বস্তিতে পুড়েছে স্বপ্ন, ক্ষতিপূরণ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের

বস্তিতে পুড়েছে স্বপ্ন, ক্ষতিপূরণ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের

বস্তিতে পুড়েছে স্বপ্ন, ক্ষতিপূরণ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : বস্তি রাজনীতি নতুন নয়। ভোটের রাজনীতিতে বস্তি নির্মাণ, উচ্ছেদ ও চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল একাত্তরের আগে থেকেই। রাজধানীর আগারগাঁও, তেজগাঁও, নাখালপাড়াসহ অসংখ্য জায়গায় স্বাধীনতার আগেও বস্তিতে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। এটা নতুন নয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, রাজধানীর মিরপুর-৬ নম্বরে মিল্কভিটা মোড় সংলগ্ন বস্তিতে আগুন লেগে পুড়ে গেছে সেখানকার সব ঘরবাড়ি। শুক্রবার রাতে ভয়াবহ আগুনে যখন বস্তি পুড়ছিল, তখন রাস্তায় বসে অনেকেই আহাজারি করছিলেন। সেই আহাজারি থামেনি শনিবার দুপুর পর্যন্ত। টেলিভিশন, মোবাইল, টাকা-পয়সা, আসবাবপত্রসহ অনেকের শেষ স্মৃতিটুকুও কেড়ে নিয়েছে এই আগুনের লেলিহান শিখা। সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে অনেকেই রাত থেকে এখনও কাঁদছেন। অনেকে আবার আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের ধ্বংসাবশেষ হাতড়ে পুরনো স্মৃতি খোঁজার চেষ্টা করছেন।

রাজধানীর মিরপুর-৭-এর চলন্তিকা মোড়ের তিন হাজার বসতঘরের ঝিলপাড় বস্তি এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বস্তির চারদিকে এখন শুধুই পোড়া গন্ধ। প্রায় তিন ঘণ্টার আগ্নিকা-ে সর্বস্ব হারিয়েছে বস্তিবাসী।

এই বস্তিতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করত বলে এলাকাবাসীর ধারণা; যদিও বাসিন্দার সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক কোনো ধারণা দিতে পারেননি কর্মকর্তারা। দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আশ্বাস দেন। আগুনে গৃহহীনদের আপাতত স্থানীয় পাঁচটি স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চলন্তিকা বস্তির আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়ার কথাও জানা যায়।

সাবধানতা জরুরি। প্রয়োজন সচেতনতা। প্রয়োজনীয় উচ্ছেদও এমন ভয়াবহভাবে হওয়া নিশ্চিত ঘৃণ্য কাজ। অতীতে এমন সন্দেহে তীর উঠেছে অনেকের উপর। কিন্তু বস্তিতে আগুন লাগার বিষয়ে সঠিক তদন্ত হয় না বললেই চলে। এত এত মানুষ এ বস্তিতে বসবাস কতো। অথচ তারা অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে। এটা তো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অজ্ঞাত থাকার কথা নয়।

অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া হয়ে থাকলে এর নেপথ্যের হোতাদেরও চিহ্নিত করতে হবে। ভবিষ্যতের যেকোনো অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে চলন্তিকা বস্তির অগ্নিকা-ের কারণ জানা জরুরি।

একটা কথা স্পষ্ট হওয়া উচিত যে, সময়টা শরৎ। আবহাওয়া ঠাণ্ডা শরৎকাল। এই শীতল চমৎকার সময়ে মিরপুরের চলন্তিকা বস্তিতে আগুন লাগল কেন? আগুনের উৎস কী? আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য দিতে পারেননি। কিন্তু তথ্য জানা জরুরি এ কারণে যে সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, রাজধানীকে আগুন থেকে নিরাপদ রাখতে সবার আগে সচেতনতা বৃদ্ধি তো করতেই হবে।

তবে অবৈধ সবধরনের লাইন দেয়ার ক্ষেত্রেও যারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এই আগুন ঠেকানো যাবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *