পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাষ দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এই প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। একই সাথে এই সময়ে মূল্যস্ফীতি আরো খানিকটা বাড়বে বলে মনে করছে ম্যানিলাভিত্তিক বহুজাতিক এই সংস্থাটি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বন্যার কথা উল্লেখ করেছে এডিবি।
গতকাল বুধবার এডিবির ফ্ল্যাগশিপ প্রকাশনা ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ সেম্পেটম্বর সংখ্যায় এই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এর আগে গত এপ্রিলের পূর্বাভাসে এডিবি বলেছিল, প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। এখন তা কমে ৫ দশমিক ১ শতাংশ হবে বলা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসে বলেছিল এডিবি। এখন বলছে এই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশে উন্নীত হবে।
কেন জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমবে- এর একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছে এডিবি। তারা বলেছে, গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। তার সাথে সাম্প্রতিক বন্যার প্রভাবে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুই কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাবে।
এডিবির রিপোর্টে বলা হয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতি ও অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে চাহিদা কমবে। পণ্য ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়া এবং টাকার অবমূল্যায়ন হওয়ায় মূল্যস্ফীতির হার বাড়ন্ত অবস্থায় রয়েছে। তবে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় চলতি হিসাবের ঘাটতি কমেছে।
রাজস্ব ও আর্থিক নীতিতে কঠোরতা অব্যাহত থাকবে বলে এডিবির ধারণা। এ ছাড়া ক্রয় ও বিনিয়োগ আরো কমবে। নেতিবাচক ঝুঁকি থাকায় সামষ্টিক অর্থনীতির পূর্বাভাস অত্যন্ত অনিশ্চিত। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ভঙ্গুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আর্থিক খাতের দুর্বলতা ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দেবে।
এডিবি বলেছে, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, সুদ ও টাকার বিনিময় হারের স্থিতিশীল করা এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের ওপর সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নির্ভর করবে বলে মনে করছে এডিবি।
ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক হিসাবের ওপর চাপ, আমদানি নিয়ন্ত্রণ ও বেসরকারি বিনিয়োগের ধীরগতির কারণে গত দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ শতাংশের নিচে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ; ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষাপণ করা হয়েছে। চলমান চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনীতিবিদরা একে ‘উচ্চাভিলাষী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। ক’দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের কিছু বেশি হলেই, আলহামদুলিল্লাহ।