মেয়েরাই আমার জান্নাত
সারোয়ার আলম ভুইয়া : মা বাবা র স্মৃতি বিজড়িত ফ্ল্যাট ছেড়ে নিজের পুরোনো ফ্ল্যাটে ফিরে আসি।এ ফ্ল্যাটে আসার পর থেকে আমার মেয়েরা ঘর গোছানোয় বেশ মনোযোগী হয়।ছাদের ও ঘরের টবে গাছ লাগানো, টবে গাছ ঝুলানো ঘর দোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখায় দায়ীত্বশীল হয়।
বড় মেয়ে ‘মিফতাহুল জান্নাত মীম’এর শখ হলো, কবিতা লিখা, লেখালেখি করা, ছাত্রী পড়ানোর পাশাপাশি বাজারের মুখরোচক খাবার নিজের চেষ্টায় ঘরে তৈরী করে পরিবারের সবাইকে খাওয়ানো। মুরগির চাপ-লুচি, পানি পুড়ি, চটপটি-ফুচকা, কেক-পেষ্ট্রিকেক, জন্ম দিনের কেক, ভুট্টার খই ইত্যাদী বানিয়ে খাওয়ানোর পর বলবে, হোটেল রেস্তুরা থেকে বেশী মজা হয়েছে না আব্বু?
দ্বিতীয় মেয়ে ‘জারীন তাসনীম’ নামাজ-কালাম-তসবিহ তাহলিলের পর যে টুকু সময় থাকে তা দিয়েও আঁকাআঁকি করবে। দৃশ্য আঁকবে, টব ঝুলানোর ছিক্কা বানাবে, দরোজার পর্দায় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এটা বানাবে ওটা বানাবে। বারান্দায় বসে খবরের কাগজ, চা পানের সুবিধার জন্য রাখা টি টেবিলটির নিচে ও বোটানিক্যাল গার্ডেন বানিয়ে ফেলেছে।আমার বেশ ভাল লাগে।আমি জান্নাতি সুখ অনুভব করি।ডাক দেয়ার সাথে সাথে বাবার খিদমতে হাজির হচ্ছে। ছোট বোনদের পড়াচ্ছে।ওদের সুখ সাচ্ছন্দে কেটে যাচ্ছে দিন। এ ভাবে সময় কাটার বছর পূর্তি হলো ১৯ সেপ্টেম্বর।
বিষয়টি আমার জানা ছিল না।বছর পুর্তি কোন আনন্দ আমার দিল ও দেমাগে নেই।এ ভাবে চিন্তাও আমি করি না।১৯ সোপ্টেম্বর আমার জীবনের একটি ভয়াবহ দিন। এ ভাবেই মূল্যায়ন করি আমি।
সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি জীবনে আমাদের বছর পেরুনো উপলক্ষে আমার মেয়েরা নিজ হাতে একটি কেক বানিয়ে কেটে আমাকে পরিবেশন করে।আমি অনেক দুঃখের মাঝেও জান্নাতি সুখ অনুভব কর ঘরে।
লেখক : সমাজ বিশ্লেষক