চিল্লাইয়া কন ঠিক কি না | রশীদ জামীল

চিল্লাইয়া কন ঠিক কি না | রশীদ জামীল

চিল্লাইয়া কন ঠিক কি না | রশীদ জামীল

বক্তা কিছুক্ষণ পরপর বলছেন, ‘চিল্লাইয়া কন ঠিক কি না’। শ্রোতারা বলছে ‘ঠিক’। তারমানে বক্তা থেকে শ্রোতারই বেশি জানে। না জানলে তিনি ঠিক বললেন না বেঠিক- সেটা তারা জাস্টিফাই করবে কীভাবে!

আরো কিছুক্ষণ গাজিকালু-চম্পাবতীর পূঁতি পাঠ করে বক্তা বলছেন, ‘জোরে কন সুবানাল্লা’! শ্রোতারা সুবানাল্লা বলছে।

একসময় ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রতি শুক্রবার সিনেমা পাতা থাকতো। এখন থাকে কিনা- জানি না। নতুন সিনেমা রিলিজের বিজ্ঞাপন থাকতো এমন: ‘ইনশাআল্লাহ, আগামী শুক্রবার মহা-সমারোহে মুক্তি পাচ্ছে মধু পাগলা’।

সিনে-জগতের লোকজন কোথায় ইনশাআল্লাহ ফিট করবে আর কোথায় আস্তাগফিরুল্লাহ, সেটা না বুঝলে কিছুক্ষণ সহ্য করা যায়, কিন্তু একজন বক্তা যখন ওয়াজ মাহফিলে আবুল-তাবুল বকওয়াসের পরেও বলেন, ‘সুবানাল্লাহ কন’, তখন কার কী করতে ইচ্ছা করে- জানি না, আমার মন চায় লোকটাকে পৌষের পুকুরে ঠাণ্ডা পানিতে সারারাত দাঁড় করিয়ে রেখে ফজর পর্যন্ত আস্তাগফিরুল্লাহ বলানো।

আরো যারা, মোটামুটি ভালো ভালো কথা বলেন, একটু পরপর ‘ঠিক কিনা’ জিজ্ঞেস করা এবং ‘সুবানাল্লাহ’ বলানো তাঁদেরও এক প্রকার মুদ্রাদোষ। সুবহানাল্লাহ বলা সওয়াবের কাজ, এটা আমরা বুঝি, কিন্তু যে ব্যাপারটি বুঝি না- সেটি হলো, শ্রোতাদের কাছ থেকে এভাবে জোর করে সুবহানাল্লাহ বের করতে হয় কেন? বক্তার কথা যদি শ্রোতার অন্তরে গিয়ে লাগে, সুবহানাল্লাহ তো নিজ থেকে বেরুনোর কথা।

(‘সুবানাল্লা’ এভাবে লেখার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। খেয়াল করে দেখবেন বাজারি বক্তারা সুবহানাল্লাহ বা সুবহানআল্লাহ বলান না। তারা ‘সুবানাল্লা’ বলতে বলেন। ‘সুবহান’ মানে মহাপবিত্র, ‘আল্লাহ’ মানে আল্লাহ। তাহলে সুবহানআল্লাহ মানে মহাপবিত্র আল্লাহ। ‘সুবান’ শব্দের কোনো অর্থ নেই। এই বক্তাদের জিজ্ঞেস করা দরকার তাদের এই ‘সুবানাল্লা’র মানেটা কী?

লেখক : প্রবাসী লেখক ও গবেষক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *