মুন্সীগঞ্জ ও খুলনায় ২ ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা

মুন্সীগঞ্জ ও খুলনায় ২ ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী ও খুলনার ডুমুরিয়ায় ২ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আলহাজ ওয়াহেদ আলি দেওয়ান উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদার টঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান। রোববার (৭ জুন) বেলা ১টা ৩০ মিেিনরে দিকে পাঁচগাঁও আলহাজ ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, রোববার সকাল হতে উপজেলার পাঁচগাঁও আলহাজ ওয়াহেদ আলী দেওয়ান উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন চলছিল। বেলা ১টার দিকে ওই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে আমির হোসেন দেওয়ান ৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। পরাজিত প্রার্থী মিলনুর রহমান হালদার পান মাত্র দুই ভোট।

পরাজিত প্রার্থী মিলন হালদারের সমর্থক নুর মোহাম্মদ হালদার নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে দায়ী করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। এ সময় সুমন হালদার গালি গালাজ করতে নিষেধ করায় নূর মোহাম্মদ হালদার তাকে প্রত্যক্ষ দিবালোকে বুকের মধ্যে গুলি করলে গুরুতর আহত হয় সুমন হালদার। পরে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গিবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ সময় নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই ভোলা হালদার দৌড়ে পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল হতে তার সহযোগী ম্যানেজিং কমিটির পরাজিত সভাপতি প্রার্থী মিজানুর রহমান হালদার, সওদাগর হালদার, কাউসার হালদার, নূর হোসেন হালদারসহ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মিজানুর রহমান মোল্লা বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে ফলাফল ঘোষণার পর ওই ফলাফলে আমির হোসেন দেওয়ান জয়লাভ করেন। এতে পরাজিত প্রার্থী মিলন চেয়ারম্যানের সমর্থক নূর মোহাম্মদ হালদার এই পরাজয়ের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে দায়ী করেন এবং তাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে সে গুরুতর আহত হয়। এ সময় স্থানীয় মিলন হালদার, তার ভাই সওদাগর হালদার, নূর হোসেন হালদারসহ আরো কয়েকজন নূর মোহাম্মদকে সহায়তা করেন। গুলি করে নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই ভোলা হালদার পালিয়ে যান।

এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী থানার ওসি মোল্লা সোয়েব আলী বলেন, একটি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরাজিত প্রার্থীর লোকজন নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পরপরই ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে। পরে তাকে উদ্ধার করে টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। মূল অপরাধীদের গ্রেফতারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।

খুলনায় ইউপি চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা
খুলনা ব্যুরো ও ডুমুরিয়া সংবাদদাতা জানান, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি গত শনিবার রাতে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি (৪২) শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মিসভায় অংশ নিতে খুলনা মহানগরীর বাসা থেকে ডুমুরিয়া যান। সভা শেষে রাত ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা সদর থেকে একা মোটরসাইকেল চালিয়ে খুলনার বাসায় ফিরছিলেন। পথে গুটুদিয়া স্কুলের কাছাকাছি পৌঁছালে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। তিনটি গুলি তার পিঠে লাগে এবং তিনি ঘটনাস্থলেই পড়ে যান। গুলির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। রাত ১২টার দিকে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শরাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ রবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০২১ এবং ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন। ২০১৫ সালে একবার তিনি আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন।

ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকান্ত সাহা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত থাকতে পারে তা নিয়ে পুলিশের একটি টিম কাজ শুরু করেছে। তবে বিকেল পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মামলা হয়নি এবং কাউকে আটক করাও হয়নি।

Related Articles