জুতা হেফাজত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

জুতা হেফাজত ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

  • শাহ মুহাম্মাদ উয়াইমির

প্রথম যখন ঢাকা আসি তখন আমার পায়ের জুতা জোড়ার বেহাল দশা। যার কারণে বেশ সতর্কতার সঙ্গে চোখ কান খোলা রেখে পথ চলতে হতো৷ লোহার ছোট্ট জিনেরি লাগানো ছিলো দুই পাশের বল্টুর নীচে। মফস্বল-আগত হওয়ায় লাইফস্টাইল ছিলো ঐ জুতার মতো। ছেঁড়া মলিন, বেঢপ জীবন। ধীরেধীরে আশপাশের মানুষের লাইফস্টাইল দেখতে দেখতে একটা সময় নিজের বহিরঙ্গ পরিবর্তনের ইচ্ছা হলো৷ বাড়ি থেকে আসার সময় বিদায় মুহূর্তে মা খালারা চোখের জল ফেলে টুকটাক কিছু খাওয়ার জন্য পকেটে দশ- বিশ টাকা গুঁজে দিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে নতুন এক জোড়া জুতা কেনার মাধ্যমে আমার সেই আকাঙ্খার উদ্বোধন করলাম।

সংসারে অভাব থাকায় তখন বিলাসিতা করার সুযোগ ছিলো না যার কারণে গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে কমদামে এক জোড়া বেল্ট জুতা কিনলাম। কালো চকচকে, মসৃণ। সূর্যের আলো লাগলে জুতা চিকচিক করে। জুতার সোল তুলার মতো নরম। পায়ে দেয়ার সাথে সাথে সারা শরীরে পুলকসঞ্চার হলো। বেল্ট জুতা কেনার স্বপ্ন ছিলো অনেকদিনের৷ সেই স্বপ্ন পূর্ণতা পাওয়ায় এমন আনন্দ হওয়াটা ছিলো স্বাভাবিক। এতো সুন্দর জুতা জোড়া নিয়ে পাছে আবার কেউ চম্পট দেয় কি-না সেই আশংকায় পরম যত্নে জুতা জোড়া একদম শিয়রের কাছে রাখলাম।

আনন্দের চোটে পরদিন সাবধানতার সাথে নতুন জুতা পরে চিড়িয়াখানা থেকে বড়ভাইদের সাথে ঘুরেও আসলাম। অভাবের সংসারে নতুন জিনিসের গুরুত্ব যে কতটা অপরিসীম সেটা তখন অনুভব করেছিলাম। আমার অমন অভাবিত আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখে আমার আশৈশব উস্তাদ এমদাদ হুজুর বললেন, ব্যাপারটা কী, তোমাকে হঠাৎ এতো আনন্দিত লাগছে? আমার বলা লাগলো না । কিছুক্ষণ পর কিভাবে জানি হুজুর নিজেই আঁচ করতে পারলেন ঘটনা। জুতা জোড়া নিয়ে আসতে বললেন। ভালো করে পর্যবেক্ষণ করার পর আমার তাকিয়ে দুই তিনবার মাথা নাড়লেন। আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা জানতেন। ক্ষণকাল চিন্তা করে হুজুর গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বললেন। কথাটা আজীবন আমার জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। বললেন, মিয়া, সস্তা জিনিস কৌশল করে ব্যবহার করতে হয়, তাহলে অনেক দিন যায়৷ কৌশল না থাকলে দুইদিনেই ঠুশ। শুধুশুধু টাকাগুলো অপচয় হবে।

হুজুরের কথাটা আমার কিশোর মনে বেশ ধরেছিলো। সেদিনই মুচির কাছে যেয়ে ঢকমতো সেলাই করে নিয়ে আসলাম। ডাবল সেলাই সাথে কালো রঙের পালিশ। একদিনেই মলিন হয়ে যাওয়া ফুটপাতের সেই জুতা জোড়া অতঃপর দুই বছর ব্যবহার করেছিলাম। কৌশল কি জিনিস তখন বুঝেছিলাম। দুইটা বছরে আমার অনেকগুলো টাকা বেঁচে গিয়েছে। বুঝলাম, কৌশল করে চলা ছাড়া সফলতা অর্জন সম্ভব নয়।

শৈশবের সেই জুতা হেফাজতের কেচ্ছার পর অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। গত কয়েকদিন আগে শৈশবের মুহতারাম উস্তাদ এমদাদ হুজুরের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম দোয়া নেয়ার জন্য। এধার ওধার অনেক কথা বলার পরে হুজুর আমার শৈশবের জুতা হেফাজত এবং হুজুরের দেয়া কৌশলের কথা উল্লেখ করে কিছুক্ষণ হাসলেন। আচমকা এক ছাত্র অনুমতি ব্যতিত রুমে প্রবেশ করে ভূমিকা ছাড়াই রিসোর্ট কান্ডের উত্তাপ ছড়ানো দিনে গ্রেফতার হওয়া এক আলেমের জেল থেকে মুক্তির খবর শোনালো। হুজুরের মধ্যে কোন ভাবান্তর দেখা গেলো না। আগের মতো স্বাভাবিক। অথচ ছাত্রটা হুজুরের চোখেমুখে ফেটে পড়া উচ্ছ্বাস আশা করেছিলো। স্বাভাবিকভাবেই সে হতাশ। ছেলেটা মন খারাপ করে আমার পাশে বসে পড়লো। সে সম্ভবত ভদ্র, তা না হলে ঝড়ের বেগে যেভাবে এসেছিলো ঠিক সেভাবেই চলে যেতো।

মুহতারাম হুজুর বললেন, দেখো, একজন আলেমের মুক্তি সংবাদ অবশ্যই আনন্দের, কিন্তু যেসব আলেমদের জেলে যাওয়ার কথা আমরা শুনছি তাদের জেলের ভিতরে থাকা আর বাহিরে থাকা সমান। জাতি এদের দ্বারা কী উপকার পেয়েছে তা সবার সামনে স্পষ্ট। উস্কানিমূলক কথাবার্তা, সিন্ডিকেট করে ওয়াজে অংশগ্রহণ, বাস্তবতা বুঝে কথা না বলা ইত্যাদি সহ আরো অনেক কর্মকান্ড এদের দ্বারা প্রকাশ পেতে পেতে সাধারণ মানুষ হতাশ৷ যদি এসব আলেম সত্যিকার অর্থে জাতির জন্য উপকারী হতেন তাহলে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারতেন না, তার দলের লোকেরাই বিদ্রোহ করে বসতেন কারণ এ দেশের লোকেরা মারাত্মক ধর্মপ্রাণ।

আজকে আমাদের কোমলমতি মাদ্রাসা ছেলেরা পান থেকে চুন খসলেই চেতনাহীন, স্বাধীনতা বিরোধী একটা চক্র থেকে আমদানি করা শব্দ ‘দালাল’ বলে অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিজ উস্তাদকেও এক্ষেত্রে চুল পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ।

মুহতারাম হুজুর আফসোস করে বললেন, একটা সময় হাজার অনিয়ম, উল্টাপাল্টা করা সত্বেও হেফাজতের কিছু কিছু আলেমদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে আশংকা হতো। পাছে ছাত্ররা ক্ষেপে গেলে আমার চাকরি চলে যায় কি-না। তাছাড়া ‘ইসলামের দুশমন’ ট্যাগ লাগার আশংকা তো আছেই। ফেসবুকে আমার ছবি দিয়ে আমার ছাত্ররাই “আওয়ামী লীগের দালাল” লিখে স্ট্যাটাস দিতো। আজকে এই যে কওমি ছাত্রদের পদস্খলন এর দায় আসলে কাদের? নিশ্চয় আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় হেফাজত নেতাদের কারণ তারা নিজেদের রাস্তা ঝঞ্ঝাটমুক্ত রাখতে কওমি ছাত্রদেরকে সবসময় অন্ধকারে রেখেছেন এবং তাদের মস্তিষ্ক ধোলাই করে সেখানে ঘৃণার বীজ বপন করে রেখেছেন।

আজকে আমাদের কোমলমতি মাদ্রাসা ছেলেরা পান থেকে চুন খসলেই চেতনাহীন, স্বাধীনতা বিরোধী একটা চক্র থেকে আমদানি করা শব্দ ‘দালাল’ বলে অসভ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিজ উস্তাদকেও এক্ষেত্রে চুল পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ। এর দায় কি কোনভাবেই হেফাজত এড়াতে পারে? হেফাজত নেতা কর্মীদের এই আস্ফালন আমি চুপচাপ শুধু দেখে গেছি। বিশ্বাস ছিলো এই জোয়ার অচিরেই শেষ হয়ে যাবে। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। চোখের সামনে ছাত্রদের পদস্খলন দেখে দেখে সাত সাতটা বছর চোখের পানি ফেলেছি আর চোখবুজে সব সহ্য করে গেছি। ধৈর্যের ফল সুমিষ্ট হয়। আজকে দেখো তার প্রমাণ। নারী কেলেঙ্কারি, বিদেশ থেকে আসা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, নিজেদের মধ্যে কোন্দল সহ আরো হাজারো ঝামেলায় হেফাজতের মেরুদণ্ড ক্ষয় হয়ে গেছে। আজকে হেফাজতে ইসলামের নাম উচ্চারণ করার মতো কেউ নেই। হেফাজতের সিন্ডিকেট বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন কিছুদিন আগে ঘোষণা দিয়ে বিলুপ্ত করা হয়েছে। আরো কিছু শুনতে চাও?

মুহতারাম এমদাদ হুজুর আত্নকেন্দ্রীক মানুষ। মোল্লা মৌলভীদের অন্তঃসারশূন্যতায় ফাঁপা সমাবেশ মিটিং মিছিলে কোনোদিন অংশগ্রহণ করেননি। কোনো হেফাজত নেতার মাদ্রাসায় গিয়ে এক কাপ চা কিম্বা জর্দা সুপারি পান খাননি। তবুও কত কিছু জানেন। আমি হুজুরের প্রজ্ঞা ও পর্যবেক্ষণকে সবসময় শ্রদ্ধা করি। নিবিষ্ট মনে হুজুরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার পাশে থাকা হেফাজত আলেমের মুক্তির খবর নিয়ে আসা সেই ছাত্র মাথা হেঁট করে বসে ছিলো। হুজুরের কথা শুনে তার মাথা আরো নীচু হয়ে গেলো। প্রাণাধিক নেতাদের কর্মকান্ডে তাকেও অনুতপ্ত মনে হলো।

গোঁয়ার্তুমি, অহংকার, জায়গা বুঝে কথা না বলা, তৃতীয় পক্ষের কাজে ব্যবহার হওয়া এই চারটা ভুলের কথা উল্লেখ করে এমদাদ হুজুর বললেন, হেফাজতের ভরাডুবি এবং বদনামের কারণ এইগুলো। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তাদের পরিকল্পনা ছিলো শুধুমাত্র শাহবাগের নাস্তিক্য শক্তিকে দমন করে বাংলার জমিনে এক আল্লাহর নাম বুলন্দ করা। এ ছাড়া তাদের বৃহৎ কোন পরিকল্পনা ছিলো না। বলা যায়, হেফাজত সাময়িক একটা দল৷ তবে আল্লাহর নাম বুলন্দ করতে যেয়ে হেফাজত যে সকল কাজ করেছে সেটা এ দেশের শিক্ষিত সমাজ মেনে নেয়নি কারণ জন্মলগ্নেই ছিলো ত্রুটি। সুতরাং তাদের কর্মকান্ডে ইসলামের বিরাট বদনাম হয়েছে এবং কওমি মাদ্রাসার ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ে গেছে।

দ্বিতীয়ত, চোখে পড়ার মতো সমাজসেবামূলক কোন কার্যক্রমে হেফাজতের অংশগ্রহণ ছিলো না। বিদেশ থেকে আসা কোটি টাকার অনুদান দিয়ে একটা স্থায়ী না হোক অন্তত অস্থায়ী একটা হাসপাতাল করতে পারতো৷ কওমি ছাত্রদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অনেক মানুষ সেবা পেতো। অনুদিত টাকার সঠিক এবং সময়োপযোগী ব্যবহার দেখে অনুদানদাতারাও একটু স্বস্তি পেতেন। হেফাজতের ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের চিকিৎসা হতো। আফসোসের বিষয়, নাজুক এই পরিস্থিতিতে নিজেদের পকেট ভারি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ফলাফল, হেফাজত নেতাদের দুর্নীতির কথা জাতীয় সংবাদমাধ্যমে খবরের শিরোনাম হওয়া। সাবেক হেফাজত আমীরের এক খাদেম যিনি অর্থনৈতিক অবস্থানের দিক দিয়ে দুর্বল। চাকরি, ব্যবসা, পারিবারিক সম্পত্তি কিছুই অথচ তিনি দুই দুইটা হেলিকপ্টার ভাড়া করে মহা ধুমধামের সাথে বিয়ে করেছেন। আজিব ব্যাপার।

মুহতারাম এমদাদ হুজুর বলেন, ইখলাস যতদিন থাকবে ততদিন কোন ব্যক্তি বা সংগঠন নড়বড়ে হয় না। ইতিহাস ঘাটলে এর সত্যতা পাবে। শৈশবের সেই জুতা হেফাজতের কেচ্ছা উল্লেখ করে বললেন, আধুনিকতার এই যুগে কৌশল ছাড়া একমুহূর্ত টেকা মুশকিল। সফলতার সাথে দীর্ঘ দিন টিকে থাকার জন্য কৌশল থাকতে হয়। কৌশল এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া আল্লাহর নুসরতের আশায় বসে থাকলে কেউ সফল হতে পারেন না, এর সাথে সাথে আল্লাহর হুজুরে রোনাজারি তো লাগবেই। অথচ এই তিনটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ অধিকাংশ হেফাজত নেতার মধ্যে পাওয়া যায় না।

মুহতারাম এমদাদ হুজুর আফসোস করে বললেন, আলেম নেতাদের নামের সাথে যদি কোটি টাকা আত্মসাৎ আর নারী কেলেঙ্কারির বদনাম থাকে তাহলে কর্মীরা “নারায়ে তাকবির” শ্লোগান দেয়ার নৈতিক শক্তিটা কোথায় পাবে? প্রানপ্রিয় নেতাদের নামের সাথে লেপ্টে যাওয়া কেলেঙ্কারি থেকে তাদের বাঁচাতে অনলাইন, অফলাইনে প্রাণপণ গলাবাজি করবে কিন্তু ভেতরে কোন প্রাণ থাকবে না, ভালোবাসা থাকবে না।

আরও পড়ুন: হেফাজতে ইসলামকে বিলুপ্ত ঘোষণা করার সময় কি ঘনিয়ে এসেছে?

নবীজির জন্য সাহাবায়ে কেরাম আত্মোৎসর্গ ছিলেন কারণ নবীর নামে কোন বদনাম ছিলো না। সেই অন্ধকার সময়ে একটা মিথ্যা তোহমতও কাফেররা দিতে পারেনি। তাদেরকে সেই সুযোগটাও নবীজি দেননি। নবীজির প্রত্যেকটা কাজকর্ম ছিলো প্রকাশ্যে। আজকে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত এবং ওয়ারিশ হওয়ার কারণে হেফাজত আলেমদেরও সব কাজকর্ম প্রকাশ্যে হওয়ার কথা। কিন্তু হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রকাশ্য শব্দটা নিয়ে যতসব অনীহা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত সাতটা বছর সমর্থকদেরকে অন্ধকারে রেখেছেন তারা৷ ধরা খাওয়ার আশংকা থাকলে আল্লাহ রাসুলের ভয় দেখিয়ে দমন করে রাখার অব্যর্থ ওষুধ পুশ করে দেন মননে, মগজে। অথচ আল্লাহ রাসুলের ভয় কখন কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আর কোন ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় সেটা সমর্থকরা ভালো করেই জানে। কিন্তু মস্তিষ্ক বর্গা দেয়া থাকলে যা হয়।

সর্বশেষ মুহতারাম এমদাদ হুজুর বললেন, আল্লাহ পাকের দেয়া মহামূল্যবান মস্তিষ্কটাকে ব্যবহার করে আমাদের আকাবীররা বিরাট বিরাট কাজ করে গিয়েছেন উম্মতের জন্য। কারো হুজুগে কথায় কখনো কোন কান দেননি। ধৈর্য ধরে চিন্তা করেছেন। স্রোতের বিপরীতে চলেছেন। সবচেয়ে বড়কথা, তাঁরা সর্বদা উম্মতের জন্য চিন্তা ফিকির করেছেন। আল্লাহ পাকের কাছে দিনরাত কান্নাকাটি করেছেন৷ সুতরাং অন্যের হুজুগে কথা শুনে চিলের পিছনে ছোটাছুটি বন্ধ করতঃ নিজের মস্তিষ্কের পরিপূর্ণ ব্যবহার করে উম্মতকে গুজব, ফেতনা, সাম্প্রদায়িকতা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করা বর্তমান আলেমদের কাছে সময়ের দাবী।

লেখক: তরুণ আলেম

মতামত বিভাগে প্রকাশিত লেখার দায় লেখকের

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *