‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে ৬ লাখ বাংলাদেশি ঘর ও চাকরি হারান’

‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে ৬ লাখ বাংলাদেশি ঘর ও চাকরি হারান’

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশে প্রতিবছর ৬ লাখ ৬ হাজার বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত ও চাকরি হারাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (১ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে “টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সামিট-২০২৩” শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য জানান তিনি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব আমিনা জে মোহাম্মদ।

সেমিনারে বক্তারা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার ওপর জোর দিয়েছেন। তারা বর্ধিত অর্থায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের প্রতিশ্রুতি প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।

সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা এই ধরনের বাস্তবতার সম্মুখীন হচ্ছে ধনী দেশগুলোর ত্রুটির কারণে। এই দেশগুলো বিপুল গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গত করে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা সৃষ্টি করে। কার্বন নিঃসরণে বাংলাদেশের অবদান মাত্র ০.৪৭%, যা বিশ্বে সর্বনিম্ন।”

অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মতো বাংলাদেশও চায় ধনী দেশগুলোর বোঝা ভাগাভাগি করুক। এসডিজির ১৭ লক্ষ্য অনুযায়ী, উন্নত দেশগুলো এসডিজি অর্জনের জন্য অর্থ ও প্রযুক্তি দেবে। উন্নত দেশগুলো তাদের জিডিপির ০.৭% জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু মাত্র ছয়টি দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে।

মোমেন বলেন, “অর্থ ও প্রযুক্তি ছাড়া এসডিজি আদৌ অর্জন করা সম্ভব নয়।”

জাতিসংঘের উপ-মহাসচিব আমিনা জে মোহাম্মদ বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত এবং শরণার্থী সংকট এসডিজিতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খাদ্য ব্যবস্থার উন্নতি এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভালো উদাহরণ তৈরি করেছে, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার অভাব বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গেছে।”

তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সবুজ প্রযুক্তিতে মানসম্পন্ন শিক্ষা, স্বাস্থ্যের রূপান্তরে প্রচুর বিনিয়োগের ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “এসডিজি অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্থান এবং প্রযুক্তিগুলোকে আনলক করার পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমতকে একত্রিত করতে আমরা আপনাদের (জাতিসংঘের) ওপর নির্ভর করছি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সংলাপের জন্য একটি সক্ষম পরিবেশের মাধ্যমে আরও অনেক দূর যেতে পারে।”

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আখতার হোসেন, অরোমা দত্ত এমপি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধদ্যাপক মাহবুবা নাসরীন, ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কাবীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সূত্র : ঢাকা ট্রিবিউন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *