পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সারাবিশ্বে করোনার হানা পড়েছে। জেঁকে বসেছে ভাইরাসের ভয়াল থাবা। মৃতু সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার। দুর্বিষহ বর্তমান বিশ্ব জীবন ব্যবস্থা। এর মধ্যে ২২ হাজার পেরিয়ে কিছুটা গতি কমেছে আমেরিকার মৃত্যু মিছিলের। স্পেনও দাবি করেছে, দৈনিক মৃতের সংখ্যা এখন কিছুটা কম। একই কথা জানাচ্ছে ইতালি, ফ্রান্সও। যার জন্য ইউরোপের কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলি গৃহবন্দি থাকার নির্দেশিকা শিথিল করার কথা ভাবছে।
একমাত্র যে ব্রিটেন এত দিন বাসিন্দাদের গৃহবন্দি করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তারাই এখন দেশ এক বছর তালাবন্ধ করার কথা ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলীর বিশেষ বৈঠকে মিলেছে এমনই ইঙ্গিত।
পৃথিবীজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সংখ্যা এখন ১৮ লাখের উপরে। মৃত্যু ১ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। ইউরোপে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি ইতালির। ১৯,৮৯৯ জনের প্রাণ যাওয়ার পরে এ দেশে মৃত্যুহার কিছুটা কমেছে। স্পেনে মারা গিয়েছেন ১৭,৪৮৯ জন। ফ্রান্সে সংখ্যাটা ১৪,৩৯৩। কিন্তু ব্রিটেনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও করোনা-আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন রাত আইসিইউতে কাটিয়েছেন।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বরিস জনসন বলেছেন, ‘ওদের জন্যই জীবন ফিরে পেলাম।’
এরপর মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বরিস জনসন ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিস’-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
বৈঠকে বরিস জনসন জানিয়েছেন, এত দিন বাসিন্দাদের ঘুরে-বেরানো, মেলামেশায় নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার শয্যা এক-এক করে ভরতে থাকার পরে এবং মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ানোর পরে নতুন করে ভাবছে ব্রিটিশ প্রশাসন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, রেস্তোরাঁ বন্ধ না করলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না দেশে। আর এই লকডাউনের সময়কাল এক বছর পর্যন্ত হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
ব্রিটেনের বিশেষজ্ঞরাও আপাতত স্কুল-কলেজসহ যে কোনো ধরনের জমায়েত দীর্ঘমেয়াদিভাবে বন্ধ রাখার উপরে জোর দিচ্ছেন। বন্ধ রাখা হবে বাজার-দোকানও। তাতে দরিদ্র পরিবারগুলি কঠিন আর্থিক পরিস্থিতিতে পড়লেও কিছু উপায় নেই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘সরকার যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়, তবেই দেশের মানুষ এর গুরুত্ব বুঝবে।’
এখন পর্যন্ত ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮,৬২১ জন এবং মারা গেছেন ১১,৩২৯ জন।