ওয়ার্ল্ড ডেস্ক : সৌদি আরবের এক সামরিক কর্মকর্তাকে কারাগারে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া দেশটির বেশ কয়েক ধনাঢ্য ব্যবসায়ীকে বিলাসবহুল রিটজ-কার্লটন হোটেলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।
নিহত মেজর জেনারেল আলী আল-কাহতানির মরদেহ দেখেছেন এমন এক ব্যক্তি বলেন, তার ঘাড় অস্বাভাবিকভাবে বাঁকানো ছিল। মনে হয়েছে, তার ঘাড় মটকে ফেলা হয়েছে। তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এতে তার শরীর ফুলে গিয়েছিল। এ ছাড়া তার শরীরে বিভিন্ন রকম নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।
একজন চিকিৎসক ও আরও দুই ব্যক্তি বলেন, তার শরীরে পোড়া দাগ ছিল। যেটি ইলেকট্রিক শক থেকে হয়েছে।
জেনারেল কাহতানি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাসের কর্মকর্তারা বলেন, দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলাকালে নির্যাতনের যে খবর বেরিয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য। আটককৃতদের পূর্ণ আইনি সহায়তা ও চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।
৬০ বছর বয়সী জেনারেল কাহতানি সৌদি ন্যাশনাল গার্ডের কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি খুব সম্পদশালী ছিলেন না। কাজেই দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার কোনো মূল্য থাকার কথা নয়। তাকে আটকের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তিনি ছিলেন প্রয়াত বাদশাহ আব্দুল্লাহ ও রিয়াদের সাবেক গভর্নর প্রিন্স তুর্কি বিন আব্দুল্লাহর শীর্ষ সহকারী। প্রিন্স তুর্কি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
প্রয়াত বাদশাহ আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের সিংহাসনের উত্তরসূরি প্রিন্স মুহম্মদ ও তার বাবা সালমানের প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচনা করা হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে জেনারেল কাহতানিকে একটি অভিজাত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তিনি তার শরীরে নির্যাতনের দাগ দেখিয়েছেন।
এর পর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিটজ-কার্লটন হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরে সামরিক হাসপাতালে তার মৃত্যুর খবর ঘোষণা করা হয়েছে।
জেনারেল কাহতানির মৃত্যু নিয়ে সৌদি রাজ্য এখন পর্যন্ত কোনো প্রকাশ্য ব্যাখ্যা দেয়নি।
কাহতানি ও আব্দুল্লাহর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা প্রতিশোধের ভয়ে এ মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন।
আব্দুল্লাহর ছেলে প্রিন্স মিশাল বিন আব্দুল্লাহ নিজের বন্ধুদের মধ্যে জেনারেল কাহতানির চিকিৎসা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। এর পরই তাকে রিটজ-কার্লটন হোটেলে নিয়ে আটকে রাখা হয়।