গাজা যুদ্ধের নতুন মোড়, হামাসের প্রস্তাব পরীক্ষা করছে ইসরাইল

গাজা যুদ্ধের নতুন মোড়, হামাসের প্রস্তাব পরীক্ষা করছে ইসরাইল

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সর্বশেষ অস্ত্রবিরতি-পণবন্দী মুক্তির রূপরেখা নিয়ে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের প্রতিক্রিয়া পরীক্ষা করে দেখছে ইসরাইল। বুধবার রাতে ইসরাইল এ তথ্য জানিয়েছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের মাধ্যমে গোয়েন্দা সংস্থা মোশাদ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পণবন্দী চুক্তির রূপরেখা প্রশ্নে হামাসের যে মন্তব্য’ মধ্যস্তততাকারীরা পেয়েছে, তা তারা ইসরাইলি আলোচকদের কাছে ‌’পৌঁছে দিয়েছে।’

সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইসরাইল মন্তব্যগুলো পরীক্ষা করে দেখছে, এবং মধ্যস্ততাকারীদের কাছে জবাব দেবে।’

হামাস পরে নিশ্চিত করে যে তারা তাদের সর্বশেষ দাবিগুলো দাখিল করেছে। তারা এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ‘যুদ্ধ বন্ধ করার সমঝোতা করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং আমরা মধ্যস্ততাকারীদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি।’

হামাস জানায়, ‘আমরা যুদ্ধ বন্ধ এবং গাজা উপত্যকা থেকে পূর্ণ প্রত্যাহারের লক্ষ্য নিয়ে কিছু ধারণা মধ্যস্ততাকারীদের দিয়েছি।’ তারা দাবি করে, তারা তাদের দাবির প্রতি নমনীয় হয়েছে, তবে ইসরাইল ‘প্রতারণা করা এবং পিছলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।’

পরে কাতারভিত্তিক হামাসের পলিটব্যুরোর নেতা ইসমাইল হানিয়া কাতার ও মিসরের মধ্যস্ততাকারীদের সাথে ধারণাগুলো নিয়ে কথা বলেন। এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে তারা তুর্কি কর্মকর্তাদের সাথেও আলোচনা করেছে।

হামাস জানায়, ‘চলমান প্রস্তাবগুলোর বিষয়বস্তু নিয়ে হামাস ইতিবাচক রয়েছে।’

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং এখনো রয়ে যাওয়া ১১৬ জন বন্দীকে উদ্ধারের জন্য ছয় মাসের বেশি সময় ধরে আলোচনা চললেও এখন পর্যন্ত কোনো সাফল্য আসেনি।

বর্তমানে যে সূত্র ধরে শান্তি আলোচনা চলছে, তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মে মাসের শেষ দিকে উত্থাপন করেছিলেন। এটি ইসরাইলের প্রস্তাব বলেই জানানো হয়েছিল। হামাস এই প্রস্তাবকে ইতিবাচক বলে অভিহিত করলেও ইসরাইল তা গ্রহণ করার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।

ইসরাইলের এক কর্মকর্তা জানান, হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবে ইসরাইলি প্রস্তাবের ধারা ৮ ও ১৪ নিয়ে মতবিরোধ অনেকটা কমিয়ে আনবে। ধারা দুটি প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি এবং প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের মধ্যকার আলোচনা-সংশ্লিষ্ট।

ইসরাইল বলে আসছে, চুক্তিতে এমন কিছু থাকতে হবে যাতে করে তারা ইচ্ছা করলেই গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে আবার লড়াই শুরু করতে পারবে। আর হামাস এমন নিশ্চয়তা চাচ্ছে যে একবার দুই পক্ষ প্রাথমিক ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে আর যুদ্ধ শুরু করা যাবে না।

এই প্রেক্ষাপটে ইসরাইল এখন পরবর্তী দফার আলোচনা শুরু করবে কিা তা তাদের ওপরই নির্ভর করছে। তবে ইসরাইল তাদের কর্মকর্তাদের আলোচনা শুরু করতে বললেও চুক্তি হতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

এদিকে এক সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন, হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবটি আগেরগুলোর চেয়ে ভালো হলেও হামাস এখনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে অটল রয়েছে। আর তা মেনে নেয়া ইসরাইলের পক্ষে সম্ভব হবে না।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও চান না, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি। এমনকি হামাসের সর্বশেষ প্রস্তাবটি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করতেই প্রধানমন্ত্রীর অফিস কয়েক ঘণ্টা দেরি করেছে।

এদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমসে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর দুই শীর্ষ জেনারেল বিশ্বাস করেন যে অবশিষ্ট পণবন্দীদের মুক্তির জন্য স্থায়ী যুদ্ধবিরতিই সর্বোত্তম পন্থা। তারা অবশ্য তাদের পরিচয় প্রকাশ করেননি।

সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল ও জেরুসালেম পোস্ট

Related Articles