জাতীয় বেফাক থেকে ওমরার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত : মুরশিদ

জাতীয় বেফাক থেকে ওমরার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত : মুরশিদ

বেফাকুল মাদারিসিদ্দীনিয়্যাহ বাংলাদেশের অধীনে নরসিংদীর জামিয়া ইসলামিয়া হানিফিয়া বাঘিবাড়ির মেশকাত জামাতের শিক্ষার্থী মুরশিদুল ইসলাম প্রথম স্থান অধিকার করে। বোর্ড এই নৈপূণ্যে পবিত্র ওমরা হজের পুরস্কার ঘোষণা করেছিল। মুরশিদ জাতীয় বেফাকের পুরস্কার হাতে পেয়ে মহান আল্লাহর রাব্বুল আলামীনের কাবা জিয়ারতে যাচ্ছে বুধবার। কেমন লাগছে, কী ভাবছেন_ এ জাতীয় অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মুরশিদ। তার সঙ্গে কথা বলেছেন পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকমের সহসম্পাদক কাউসার মাহমুদ ও আদিল মাহমুদ। পাঠকের উদ্দেশে সাক্ষাৎকারের চুম্বুকাংশটুকু তুলে দেয়া হলো—

পাথেয় : আসসালামু আলাইকুম! কেমন আছেন?
মুরশিদ : ওয়ালাইকুম আসসালাম, আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।

পাথেয় : প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন এমন চমৎকার এবং আশাব্যাঞ্জক ফলাফলের জন্য।
মুরশিদ : ধন্যবাদ আপনাদেরও।

পাথেয় : প্রথমেই জানতে চাইবো এতো ভালো রেজাল্ট করার পেছনে আপনার মূলমন্ত্র কি ছিলো?

মুরশিদ : আসলে মূলমন্ত্র কিছুই না। এটা আল্লাহর মেহেরবানী। তবে, আমি যা করেছি এর পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমার সব শিক্ষকদের। তারা সবসময় আমাকে সার্বিকভাবে দেখাশোনা করেছেন। বিশেষ করে আমাদের মাদরাসা অর্থাৎ জামিয়া ইসলামিয়া হানিফিয়া বাঘিবাড়ি (নরসিংদী) মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শওকত আলী কাসেমী এবং মাদরাসার উপদেষ্টা মুফতী মোহাম্মাদ আলী সাহেব হুজুর সর্বদা আমার খোঁজ-খবর নিতেন। পড়াশোনা কি করছি, কেমন হচ্ছে এর খবর রাখতেন। বিশেষত মুফতী মোহাম্মদ আলী সাহেব হুজুর আমাকে আরবীতে পরীক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। কীভাবে আরবীতে পরীক্ষা দিতে হয় তা হাতে কলমে বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমার এ সফলতার পেছনে শতভাগ অবদান আমার উস্তাদদের।

পাথেয় : নিশ্চয়ই আপনি জানেন, আপনি যে বোর্ড থেকে মেশকাত (ফযীলত:২) পরীক্ষা দিলেন সে বছরই বোর্ডের প্রতিষ্ঠা এবং এ বোর্ড থেকেই সারা বাংলাদেশে সম্মিলিত বোর্ডে (মাস্টার্স) দাওরা হাদীসে ১ম হয়েছিলেন ইলিয়াস হাসান। বোর্ডের এমন সফলতাকে পরীক্ষার্থী হিসেবে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

মুরশিদ : এক্ষেত্রে আমাদের শায়খ কুতুবে বাঙাল শায়খুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ দা:বা:’র শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। তার প্রতিষ্ঠিত এ বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি বলবো, এই বোর্ড সম্মিলিত শিক্ষা বোর্ডে প্রথম বছরই যে রেজাল্ট দেখিয়েছে এটা একটা মাইলফলক। আমাদের জন্য গৌরবের। তাছাড়া আমাদের বোর্ডে অন্তভুক্ত যে মাদরসাগুলো ছিলো সেসব মাদরসায় মহাসচিব মহোদয় নিজে ও বোর্ডের তত্বাবধানে যেভাবে পড়ালেখার খোঁজ রেখেছেন- এটা আশাব্যাঞ্জক ছিল।

পাথেয় : (আনন্দের কথা) মেশকাত জামাতে দ্বীনি বোর্ডে প্রথম হওয়ায় পুরস্কার হিসেবে পবিত্র ওমরাহ পালনে পাঠানো হচ্ছে আপনাকে। কেমন লাগছে! অনুভূতি কী?

মুরশিদ :(হাসি) আলহামদুলিল্লাহ! অনেক বেশী ভালো লাগছে। বায়তুল্লাহর জিয়ারত। জীবনে এরচেয়ে আর সুখের কি হতে পারে! আসলে পরীক্ষায় ভালো করেছি বলে নয়, বেশী আনন্দ লাগছে ওমরাহর কথা ভেবে। আল্লাহ আমাকে কবুল করেছেন বলেই হয়তো আমার মতো অধমের বায়তুল্লাহ জিয়ারত হচ্ছে ইনশাআল্লাহ।

আমি অসংখ্য শুকরিয়া জানাই আমাদের দ্বীনি বোর্ডের সম্মানিত চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেব হুজুর এবং মহাসচিব মুফতী মোহাম্মাদ আলী সাহেব দা.বা.’র। তারাই আমাকে এতবড় পুরস্কারের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

পাথেয়: দ্বীনি বোর্ডের এ মহান উদ্যোগকে আপনি কীভাবে দেখছেন! আপনার এ পুরস্কার দেখে সামনে ছাত্ররা পড়াশোনায় উৎসাহ পাবে কী?

মুরশিদ :দ্বীনি বোর্ডের এ উদ্যোগকে আমি ভাষায় ব্যক্ত করতে পারছি না। আমার মনে হয় বাংলাদেশের কওমী শিক্ষা ইতিহাসে এটিই প্রথম যে, কোনও বোর্ড তাদের স্ট্যান্ড করা ছাত্রকে এতবড় পুরস্কার দিলো। এ সম্মানের কোনও ব্যখ্যা আমার কাছে নেই। অবশ্যই এর দ্বারা ছাত্ররা আরও বেশী উৎসাহী, উদ্যমী হবে। পড়াশোনায় ব্যাপক গতি আসবে ইনশাআল্লাহ।


এ পুরস্কার অব্যাহত থাকবে (ইনশাআল্লাহ)। সামনে যারাই ভালো করবে তাদের ভাগ্যেও রয়েছে এ পুরস্কার। পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের সুযোগ


পাথেয়: আপনি তো বোর্ডের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ সাহেব হুজুরের দোআ নিতে গিয়েছেন গত রোববার। এ ব্যাপারে কী বললেন তিনি।

মুরশিদ : হুজুরের কাছে যাওয়া তো পরম সৌভাগ্যের। মন ভরে দোআ করলেন। ভবিষ্যতে যেন আরও ভালো করি এ ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। একজন খাঁটি ওয়ারিসে নবী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার প্রত্যয় গ্রহণ করতে বলেছেন। তবে, আরও একটি খুশির সংবাদ আছে। যেটা আমি আপনাদের পরে দিতে চাচ্ছি।

পাথেয়: বলে ফেলুন। আমরা আগ্রহী হয়ে আছি। আপনার কাছ থেকে এখনই বিদায় নিব

মুরশিদ : আলহামদুলিল্লাহ! হুজুর বলেছেন এ পুরস্কার অব্যাহত থাকবে (ইনশাআল্লাহ)। সামনে যারাই ভালো করবে তাদের ভাগ্যেও রয়েছে এ পুরস্কার। পবিত্র হজ ও ওমরাহ পালনের সুযোগ।

পাথেয়: এখন বিদায় নিচ্ছি, শুকরিয়া আপনাকে। শেষ সময়ে এমন আনন্দময় একটি শুভ সংবাদ দেয়ার জন্য আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

মুরশিদ : আপনাদেরও শুকরিয়া জানাচ্ছি। ধন্যবাদ।

https://scontent.fdac15-1.fna.fbcdn.net/v/t1.15752-9/s2048x2048/33076246_1976657729025630_8399705890550185984_n.jpg?_nc_cat=0&_nc_eui2=AeHc8mtK1R9kDH-It33IMi4H6Dbd7eNfHJ7eC8oizI3Hb4fsPbuaxSZ714UevfwTFjLMGg01v5SIRMlhQADIz0vU0G8PXoBrD-vjzE3myGpb3g&oh=8fa7ae7fca6b97789e982d207e6f7de5&oe=5B872C0D

সম্পাদনা : মাসউদুল কাদির

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *