পাথেয় রিপোর্ট : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার কাছে ওয়াদা করছি, বাংলাদেশকে তার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্ব দরবারে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেই দেশ গড়ে তুলবো, জাতির পিতার কাছে এই কথাই দিলাম।’
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এদিন আলোচনা সভা ছাড়াও জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করেছে আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বাংলার মানুষকে তিনি গভীরভাবে ভালোবাসতেন। তিনি বলেন, জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হত। আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন একটি সদ্য স্বাধীন দেশ কীভাবে চলবে। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি প্রশাসনিক অবকাঠামো দাঁড় করিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মহৎ কিছু অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগের প্রয়োজন হয়। দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য বঙ্গবন্ধুর মহৎ আত্মত্যাগ আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। বাংলাদেশ জুড়ে বঙ্গবন্ধু আছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই। কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের গত নয় বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, তা আর কেউ করতে পারেনি। পঁচাত্তরের পর ২১ বছর এবং ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এই ২৮ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কেন এই উন্নয়ন করতে পারেনি? দেশেকে এগিয়ে নিতে পারেনি? তারা কেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে পারেনি? কারণ তারা করতে চায়নি। তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তাদের হৃদয়ে ‘পেয়ারে পাকিস্তান’। তারা কেবল পাকিস্তানের গোলামি করতে পারে। দেশের উন্নয়ন করতে পারে না। জনগণের কল্যাণ ও মঙ্গল করতে পারে না।’
টানা দুই মেয়াদে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়নসহ দেশ ও জাতির কল্যাণে নেওয়া পদক্ষেপ প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, যে ভাষণ এক সময় নিষিদ্ধ ছিল, সেই ভাষণই আজ বিশ্বের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাঙালি জাতিকে মর্যাদা এনে দিয়েছে। এদেশের মানুষের কল্যাণ ও মঙ্গল করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। এদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নমিনেশন অকশনে করেছে, তারা জয়ী হবে কিভাবে? জনগণ তাদের ভোট দেয়নি।
আজ ১০ জানুয়ারি। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন দেশে ফিরেছিলেন। একাত্তরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর শহীদের রক্তস্নাত বাংলার মাটি ও মানুষ এই দিন ফিরে পেয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।