টাঙ্গাইলে বন্যার উন্নতি হলেও প্রধান ৩ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

টাঙ্গাইলে বন্যার উন্নতি হলেও প্রধান ৩ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : টাঙ্গাইলে নদ-নদীর পানি কমলেও যমুনা, ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে ৬ উপজেলার ১২৩ গ্রামের ৫২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শুকনা খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার অন্তত ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ছয় হাজার হেক্টর ফসলি জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়াও পানিতে দেড় হাজার পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে। বন্যার্তরা সহযোগিতা কামনা করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝিনাই নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে ও ধলেশ্বরী নদীর পানি ১ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে টাঙ্গাইল সদর, গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, নাগরপুর ও বাসাইল উপজেলার ১২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে বানভাসিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিন টাঙ্গাইল সদরের বাঘিল ইউনিয়নের ফৈলারঘোনা, গালা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। নৌকা ও কলা গাছের ভেলা ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। কাজ না থাকায় অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অনেকের ধান, পাট, তিল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। আবার অনেকের পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে। এছাড়াও অনেকেই গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

ফৈলারঘোনা গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, বাড়ির চারদিকে পানি। নিজের মোটরসাইকেল অন্যজনের বাড়িতে রেখে যাতায়াত করতে হয়। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা কোনো সহযোগিতা পাইনি। নিম্ন আয়ের মানুষ যারা রয়েছেন, তারা অনাহারে-অর্ধহারে দিন পার করছেন।

লোকমান হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, কেউ নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। অনেকের ধান, পাট, তিল, বীজতলা তলিয়ে ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণ সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

গালা গ্রামের কৃষক ফজলুল হক বলেন, চলতি মৌসুমে আমি দুই বিঘা জমিতে ধুন্দল করেছিলাম। ফলন ভালো হওয়ায় এক দিন পরপর চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে বিক্রি করতে পারতাম। এ বছর বন্যায় সব নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়াও সোয়া এক বিঘা জমির পুই শাক নষ্ট হয়েছে।

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি উপজেলায় জিআরের ২০ মেট্রিক টন করে চাল দেওয়া হয়েছে। দুই হাজার করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ অর্থ ও নৌকা দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ আছে, প্রয়োজন হলেই দেওয়া হবে।

Related Articles