- তামীম আব্দুল্লাহ
কফি আমাদের তীব্র, শান্ত এবং দার্শনিক করে তোলে।
— জোনাথন সুইফট
ধোঁয়া ওঠা কফির কাপ, যেন- মুছে দেয় ক্লান্তির ছাপ। এভাবেই এ পানীয় কফিকে নিজেদের জিবনের অংশ করে নিয়েছে মানুষ। আজ (১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক কফি দিবস। কফি শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার কর্মপ্রচেষ্টার বৈশ্বিক স্বীকৃতিস্বরূপ দিনটি। তবে দিনটির মূল উদ্দেশ্য কৃষক থেকে কোম্পানি পর্যন্ত সব স্তরের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা।
২০১৪ সালে ১ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক কফি দিবস হিসাবে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক কফি সংস্থা (আইসিও)। ২০১৫ সালে ইতালিতে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক কফি দিবস উদযাপিত হয়।
কফি যেকোনো জায়গায় মানানসই একটি পানীয়। শরীর ও মনকে চাঙ্গা করার জন্য দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত যুক্ত করা যেতেই পারে এক কাপ কফি।
পানীয় হিসেবে বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে কফি। উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বেশ কিছু উপকারী উপাদানের জন্য কফি অনেক রোগের ঝুঁকি কমাতেও সক্ষম। এছাড়াও কফি পানে রয়েছে নানান উপকারিতা।
অনেক মানুষ আছেন যাদের দিন শুরু হয় কফি দিয়ে। হালকা তিতকুটে এই পানীয় বিশ্বজুড়েই অত্যন্ত জনপ্রিয়। এক কাপ কফি পান করলে তা আপনাকে সারাদিন চাঙ্গা রাখবে। দিনভর কর্মক্ষম থাকতে চাইলে সকালবেলা ১ কাপ কফি খেতে পারেন। পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, সব ধরনের কফিই কিছু না কিছু উপকার বয়ে আনবে। ব্ল্যাক কফি হোক বা এসপ্রেসো। কফি খাওয়ার আরও কিছু কারণ জেনে নিই চলুন-
উদ্বিগ্নতা দূর করে
আমাদের মস্তিষ্ক সংক্রান্ত নিউরোট্রান্সমিটারকে ব্লক করে ক্যাফেইন। এটি উদ্দীপক জাতীয়, যে কারণে আমরা মেজাজ ধরে রাখতে পারি ও মানসিক শক্তির অনুভব করি। বিভিন্ন ধরনের চাপ সামলে নির্বিঘ্নে কাজে মনোযোগ দেওয়ার জন্য এক কাপ কফির বিকল্প নেই। এটি আমাদের উদ্বিগ্নতা কমিয়ে কাজে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।
হজম ভালো করে
হজমের সমস্যা ঠিক করার জন্য খেতে পারেন কফি। এই পানীয় আপনার বিপাকীয় হার ৩-১১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি আপনার শরীরের জন্য বেশ উপকারী এবং কফিতে একবার অভ্যস্ত হতে পারলেই নানা সুবিধা পাওয়া যায়। আপনার যদি নিয়মিত কফি পানের অভ্যাস থাকে তবে হজম ক্ষমতা আরও ভালো হবে।
শক্তি বৃদ্ধি করে
আপনি যদি কফি পান করেন তবে তা আপনার অ্যাড্রেনালিন লেভেল বাড়াতে কাজ করে এবং ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এর ফলে যেসব চর্বি কোষের জন্য ক্ষতিকারক সেগুলো দূর করে। তাই শরীর চর্চার আগে কফি পান করলে তা অনেক বেশি উপকার করে। এর কারণেই শরীর চর্চার পরও আপনি দুর্বল অনুভব করবেন না।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
আমাদের সুস্থতার জন্য অ্যান্টি অক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ খাবার কতটা জরুরি এটি সবারই কম-বেশি জানা রয়েছে। যদি নিয়মিত কফি পান করা হয় তবে শরীরে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট তৈরি হবে। কারণ কফি হলো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এমনকী বিভিন্ন ফল ও সবজির তুলনায় বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মিলবে কফিতে।
অসুখ থেকে দূরে রাখে
বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত, যারা নিয়মিত কফি পান করেন তারা মারাত্মক সব অসুখ যেমন লিভার ক্যান্সার, স্ট্রোক, ডিপ্রেশন এবং আলঝাইমার থেকে দূরে থাকেন। কফিতে থাকা নানা উপকারী উপাদান এসব রোগের থেকে আপনাকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
প্রতিদিন দুই কাপ পর্যন্ত কফি পান করতে পারেন। এর বেশি পান না করাই ভালো। এই অভ্যাস আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে। তবে পেট খারাপ বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যায় কফি পান না করাই ভালো।