শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই : ওবায়দুল কাদের

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই : ওবায়দুল কাদের

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের স্থিতিবস্থা জারির আদেশের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এ আদেশের পরে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের কোনো কার্যকারিতা বর্তমানে নেই। এর পরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই। এই আন্দোলনের ওপর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভর করেছে। শিক্ষার্থীরা কার বিপক্ষে আন্দোলন করবে? সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ তো তাদের পক্ষেই আছে। এরপরে আন্দোলন চলমান থাকা প্রমাণ করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোনো গোষ্ঠী বা মহল এই আন্দোলনকে উসকানি দিচ্ছে।

‘তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির অপরাজনীতি ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন চলমান রাখলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণ এই আন্দোলনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়লে তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর তারা আস্থাহীন হয়ে পড়বে। তিনি আরো বলেন, একটি চিহ্নিত রাজনৈতিক মহল শিক্ষার্থী ও জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে। আমরা বিশ^াস করি না, কোমলমতি সব শিক্ষার্থী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করতে চায়। শুধু যারা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তারাই আদালতের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেকোনো আন্দোলন হলেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সেটাকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে। এখন তারা কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ তাদের ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের অপরাজনীতির কারণেই বারবার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বিএনপি। সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলনেই তারা সফল হতে পারেনি। তাই যখনই অরাজনৈতিক আন্দোলন সংগঠিত হয় সেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করে বিএনপি।

বিবৃতিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের যৌক্তিক দাবির প্রতি আওয়ামী লীগ সর্বদা আন্তরিক। কোনো যৌক্তিক দাবিই কখনোই আওয়ামী লীগের কাছে উপেক্ষিত হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে একটি জনকল্যাণকর উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাবো, আপনারা কারো রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহারের শিকার হবেন না। তিনি বলেন, চূড়ান্ত শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীর আরও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে এ বিষয়ে নিষ্পত্তি করবে। আদালত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয়সমূহ চূড়ান্ত শুনানিকালে আমলে নিয়ে বাস্তবসম্মত চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন এবং বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে। আমরা আন্দোলনকারীদেরকে ধৈর্যধারণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এ ধরনের সব কর্মসূচি পরিহার করে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যার যার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার পুনরায় অনুরোধ জানাচ্ছি।

Related Articles