অপূর্ব তিলাওয়াত করতেন আনোয়ার শাহ রহ.
আশরাফ উদ্দীন রায়হান : যাঁর কুরআন তেলাওয়াতের সুমধুর মূর্ছনায় আবিষ্ট হয়ে লোকে বলে ওহী নাজিল হচ্ছে যেন, যাঁর অনির্বচনীয় স্বাদ-লজ্জতের তিলাওয়াতে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা আকৃষ্ট হয়ে যেতো অবচেতনে, সেই আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ হুযুর আর বেঁচে নেই। রহমাতুল্লাহি আলাইহি। তিনি তাঁর মালিকের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন।
শাহ সাহেব হুযুর খ্যাত এই মনীষীর ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইলমী আকাশ থেকে এক অত্যুজ্জ্বল তারকা তিরোহিত হয়ে গেলো।
সিলেটের শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদের সাবেক খতীব আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জ হারালো তাঁর সবচেয়ে গর্বের ধনকে।
কিশোরগঞ্জের আলেমসমাজ তথা আপামর জনসাধারণ আর যেকোনো সময় বলতে পারবে না : কোনো চিন্তার তো দরকার নেই। আমাদের শাহ সাহেব হুযুরর আছেন। পরম নিশ্চিন্তে এই কথা আর কেউ বলার সুযোগ পাবে না।
ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের মিম্বর আর কোনো দিন শাহ সাহেব হুযুরের দেখা পাবে না। শহীদী মসজিদে আজীবন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বয়ান-করা হযরতের শেষ হাজিরা কত চমৎকারই না ছিল! উপস্থিত মুসল্লিবৃন্দের বাছ থেকে কত সুন্দরভাবে মাফ চেয়ে নিলেন এবং মাফ করেও দিলেন। পারস্পরিক হক আদায়ের ব্যাপারে কতটা সতর্কতা প্রদর্শন করেছেন। এই না হলেন আমাদের শাহ সাহেব হুযুর। কী হৃদয়বিদারক সে দৃশ্য! মসজিদভরা মানুষ অবুঝ শিশুর মতোন হাউমাউ করে কান্নার রোল তোলে দিলেন। শাহ সাহেবের সাথে সাথে উপস্থিত মুসল্লিবৃন্দ সবার চোখেই বাঁধনহারা অশ্রুধারা।
বুখারির দরসে-মসনদে তাঁর নূরানী অবয়ব আর কোনোদিন চোখে পড়বে না!
কিশোরগঞ্জ শত জনমের চেষ্টা করেও আরেকজন আনোয়ার শাহ বানাতে পারবে না। থানভী খলিফা মাওলানা আতহার আলী (রহ.)-এর রক্তপ্রবাহের একটা ধমনী চিরতরে স্তব্ধ হয়ে গেলো!
লেখক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী