শীতকালীন সবজির দামে মিলল স্বস্তি

শীতকালীন সবজির দামে মিলল স্বস্তি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : কুমিল্লার বাজারে শীতকালীন সবজির দামে স্বস্তি মিললেও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের বাজার দরে অস্বস্তিতে রয়েছে ক্রেতারা। মুদিমালের কিছু কিছু পণ্যের দাম কমলেও সিংহভাগ পণ্যেরই দাম বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের পরিবার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) নগরীর রাজগঞ্জ বাজারে গিয়ে একাধিক ক্রেতার ও বিক্রেতার সাঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকা। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে। ভোজ্যতেলের দাম লিটার প্রতি বেড়েছে ১২ টাকা। যা গত সপ্তাহে ১৭৮ টাকা দরে লিটার বিক্রি করা হয়। বর্তমানে তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার। চালও কেজি প্রতি বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা।

তবে দাম কমেছে ডিম, মাছের ও সবজির। হালিপ্রতি লাল ডিমে কমেছে পাঁচ টাকা। যা গত বাজারে বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকা আর হাঁসের ডিমও পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা হালি দরে। সিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, যা গত সাপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০ টাকা, লাউ আকার ভেদে ৪০-৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০-৮০টাকা।

করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৯০টাকা। নতুন আলু কেজি প্রতি কমেছে ২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০টাকা কেজি, পুরাতন আলুতেও কমেছে পাঁচ টাকা। বর্তমানে ২৫-৩০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে, ফুলকপি আকার গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬৫ টাকা পিস, এখন পিস প্রতি ১০-২৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০-৫০ টাকা, শসা ১০০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৬০ টাকায়। পেঁপে ৩০-৩৫ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া পটল ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, মানভেদে কাঁচা মরিচ ৪০-৬০ টাকা কেজি, মুলা ৪০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার মুরগি ও সোনালী মুরগির দাম। ব্রয়লার ১৫০ টাকা কেজি দরে, সোনালী ও লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়েছিল। তবে খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা কেজি দরে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮৫০ টাকা ধরে। অপরিবর্তির রয়েছে গরুর মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে।

বাজার করতে আসা ফজলুল হক নামের এক কলেজ শিক্ষক বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম অনেক বেশি। বিষয়টি সরকারের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। সব পণ্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মানুষ কষ্টে আছে। গুরুত্ব সহকারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ না করলে দরিদ্র্য সীমার নীচে বাস করা মানুষের দুর্গতি আরও বাড়বে। প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এত বৃদ্ধির ফলে দরিদ্র্যর হার আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই এখনই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

সাইফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম কিছুটা সহনীয়, কিন্তু অন্যান্য পণ্যের দাম ক্রয় সীমার বাইরে। কসমেটিক থেকে শুরু করে তেল, পেঁয়াজ, লবন, মরিচ, হলুদ, রসুন আদা ইত্যাদি পণ্যের দাম নাগালের বাইরে। সরকারের উচিত এটি নিয়ন্ত্রণ করা।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আমরা নিয়মিত তদারকি করছি। অসামঞ্জস্য কিছু পেলে জরিমানাসহ বিভিন্ন সাজা দেওয়া হচ্ছে। অসাধু পন্থায় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *