ক্রোয়েশিয়ার অনিন্দ্য সুন্দর মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার

ক্রোয়েশিয়ার অনিন্দ্য সুন্দর মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দক্ষিণপূর্ব ইউরোপের গণতান্ত্রিক দেশ ক্রোয়েশিয়া। ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। ফুটবলের জন্য ব্যাপক পরিচিত এই দেশটিতে অল্প সংখ্যক (১.৪%) মুসলিমের বসবাস। স্বল্পসংখ্যক এই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য দেশটিতে রয়েছে ইসলামিক সেন্টার ও নয়নাভিরাম সুন্দর মসজিদ। ভেতর ও বাহির সবদিক থেকেই অনিন্দ্য সুন্দর এ মসজিদ দেখলে চোখ জুড়িয়ে আসে। সেখানকার মসজিদের দিন কিংবা রাতের সব দৃশ্যেই মানুষের হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রশান্ত অনুভূতি। এক অভূতপূর্ব সম্মোহন আটকে রাখে মসজিদের সৌন্দর্য্য মৃগ্ধতায়। তেমনি একটি মসজিদ রিজেকা ইসলামিক সেন্টার।

ক্রোয়েশিয়ার ব্যয়বহুল শহরে রিজেকা ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদটি অবস্থিত।১০ হাজার ৮০০ মিটার জায়গা জুড়ে অবস্থিত মসজিদটি। মসজিদটিতে কংক্রিট ও ইস্পাতের তৈরি সুউচ্চ একটি মিনার রয়েছে। পুরো মসজিদটি ৬ টি গম্বুজ ও আধা গম্বুজে আবৃতি। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এ মসজিদটি ক্রোয়েশিয়াকে বিশ্ব দরবারে নতুন পরিচয়ে তুলে ধরেছে। ২০১৩ সাল পর্যন্ত রিজেকা ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদ খোলা ছিল না। যা এখন সবার জন্য উন্মুক্ত।

ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদটির ডিজাইন করেছিলেন ক্রোয়েশিয়ার বিখ্যাত ভাস্কর শিল্পী দুশান ডিজামুঞ্জা। প্রথমে তিনি অতি সুন্দর একটি ক্ষুদ্র মডেল তৈরি করেছিলেন। পরে সেই ক্ষুদ্র নকশা দেখে স্থপতি ডার্কো ভ্লাহোবি এবং ব্রাঙ্কো ভুয়িনোভি মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে মিনারসহ নতুনমাত্রা যোগ করেন।

মসজিদটি তারা রাউন্ড গম্বুজ আকৃতিতে তৈরি করেন। এতে একটি রাউন্ড গম্বুজ অন্য গম্বুজের ওপর স্থাপন করেন। তা দেখতে মনে হয় যে মাঠের এক দিক থেকে ওঠে তা অন্য পাশে গিয়ে শেষ হয়েছে। মসজিদের একক মিনারটি শিল্পকর্মের অনন্য সংযোজন। যা দেখতে মনে হয় যেন তা মসজিদটিকে আকাশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে দিয়েছে।

রাত নামতেই মসজিদটি এক অন্যরূপে প্রকাশিত হয় যেন। রাত্রি আলোতে মসজিদটির অপূর্ব সৌন্দর্য প্রকাশ পায়। আলোকজ্জ্বল বাহারি বাতিতে মসজিদের ভেতরের নকশা দেখতে চোখ জুড়িয়ে যায়। যা মুসুল্লুদির হৃদয়কে প্রশান্ত করে তোলে। নামাজে আনে মনোযোগ। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে এই মসজিদে প্রবেশের পর এক স্বস্তির নিঃশ্বাস অনুভূত হয় যেন। নিমিশেই দূর হয় সমস্ত ক্লান্তিভাব।

ক্রোয়েশিয়ার ব্যয়বহুল শহর রিজেকার মুসলিম জনসাধারণ ১৯৬৮ সালে প্রস্তাব করে যে, ১০ হাজার মুসলমানের নামাজ পড়ার উপযোগী মসজিদ নির্মাণ করা উচিত।রিজেকের অধিকাংশ মসলিম যুদ্ধবিধ্বস্ত বসনিয়া-হারজেগোভিনাসহ পাশ্ববর্তী দেশ থেকে এসেছে।

ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী ক্রোয়েশিয়া (Republika Hrvatska রেপুব্লিকা হ্র্‌ভ়াৎস্কা)। এটির রাজধানী জাগ্রেব। দেশটির আয়তস ৫৬.৫৯৪ বর্গ কি.মি. (২১,৮৫১ বর্গ মাইল) এবং জনসংখ্যা ৪.২৮ মিলিয়ন, যাদের অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক।

ক্রোটরা ৬ষ্ঠ শতকে এখানে আসে এবং নবম শতাব্দির মধ্যেই তারা অঞ্চলটিকে দুইটি জমিদারিত্বের মাধ্যমে সুসংগঠিত করে তোলে। ৯২৫ খ্রিস্টাব্দে তোমিসলাভ প্রথম রাজা হিসেবে আভির্ভূত হন এবং তিনি ক্রোশিয়াকে রাজ্যে উন্নীত করেন, যেটি প্রায় দুই শতকেরও বেশি সময় ধরে তার সার্বভৌমত্ব ধরে রেখেছিল। রাজা চতুর্থ পিটার ক্রেসিমির এবং দিমিতার জভনমিরির আমলে দেশটি তার উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *