স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হোক

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হোক

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হোক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আর কোনো কিছুই বাদ থাকছে না। কচিকাঁচা সোনামণিরা কেন থাকবে পিছিয়ে। তাদের পড়ালেখার ব্যবস্থাও করে দেয়া উচিত। করোনাকালীন স্কুল-কলেজ-বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা বলাবাহুল্য।

প্রথম পর্যায়ের করোনা সংক্রমণে বিশ্বে এক দিনে আক্রান্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা তিন লাখের নিচে ছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণে সেই সংখ্যা ছয় লাখ ছুঁই ছুঁই করছে। আগের তুলনায় দৈনিক মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে। বাংলাদেশেও ঢাকাসহ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক মাসে ঢাকায় নতুন রোগী বেড়েছে ২০ শতাংশের মতো। তা সত্ত্বেও সরকার ১৪ নভেম্বরের পর সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। পহেলা নভেম্বর থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু বিনোদনের স্থান। এগুলোর মধ্যে আছে জাতীয় চিড়িয়াখানা, জাতীয় জাদুঘর, গাজীপুর ও কক্সবাজারে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, সুন্দরবন ও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। পর্যায়ক্রমে হয়তো অবশিষ্ট বিনোদনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেওয়া হতে পারে।

দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর দ্রুতই তা ছড়াতে থাকে। সংক্রমণ ছড়ানোর গতি কমাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। কিছু এলাকায় লকডাউন করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিনোদনকেন্দ্রগুলো। মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়ে। মে মাস থেকে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। করোনার মধ্যেই জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে মানুষকে ঘরের বাইরে আসতে হয়। অর্থনৈতিক কর্মকা- ক্রমেই স্বাভাবিকতা ফিরে পেতে থাকে। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় শিশু-কিশোরদের জীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি। তারা এখনো একরকম গৃহবন্দি। মনোবিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, এই অবস্থা শিশু-কিশোরদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। এসব কারণেই হয়তো সরকার এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো খুলে দিচ্ছে। তবে করোনা মহামারির ঝুঁকিও আমাদের বিবেচনা করতে হবে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, শীতের শুরুতেই দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ শুরু হতে পারে। অন্যান্য দেশের মতো সংক্রমণের হার যদি অনেক বেশি হয়, তাহলে আমাদেরও ভিন্নভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নিজেও সে কথাই বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা নানা বিষয় চিন্তা-ভাবনা করছি, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্যই নেওয়া হবে স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে। একইভাবে বিনোদনকেন্দ্রগুলো খোলার ক্ষেত্রে অনেক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তাদের জীবাণুনাশক টানেল দিয়ে ঢুকতে হবে। থাকবে থার্মাল স্ক্যানার, হাত ধোয়ার বেসিন, সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। প্রবেশপথ হবে একমুখী এবং মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। তার পরও নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কি না তা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখতে হবে।

জীবন থেমে থাকে না, থামিয়ে রাখাও যায় না। তার পরও করোনা মহামারির বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনেরই প্রয়োজনে কিছু নিয়ম-কানুন ও সংযম আমাদের মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। ইউরোপের অনেক দেশ সব কিছু খুলে দিয়েছিল। এখন লকডাউন করেও তারা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। সেসব অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়েই আমাদের এগোতে হবে বলে আমরা মনে করি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *