হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের আয়রন ডোম ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র

হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের আয়রন ডোম ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যেকোনো মুহূর্তে শুরু হতে পারে ইসরায়েলের সর্বাত্মক যুদ্ধ। আর সে যুদ্ধে হিজবুল্লাহর প্রথম আঘাতে বিপর্যস্ত হতে পারে ইসরায়েলের গর্বের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম। সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনায় এমনটিই আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে সেটি ২০০৬ সালের দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স চলমান পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়ানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণ সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি গোলাগুলি একপর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে পরিণত হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বাইরে অস্ত্রে সজ্জিত বিশ্বের সেরা গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত হিজবুল্লাহ ২০০৬ সাল থেকে তাদের অস্ত্রের মজুদ বাড়াতে শুরু করে। অরাষ্ট্রীয় গোষ্ঠী হয়েও তাদের হাতে প্রায় দুই লাখ ক্ষেপণাস্ত্র, আত্মঘাতী ড্রোন, এমনকি বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র নির্ভুলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম।

ইসরায়েলের রাইখম্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্টার-টেরোরিজম ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় জানা গেছে, দিনে প্রায় ৩ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে সক্ষমতা রয়েছে হিজবুল্লাহর। এমনকি এভাবে তারা তিন সপ্তাহ ধরে হামলা চালিয়ে যেতে পারবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হবে, তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তথা আয়রন ডোমকে নাস্তানাবুদ করতে একই সময়ে হিজবুল্লাহর নিক্ষেপ করা শত শত ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা প্রতিহত করা।

বর্তমানে ইসরায়েলের সংগ্রহে প্রায় ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি রয়েছে। এগুলোর প্রতিটি আবার চারটি লঞ্চার নিয়ে গঠিত। এগুলো রাডার সিস্টেমের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে হামলাকারী ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু একই সঙ্গে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবেলার ক্ষেত্রে এর বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ফলে হিজবুল্লাহ একইসঙ্গে ব্যাপকভাবে হামলা চালালে আয়রন ডোম ভেদ করেও কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ইসরায়েলি লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে এক সম্মেলনে ইসরায়েলের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান শাউল গোল্ডস্টেইন সতর্ক করে বলেন, প্রকৃত যুদ্ধের জন্য আমরা প্রস্তুত নই। আমার ধারণা, আমরা একটি কল্পনার জগতে বাস করছি। কারণ কোনো হামলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েল ‘বসবাসের অযোগ্য’ হয়ে উঠতে পারে। ফলে বিস্তারিত ব্যাখায় না গিয়েও আমরা বলতে পারি, আমরা ভালো নেই।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Related Articles