জলবায়ু সমস্যায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর দায়

জলবায়ু সমস্যায় শিল্পোন্নত দেশগুলোর দায়

জলবায়ু সমস্যা

শিল্পোন্নত দেশগুলোকে দায় নিতে হবে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বাংলাদেশের গলার কাঁটা মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা। বিশ্ব সম্প্রদায়কে এর দায় না নিয়ে উপায় নেই। কারণ, বিশ্ব সামান্য দানা অনুদান পাঠিয়ে, বিবৃতি দিয়ে দায় এড়াতে পারে না। যেখানে জাতিসংঘ আছে অন্যান্য সংগঠন আছে- তাদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় সহজেই।

আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে হৃদয়ঙ্গম করানোর চেষ্টা করেছেন। সেখানে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে ‘বান্দুং নীতিমালা’ সমুন্নত রাখাবিষয়ক এক সাধারণ আলোচনায় তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজভূমে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়াই সংকটের একমাত্র সমাধান। এ সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। আর্থ-সামাজিক সাফল্য সত্ত্বেও বাংলাদেশকে বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সংকট- এ দুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট এবং এর মূল গভীরভাবে মিয়ানমারে প্রোথিত। তাই এর সমাধানও মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই খুঁজতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। এতে আমাদের দেশ এবং এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করছি।’

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দায় খুবই নগণ্য। তার পরও বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাবে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে।’ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে হবে। জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের সামনে আবির্ভূত রোহিঙ্গা ও জলবায়ু সমস্যা নামের দুই চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য রেখেছেন, তা খুবই প্রাসঙ্গিক।

জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনের ফোরামকে এজন্য বেছে নেওয়াও তাৎপর্যের দাবিদার। বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য রোহিঙ্গা ও জলবায়ু সমস্যা বিষফোঁড়া হিসেবে চেপে বসেছে। রোহিঙ্গারা ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী মিয়ানমারের নাগরিক। তাদের সসম্মানে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধু বাংলাদেশকে ১১ লাখ লোকের অবাঞ্ছিত ঝামেলা থেকে মুক্ত করবে না, মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য এবং সংহতিকেও সুসংহত করবে।

আমরা মনে করি, জলবায়ু সমস্যার জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলো অথচ এ সমস্যায় বাংলাদেশ গভীর সংকটের মুখে। ফলে এ সংকট মোকাবিলায় শিল্পোন্নত দেশগুলোকে দায় গ্রহণ করতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *