সড়ক ও রেলপথে প্রত্যাশিত উন্নয়ন জরুরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : এক যুগ আগেও দেশের সড়ক কী পর্যায়ে ছিল তা আমাদের জানা। দেশের উন্নয়নের চিত্র পাল্টে গেছে। ঢাকা চট্টগ্রাম আর ঢাকা ময়মনসিংহ কত্ত চৌড়া রাস্তা। কিন্তু সে অনুপাতে রেলপথের উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা নিয়ে ডাউট আছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ চালুর উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। কবে চালু হবে তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।
আমরা জানি, সড়ক ও রেলপথ উন্নয়নে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয় হলেও রেলের উন্নয়নই বেশি দৃশ্যমান হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের র্যাংকিংয়ে দেশের সড়ক অবকাঠামোর অবস্থান ১১১, যা ২০১১-১২ সালেও একই ছিল। অন্যদিকে ২০১১-১২ সালে র্যাংকিংয়ে দেশের রেল অবকাঠামোর অবস্থান ছিল ৭৩, ২০১৭-১৮ সালে এসে ৬০ হয়েছে। সন্দেহ নেই, সরকারের বাড়তি মনোযোগে এক্ষেত্রে সুফল মিলেছে। ২০০৯ সাল থেকে রেলকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে গঠন করা হয় আলাদা মন্ত্রণালয়। এর আগে অবহেলিত থাকায় বিনিয়োগের সুফল দ্রুত দৃশ্যমান হয়েছে বলে অনেকের অভিমত।
প্রকৃত অর্থে প্রকল্পসর্বস্ব উন্নয়ন কখনই টেকসই হতে পারে না। সড়ক ও রেলে বড় বিনিয়োগ হলেও তা সমন্বিত, পরিকল্পিত ও দ্রুতগতির অবকাঠামো অনুযায়ী হয়নি। এ কারণে টেকসই অবকাঠামো গড়ে উঠছে না। সার্বিকভাবে আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ যোগাযোগের জন্য পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত উন্নয়ন দরকার। এক্ষেত্রে ঘাটতি লক্ষণীয়। অ্যাডহক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্প গ্রহণ করায় কাক্সিক্ষত সুফল আসছে না। এর প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদনের।
শিল্প ও অর্থনীতির অন্যতম জিয়নকাঠি হিসেবে পরিচিত যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত এবং ঘটা করে তা উদ্বোধন করা হলো। দুঃখজনক হলেও সত্য, বছর না ঘুরতেই তার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত দেখা দিয়েছে। দেশের প্রধান প্রধান মহাসড়কও একই দুরবস্থার মধ্যে নিপতিত। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ রয়েছে, সড়ক-মহাসড়ক নির্বিঘ্ন ও সচল রাখার ক্ষেত্রে তাদের যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে। সংস্কারের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও তা টেকসই হচ্ছে না।
আমরা মনে করি, এলাকাভিত্তিকভাবে সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ ও সংস্কারকাজের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নির্মাণ ও সংস্কারের গ্যারান্টি থাকতে হবে। অর্থনীতিকে গতিশীল ও উন্নয়নের দিকে নিয়ে যেতে হলে সড়ক-মহাসড়কের চলাচল স্বাভাবিক ও সহজ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।