, তাদের অবস্থান কোথায়, তা নিশ্চিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযানে বিএনপি নেতাকর্মীসহ জামায়াত-সংশ্লিষ্টতার বিষয়গুলো সম্পর্কেও অবহিত হতে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ডিএমপির একটি সূত্র বলছে, হঠাৎ ২৮ অক্টোবরকে সামনে রেখে যারা রাজধানীতে ঢুকবেন, তাদের বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতার শেষ হলে কিছুটা নিরাপত্তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আরও তৎপর হতে পারবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানীতে ঢোকার প্রতিটি মুখে চালানো হবে তল্লাশি। সন্দেহ হলেই পড়তে হবে পুলিশি জেরার মুখে। সমাবেশে অংশ নিয়ে নেতাকর্মীরা যদি অবস্থান নেন এবং রাজধানী অবরোধ করার মতো কোনও ঘটনা ঘটে, তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সব ধরনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, ২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে গাড়ি বন্ধ রাখার কোনও নির্দেশনা নেই। বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলরত গণপরিবহন চলাচল করবে। তবে কোনও ধরনের সহিংসতা, ভাঙচুর বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হলে নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএমপির অপারেশন্স শাখার যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মনে করে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে এই গণতান্ত্রিক অধিকারকে সমুন্নত রেখে মিটিং-মিছিল বা সমাবেশ করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, যদি কেউ সমাবেশকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে তাহলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সব ধরনের পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে। যখন যে পরিস্থিতি উদ্ভব হবে, তখন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি।

এদিকে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, ২৮ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কেউ যেন জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে, সে ব্যাপারে তৎপর রয়েছে র‌্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন।

 

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *