রঙ রিপোর্ট ● এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। সম্প্রতি এক ভিডিও বার্তায় এমনটাই দাবি করেছেন আমেরিকা প্রবাসী এক নারী। এ হত্যাকাণ্ডে ওই নারীর ভাই ও তার চীনা স্বামী এবং সালমানের স্ত্রী সামিরা ও তার পরিবার জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। তখন ধারণা করা হয়, সালমান আত্মহত্যা করেছেন। তবে এ দাবি নাকচ করে ছেলের মৃত্যুতে হত্যা মামলা করেন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়। এতে সামিরা ছাড়াও আসামি ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই। মামলার একজন আসামি ছিলেন ভিডিও বার্তা প্রচারকারী রাবেয়া সুলতানা রুবি।
অনলাইনে ভাইরাল হয়ে ওঠা ওই ভিডিও বার্তায় রাবেয়া সুলতানা রুবি দাবি করেছেন, সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে। সেই খুনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তার চীনা স্বামী। চীনাদেরকে দিয়ে এই খুন করানো হয়। এতে জড়িত ছিলেন সালমান শাহের স্ত্রী সামিরার পরিবারও। ভিডিওতে রাবেয়া সুলতানা রুবি সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীকে উদ্দেশ করে কাতর কণ্ঠে বলেন, এই খুনের বিষয়ে আমি সব জানি। যেভাবেই হোক, আবার যেন মামলা তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়। আমি যেমন করেই হোক আদালতে সাক্ষী দেবো।
রুবি বলেন, সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে। আমার হাসব্যান্ড এইটা করাইছে আমার ভাইরে দিয়ে। আমার হাসব্যান্ড করাইছে, এইটা সামিরার ফ্যামিলি করাইছে আমার হাসব্যান্ডরে দিয়ে, সবাইরে দিয়ে, সব চাইনিজ মানুষ ছিলো। সালমান শাহ আত্মহত্যা করে নাই, সালমান শাহ খুন হইছে।
এদিকে ভিডিও বার্তায় রুবি দাবি করেন, তার চীনা স্বামী তাকেও খুন করার চেষ্টা করছেন। এর জন্য তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, সালমান হত্যাকাণ্ডে জড়িত আমার ছোট ভাই রুমিকেও খুন করা হয়েছে। আমি জানি না রুমির কবর কোথায় আছে। রুমির লাশ যদি কবর থেকে তুলে ঠিকমতো আবার পোস্টমর্টেম করে, তাহলে দেখা যাবে যে, ওরা গলা টিপে মাইরা ফেলছে। রুবি বলেন, আমার হাজব্যান্ড চ্যাং লিং চ্যাং, জন চ্যাং নামে বাংলাদেশে পরিচিত ছিল। ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডের সাংহাই চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক ছিলেন তিনি।
১৯৯২ সালে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবি দিয়ে সালমান শাহ’র রূপালী মর্দায় যাত্রা শুরু। চার বছরের ক্যারিয়ারে তিনি মোট ২৭টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এর প্রতিটিই দর্শকপ্রিয়তা পায়। বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বকালের ব্যবসা সফল সেরা ১০ চলচ্চিত্রের দুই, তিন ও চার নম্বরে আছে সালমান শাহ অভিনীত সিনেমা।
গত দুই দশকেও জনপ্রিয় এই নায়কের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন হয়নি। ঘটনাটি আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে পুলিশ অপমৃত্যুর মামলা করলে তাতে আপত্তি জানায় পরিবার। এরপর সালমানের স্ত্রী সামিরা হক, চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যরবসায়ী আজিজ মোহাম্মাদ ভাইসহ ১১ জনকে সালমান শাহের মৃত্যুর জন্য দায়ী করে হত্যা মামলা দায়ের করে সালমানের পরিবার। অন্য অভিযুক্তরা হলেন সামিরার মা লতিফা হক লুসি, রিজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, সহকারী নৃত্যপরিচালক নজরুল শেখ, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও গৃহকর্মী মনোয়ারা বেগম। মামলাটির বিচারবিভাগীয় তদন্তও হয়েছিল। এখন মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইয়ে রয়েছে।