পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : তাবলীগ জামাতের ইজতেমা শুধু বাংলাদেশেই হয় এমনটি নয়। বরং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সময়ে বেশ কিছু ইজতেমা হয়। কোথাও পুরো দেশের হয়। কোথাও কয়েকটি দেশ মিলে হয়। কখনও কোনো দেশের একটা প্রদেশ বা অঞ্চলেরও ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
সম্প্রতি শেষ হলে ইউরোপের ঐতিহাসিক ইজতেমা। ইংল্যান্ডের ডিইউজবেরি মার্কাজে অনুষ্টিত এই ইজতেমা শেষ হয়ে গত সপ্তাহে। এই ইজতেমাকে ঘিরে গোটা ইউরোপ জোড়ে ছিল মুসলমানদের মাঝে উৎসবের আমেজ।
ইউরোপের এই ঐতিহাসিক ইজতেমায় মূল বয়ান, হেদায়তি কথা ও দোয়া করেন তাবলীগ জামাতের বিশ্ব আমির শায়খুল হাদীস মাওলানা সাদ কান্ধালবি।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত ইজতেমাগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো, দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার লক্ষ্যে বেশি পরিমাণে জামাত আল্লাহর রাস্তায় বের করা। বর্তমান সময়ে কেউ শুধু কয়েকটা বয়ান শুনে ইসলাম পালন শুরু করবে- এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে জামাতে যেয়ে যখন কেউ একসাথে কিছুটা সময় দ্বীনি পরিবেশে থাকে, তখন তার জন্য ইসলাম মানা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এজন্য শুধু ইজতেমা নয়, প্রায় সবক্ষেত্রেই দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে মানুষকে জামাতে বের করার চেষ্টা করা হয়। বেশি বেশি ইজতেমা হলে, ইজতেমাকে উপলক্ষ করে অনেকের জন্যই জামাতে বের হওয়া সহজ হয়। এজন্য ইজতেমায় বিশেষভাবে দ্বীনের দাওয়াতের গুরুত্ব এবং ঈমান-আমল সংক্রান্ত কথা বলা হয়। ইসলাম প্রচারের ক্ষেত্রে রাসূল সা. এবং সাহাবায়ে কেরামদের রা. কষ্ট ও ত্যাগ-তিতীক্ষার বিভিন্ন ঘটনাবলী উল্লেখ করা হয়। এরফলে সাধারণ মানুষ দ্বীনের কাজে আত্মনিয়োগে উৎসাহী হয়। এ জন্য দেখা যায় যে, সারা বছর মিলে যে পরিমাণ জামাত বের হয়, ইজতেমা থেকেই তার অনেক বেশি জামাত আল্লাহর রাস্তার ঈমানের দাওয়াত নিয়ে বের হয়।
ইউরোপের এই ঐতিহাসিক ইজতেমায় লন্ডনের বিখ্যাত আলেম, শায়খুল হাদীস জাকারিয়া রহ এর খলিফা মাওলানা ইব্রাহিম মুতাল, হযরত হাজী আব্দুল মুকিত, মাওলানা মাহবুব ও নাজিমুদ্দিন মার্কাজের মুরব্বিগন আম বয়ান করেছেন বলে জানা যায়।
প্রথমে ইউরোপের ২৭দেশ ইজতেমায় অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও পরবর্তিতে ৩৭টি দেশ ইজতেমাতে অংশ গ্রহন করে। লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে মাওলানা সাদ কান্ধালবি বলেন, এটাই তো বিশ্ব ইজতেমাই হয়ে গেল।
তাবলীগের এই বিশ্ব আমির দাওয়াত ও তাবলীগের জিম্মাদারি, উম্মাতেক ঐক্য ভাতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘ বয়ান করেন। তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে ঈমানি চেতনা বৃদ্ধি এবং দ্বীনের প্রচার-প্রসারের জন্যে মূলত এসব ইজতেমা করা হয়।
জানা যায়, ইজতমা উপলক্ষে ইউরোপের ইতিহাসে এটি ছিল সবচেয়ে বড় তাবলীগের মজমা। বিশেষ করে বৃট্রেনের উলামায়ে কেরামের ব্যাপক অংশ গ্রহণ ছিল এক বিরল ঘটনা। ইজতেমার মূল প্যান্ডেল ছাড়িয়ে লোকজন খোলা আকাশের নিচে অংশ নেন। তাবলীগের ইজতেমায় লাখো ইউরোপিয় মুসলমানদের এই আগ্রহ অন্যান্য ধর্মাবিলম্বি মানুষের মাঝেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে জানা যায়।