বরিশালসহ চার জেলায় পরিবহন বন্ধ, ভোগান্তি

বরিশালসহ চার জেলায় পরিবহন বন্ধ, ভোগান্তি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : চাকরির পরীক্ষা দিতে বরিশাল সদর উপজেলার কর্ণকাঠি ইউনিয়নের তালুকদারহাট থেকে গতকাল শুক্রবার ভোরে মাছ ধরার নৌকায় করে বরিশাল শহরে আসেন লিমা আক্তার। এসে শোনেন পরীক্ষা হবে না। পরে তিনি বাড়ি ফিরতে শহরের কীর্তনখোলা নদীর চাঁদমারী ঘাটে খেয়া পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সকাল ১০টায়ও তিনি কোনো খেয়া বা নৌকা পাননি।

বরিশাল শহরের সব ঘাট থেকে গতকাল খেয়া পারাপার বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল বাস, থ্রি-হুইলারসহ (তিন চাকার যান) সব ধরনের ইঞ্জিনচালিত পরিবহন। ফলে লিমার মতো কাজের জন্য বাইরে আসা হাজারো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশের আগের দিন শহর ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা-বরিশাল নৌপথের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ভোলায় নৌযান ও বাস, ঝালকাঠিতে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। বরগুনায় ছিল বাস ধর্মঘট। এতে এসব জেলার মানুষকেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

বরিশালে এমভি কীর্তনখোলা লঞ্চের মালিক মঞ্জুরুল আহসান ফেরদৌস বলেন, গণসমাবেশ ও শুক্রবার হওয়ায় যাত্রী নেই। তাই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যে যাত্রী পাওয়া যাবে তাতে লঞ্চের ব্যয় উঠবে না। আর্থিক ক্ষতি করে তো চালাব না। একইভাবে ঢাকা থেকেও কোনো লঞ্চ ছেড়ে আসবে না।

বরিশাল নগরের ব্যস্ততম এলাকা নথুল্লাবাদে সকাল ৯টায় গিয়ে দেখা যায়, কোনো বাস ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায়নি, শহরেও আসেনি। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে চলেছে শুধু রিকশা। ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিবুর রহমান সকালে এসেছিলেন নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড। তিনি বলেন, ‘বাস বন্ধের বিষয়টি আগেই জেনেছি। তার পরও দুই দিন আগে জরুরি কাজে এসেছি। ৬টার আগে টার্মিনালে এসেছি বাস পাব ভেবে। কিন্তু এসে দেখি কোনো বাসই ছাড়ছে না। এখন বিকল্প উপায়ে হলেও যেতে হবে।’

  • যাত্রী সংকটের অজুহাতে

দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দ্বীপ জেলা ভোলার একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হলো নৌপথ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে ভোলা-বরিশাল নৌপথে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ভোলার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে মালিক সমিতি।

মালিক সমিতি জানায়, সহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের দাবিতে তাঁরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। এতে অন্য যানে কয়েক গুণ ভাড়া দিয়েও গন্তব্যে যেতে পারছিলেন না যাত্রীরা। গতকাল সকালে ভোলার ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, ইলিশা ফেরিঘাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

ভোলা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম জানান, উচ্চ আদলতের রায়ে মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সেটি বাস্তবায়ন করছে না। তাই সমন্বয় পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাঁরা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *