হামাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলিদের আবেগঘন চিঠি

হামাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলিদের আবেগঘন চিঠি

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম: দীর্ঘ ৭ সপ্তাহ হামলার পর এখন যুদ্ধবিরতি চলছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মধ্যে। ইসরায়েলের কারাগার থেকে যারা মুক্তি পাচ্ছেন তাদের অভিযোগ, বন্দী থাকাকালে তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের কাছ থেকে বন্দী পাওয়া ইসরায়েলি নাগরিকেরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন হামাস যোদ্ধাদের কাছে। খবর স্কুপ ইন্ডিপেন্ডেন্ট নিউজ।

পরিস্থিতি বিবেচনায় হামাসের কাছ থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের গণমাধ্যমে কথা বলতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। তারপরও কিছু কিছু প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোতে বন্দী থাকাকালে তাদের প্রতি হামাসের আচার-আচরণের প্রশংসা করা হয়েছে। তারা জিম্মিকারী হামাস যোদ্ধাদের মঙ্গলও কামনা করেন এসব প্রতিক্রিয়ায়।

হামাসের হাতে বন্দী থাকা এমন একজন নারীর নাম ড্যানিয়েল। তার সঙ্গে বন্দী ছিল তার মেয়ে এমিলিয়াও। তারা হামাসের কাছে ৫০ দিনের বেশি সময় আটক থাকার পর সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তির আগে তারা হামাসের সামরিক শাখা আল আল-কাসসাম ব্রিগেডের সদস্যদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখে যান।

ওই চিঠিতে বন্দী অবস্থায় তিনি তার সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মতো ব্যবহার করার জন্য হামাস সদস্যদের উচ্ছ্বসিত ভাষায় প্রশংসা করেন। তিনি চিঠিতে এ কথাও উল্লেখ করেন, বন্দী অবস্থায় আমার মেয়ে এতটাই আনন্দে কাটিয়েছে যে, সে নিজেকে গাজা উপত্যকার রানি মনে করত। আমাদের প্রতি আপনারা যে মানবতা দেখিয়েছেন, তার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

হিব্রু ভাষায় লেখা ওই চিঠিতে ড্যানিয়েল লেখেন, বিগত দিনগুলোতে যেসব যোদ্ধা আমার সঙ্গে ছিলেন তাদের জন্য লিখছি। তাদের আচরণে মনে হয়েছিল, আমরা তাদেরই অংশ। বিশেষ করে আমার সন্তান এমিলিয়ার প্রতি আপনারা যে অনন্য মানবতা দেখিয়েছেন, তার জন্য আমি আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

আপনারা এমিলিয়ার সঙ্গে তার মা-বাবার মতো ব্যবহার করেছেন। সে যখনই চাইতো আপনাদের কাছে ছুটে যেতে পারত, আপনারা সব সময় তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। আপনারা সবাই ছিলেন তার বন্ধু। শুধু বন্ধুই নন, আপনারা হয়েছিলেন তার সত্যিকারের প্রিয় মানুষ।

ড্যানিয়েল বলেন, শিশুদের জন্য বন্দিত্ব ঠিক নয়। কিন্তু আপনাদের অসাধারণ ব্যবহারের কারণে এমিলিয়া আপনাদের পছন্দ করে ফেলেছিল। এমনকি আপনাদের কারণে আমার মেয়ে নিজেকে গাজার রানি বলে মনে করত।

তিনি আরও লেখেন, কঠিন ও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে থেকেও আপনারা আমাদের সঙ্গে যে সদয় ও যত্নশীল ব্যবহার করেছেন, আমি অবশ্যই সেগুলো উল্লেখ করব। আপনাদের কৃতজ্ঞতা আদায় করছি, আমাদের বিশেষ করে এমিলিয়াকে মিষ্টি আর ফলমূলে ভাসিয়ে দেওয়ার জন্য। সে এখানে সবকিছুই পেয়েছে, এমনকি যেটা থাকার কথা ছিল না, সেটাও সে পেয়েছে।

চিঠির শেষ পর্যায়ে তিনি লেখেন, আমি সবসময় আপনাদের কৃতজ্ঞতা আদায় করব। কারণ এতদিন বন্দী থেকেও আমার মেয়ে মানসিক কোনো চাপ নিয়ে এখন থেকে বিদায় নেয়নি। আমি মনে করি আমরা ভালো ও সত্যিকারের বন্ধু হতে পারতাম। পরিশেষে আমি আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করছি। আপনাদের ও আপনাদের পরিবার সদস্যদেরও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। আপনাদের সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *