প্রতিবন্ধীদের জন্য বর্তমান সরকারের ব্যাপক অর্জন

প্রতিবন্ধীদের জন্য বর্তমান সরকারের ব্যাপক অর্জন

ফিরে দেখা । শাহ আলম বাদশা

প্রতিবন্ধীদের জন্য বর্তমান সরকারের ব্যাপক অর্জন

বিগত ৩ ডিসেম্বর ২৮তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২১ তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০১৯, প্রতিবারের মতো বিশ্বব্যাপী পালিত হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দিবসটি এবারই প্রথম উপজেলা পর্যায়েও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ ডিসেম্বর মিরপুরস্থ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন-চত্ত্বরে ১৫তলাবিশিষ্ট জাতীয় প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্স ‘সুবর্ণ ভবন’ উদ্বোধন করবেন। এবার জাতিসংঘ কর্তৃক দিবসটির প্রতিপাদ্য ঘোষণা করা হয়েছে ‌‌‌‘‘অভিগম্য আগামীর পথে” (The Future is Accessible)। ১৯৯২ সাল থেকে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। শারীরকিভাবে অসর্ম্পূণ মানুষদের প্রতি সহর্মমর্মিতা ও সহযোগিতাপ্রর্দশন এবং তাদের র্কমকাণ্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই দিসটির সূচনা। বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধী দিবসের অভিগম্যতার পেছনে আছে এক ঘটনাবহুল দুঃসহস্মৃতি।

১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের মার্চমাসে বেলজিয়ামে মারাত্মক এক খনিদূর্ঘটনায় বহুমানুষ মারা যান এবং আহত পাঁচসহস্রাধিক ব্যক্তি চিরজীবনের মতো প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। তাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠায় তাদের প্রতি সহমর্মী বেশকিছু সামাজিক সংস্থা চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজে এগিয়ে আসে। পরের বছর জুরিখে বিশ্বের বহুসংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্তর্দেশীয় বিশাল সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখান থেকেই প্রতিবন্ধিতাসম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের হদিস মেলে। সেখানে সর্বসম্মতভাবে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে বেশকিছু প্রস্তাব ও কর্মসূচি গৃহীত হয়। খনিদুর্ঘটনায় আহত ও বিপন্ন প্রতিবন্ধীদের স্বার্থে ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ পালনের আহ্বান জানানো হয়। তখন থেকেই সারাপৃথিবীর প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিবস হয়ে ওঠে এটি। আগামী বা সামনের দিনগুলোতে প্রতিবন্ধীদের জন্য কল্যাণকর কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের সকল অধিকারনিশ্চিত করাই ছিল দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্যের মর্মকথা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ২ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ভুক্ত একটি অধিদপ্তরে রূপান্তরের জন্য একে ‘প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তর’ হিসেবে ঘোষণাসহ নাম ফলকও উন্মোচন করেন।’ প্রতিবন্ধী উন্নয়ন অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠিত হলে প্রতিবন্ধীসংক্রান্ত কার্যক্রমসমূহ প্রতিটি উপজেলাপর্যায়ে বিস্তারলাভ করবে এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর সেবাদানের বিষয়টি প্রাতিষ্ঠানিক রূপলাভ করবে। প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউণ্ডেশনের ক্যাম্পাসে এ সরকারই ২০১০ সালের ২ এপ্রিল ’অটিজম রিসোর্স সেন্টারে’ এরও শুভ উদ্বোধন করেন। এর পাশাপাশি সেখানে একটি করে প্রতিবন্ধী কর্মজীবী পুরুষ ও মহিলা হোস্টেল, প্রতিবন্ধী শিশুনিবাস ও অটিষ্টিক স্কুলও চালু করা হয়েছে। এছাড়া অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুদের অভিভাবকগণকে শিশুর প্রত্যহিক লালনপালনের বিষয়ে প্রশিক্ষণদানসহ বিভিন্ন প্রকার সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফাউন্ডেশন-ক্যাম্পাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকপর্যায়ের শ্র্রবণ, বুদ্ধি ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য বিদ্যালয়ও চালু রয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়কে মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর জন্য আবাসিক সুবিধা রয়েছে। এমনকি ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে ৬৩টি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও ১১টি স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজমও পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিক্ষালাভ করছে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, পুনর্বাসন ও আবাসিক সুবিধাপ্রদানের লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সুবর্ণ ভবন’ নামক ১৫ তলাবিশিষ্ট মাল্টিপারপাস প্রতিবন্ধী কমপ্লেক্সটি নির্মাণের পর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই ভবনে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে ডিজএ্যাবল কেয়ার ইউনিট, ইনপেশেন্ট ডিপার্টমেন্ট, অটিজম রিসোর্স সেন্টার, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল সমস্যাযুক্ত ব্যক্তির থেরাপিভিত্তিক সেবা ও কাউন্সিলিং, কারিগরি ও সাধারণ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য স্পেশাল স্কুল ফর চিলড্রেন উইথ অটিজম, অন্যান্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ইনক্লুসিভ স্কুল, ডে-কেয়ার সেন্টার, শিশুদের খেলাধুলার ব্যবস্থা, ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাপ্তরিক কক্ষ, লাইব্রেরি, মাল্টিপারপাস হল, কনফারেন্স রুম, ক্যাফেটেরিয়া, নামাজের স্থান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান কর্তৃক উৎপাদিত বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর প্রদর্শন ও বিক্রয়ব্যবস্থা।

প্রতিবন্ধী শুধু নয়, প্রত্যেকটি মানুষই জন্মগতভাবে আত্মমর্যাদার অধিকারী। ধনী-গরিবনির্বিশেষে মানুষমাত্রেই এ মর্যাদাভোগের সমান অধিকার রাখে। মর্যাদাভোগ করতে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এ দায়িত্বানুভূতিকে স্মরণ রেখেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতালাভের পর বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(৩) ধারায় জাতি ধর্মবর্ণনির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে সংবিধানের ১৫(৪) ধারায় অসুস্থ, প্রতিবন্ধী, বিধবা, এতিম ও বয়স্ক জনগোষ্ঠির সামাজিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রতিবন্ধিতা কোনো রোগ নয়, মানববৈচিত্র্যের একটি অংশমাত্র। প্রতিবন্ধী মানুষদের প্রতি অবজ্ঞা বা অবহেলা করার সময় শেষ হয়েছে। তাই তাঁদের অধিকার এবং মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করতে আওয়ামীলীগ সরকারই ১৯৯৯ সনে ’জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করে।

গঠনের পর থেকে এ ফাউন্ডেশন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের প্রতিবন্ধী ও অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদানের জন্য দেশের ৬৪টি জেলা ও ৩৯টি উপজেলায় মোট ১০৩টি প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্যকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠির দোরগোড়ায় থেরাপিউটিক সেবা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সাল থেকে ৩২টি ভ্রাম্যমান মোবাইল রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি-ভ্যান এর কার্যক্রম চলমান আছে। এসব কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে থেরাপিউটিক সেবাসহ অন্যান্য সেবা প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ৪৫ হাজার ৫৩৪টি সহায়ক উপকরণ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের সাথে একটি করে অটিজম কর্ণার চালু করা হয়েছে।

একজন মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অন্যতম মাধ্যম হলো খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও এসব বিনোদনের বাইরে রাখেনি এ সরকার। তাই দেশের সাধারণ ক্রীড়াবিদদের চেয়ে প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদরা আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে অধিক সাফল্য অর্জনের মধ্য দিয়ে এদেশের জন্য দুর্লভ সম্মান বয়ে এনেছেন। স্পেশ্যাল অলিম্পিকস্-এ তারা প্রতিবছর ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত এবং দক্ষতাবৃদ্ধি করতে সাভারে আন্তর্জাতিকমানের একটি বহুমূখী ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণে ১২.১ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্রীড়া কমপ্লেক্সে ২টি বেসমেন্টসহ ১১তলা একাডেমিক ভবন, জিমনিশিয়াম, সুইমিংপূল, ফুটবল ও ক্রিকেটমাঠ, মসজিদ, ৬তলাবিশিষ্ট ডরমেটরি ভবন, ৬তলাবিশিষ্ট আবাসিক ভবন, অভ্যন্তরিণ রাস্তাসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকবে। অতি শিগগির প্রায় ৪৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ণের কাজ শুরু হবে।

দেশে অটিজম-বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ও অন্যান্য নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল শিশু সনাক্তকরণের ব্যবস্থাসহ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অভাব থাকায় সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে “সেন্টার ফর নিউরো-ডেভেলপমেন্ট এন্ড অটিজম ইন চিলড্রেন (সিনাক)” প্রতিষ্ঠা করেছে। একই সঙ্গে দেশের সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিকাশ কেন্দ্র চালু করেছে। সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সবধরনের অধিকার, উন্নয়ন ও প্রাপ্তিসহ তথ্যপ্রযুক্তিতে তাদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে ২০০৯ সালে প্রণীত “জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নীতিমালা”য় বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করেছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিচালিত Access to Information প্রকল্পের আওতায় ই-তথ্যকোষকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশগম্য করা হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তথ্যপ্রাপ্তি সহজ করতে ই-তথ্যকোষে একটি উইন্ডো খোলা হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে প্রতিবন্ধীদের সেবা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে এবং সকল প্রতিবন্ধী ও অটিজম-বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ব্যক্তি এ কর্মসূচির আওতায় ই-তথ্যসেবা পাচ্ছেন।

প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ভুল জরিপ পরিচালনা। ইতিপূর্বে দেশে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় সরকার সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে ’প্রতিবন্ধিতা সনাক্তকরণ জরিপ প্রকল্প’ পরিচালনা করছে। নভেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে এই জরিপে সনাক্তকরণ করা হয়েছে। ফলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় শতভাগ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ অন্যান্য ভাতাভোগীদের উন্নয়নে বর্তমান সরকার এবং আগের সরকারগুলোর একটি তুলনামূলক চিত্র আমি তুলে ধরতে চাই। বর্তমানে ১০ লাখ প্রতিবন্ধীর জন্য বরাদ্দকৃত প্রতিবন্ধী ভাতার পরিমান হলো ৮৪০ কোটি টাকা এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরের চেয়ে ভাতাভোগী ৫গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্রতিবন্ধীদের জন্য বাজেট বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ গুণ এবং জনপ্রতি ভাতার পরিমান বেড়েছে ২.৮ গুণ।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য উপবৃত্তির বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৮০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এক্ষেত্রে বাজেটের পরিমান বেড়েছে ১৩.৩৯ গুণ এবং ভাতাভোগী বৃদ্ধি পেয়েছে ৭.৬৯ গুণ। অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত বয়স্কভাতার পরিমান হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং ভাতা পাচ্ছেন ৪০ লক্ষ জন। ভাতাভোগীর এ সংখ্যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বাজেটবৃদ্ধি পেয়েছে ৪ গুণ এবং জনপ্রতি ভাতার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধীদের জন্য গৃহীত সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ওপর আরোপিত বাধা, কুসংস্কার এবং নেতিবাচক ধ্যান ধারণাগুলো দূরীকরণে মন্ত্রণালয়সহ অধিনস্থ দফতর-সংস্থাগুলোও সচেষ্ট। তাদের ক্ষমতায়নে সরকার শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও চিকিৎসাসহ নানাধরণের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। মানবসম্পদ হিসেবে তাদের মেধা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সরকার তাদের উন্নয়নের মূলস্রোতধারায় আনায়নে সচেষ্ট। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। ফলে ইতোমধ্যেই ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। এদুটো আইনের বিধিও প্রণীত হয়েছে। এদুটো আইনের বাস্তবায়নের ধারায় প্রতিবন্ধীগণ সুফল ভোগ করতে শুরু করেছে। তারা নির্ধারিত কোটায় চাকরি পাচ্ছে, প্রশিক্ষণ ও উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পেয়ে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে।

সরকার তাদের দারিদ্র্য ও সমস্যার কথা বিবেচনা করে প্রতিবছরই অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা-উপবৃত্তিসহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করে চলেছে, যাতে তারা অন্যান্য নাগরিকের মতো উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ পায়।

লেখক : কলামিস্ট

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *