কমিউনিটি ক্লিনিক : ঘরের দুয়ারে স্বাস্থ্যসেবা (৩য় পর্ব)

কমিউনিটি ক্লিনিক : ঘরের দুয়ারে স্বাস্থ্যসেবা (৩য় পর্ব)

কমিউনিটি ক্লিনিক : ঘরের দুয়ারে স্বাস্থ্যসেবা

মোহাম্মদ ফয়সুল আলম : শুক্রবার ব্যতীত সপ্তাহে ৬ দিন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার কমিউনিটি ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবা প্রদান করেন। স্বাস্থ্যকর্মী এবং পরিবার কল্যাণ সহকারীগণ সপ্তাহে ৩ দিন করে কমিউনিটি ক্লিনিকে বসেন। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগণ স্বাস্থ্য সহকারীদের তদারকি করবেন। প্রশাসনিক কর্ম এলাকায় (প্রতি ইউনিয়নে ৯টি) ওয়ার্ডভিত্তিক মাঠকর্মীদের পদায়ন করা হয়। যদি কর্মীর সংখ্যা বেশি হয় তবে জনসংখ্যার ভিত্তিতে তা সমন্বয় করে পদায়ন করা হয়।

স্বাস্থ্য সহকারী অথবা পরিবার কল্যাণ সহকারী একে অপরের অনুপস্থিতিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে সকল সেবা নিশ্চিত করেন। কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য স্বাস্থ্য সহকারী এবং পরিবারকল্যাণ সহকারী বাড়ি পরিদর্শনকালীন সময় আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানে সক্রিয়ভাবে কাজ করে থাকেন।

যে সকল গর্ভবতী মহিলা কমিউনিটি ক্লিনিক হতে প্রসবপূর্বক ও প্রসবোত্তর সেবা গ্রহণ করেননি, স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবারকল্যাণ সহকারীগণ তাদের খুঁজে বের করে কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা ব্যবস্থায় নিয়ে আসেন। এ পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকে ৮২,২০,৯৭০ জনকে প্রসবপূর্ব এবং ২৪,১১,৫৩৬ জনকে প্রসব পরবর্তী সেবা দেওয়া হয়। ৬৬,০০০ এর অধিক স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হয়। এছাড়া যে সব নারী-পুরুষ ইপিআই, যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ইত্যাদি বিষয়ে কমিউনিটি ক্লিনিক হতে সেবা গ্রহণ করেননি তাদেরও এ সেবার আওতায় নিয়ে আসা হয়। কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম সফল, শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রেফারেল সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার সুফল ভোগ করছেন গ্রামীণ জনপদের মানুষ। দিনে দিনে সম্প্রসারিত হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার কার্যক্রম। ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোই হবে গ্রামীণ জনপদের স্বাস্থ্যসেবার তথ্য ভাণ্ডার। সরকার গ্রামীণ জনপদের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে তহবিল গঠন করা হবে। স্বেচ্ছায় যারা দেবেন, তাদের কাছ থেকেই তহবিলের টাকা গ্রহণ করা হবে। রোগীদের টাকা দিতে বাধ্য করা হবে না। রোগীদের কেউ দিতে চাইলে তাও গ্রহণ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে যে-কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করলে তা সফল হবেই, এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ এ কমিউনিটি ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক এমন একটা উদ্ভাবনী শক্তি, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এটা বাংলাদেশের জন্য এক বিরাট অর্জন। এ অর্জনে দেশবাসী গর্বিত।

 লেখক : কলামিস্ট

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *