শতবর্ষী বটগাছে ৭২টি মৌচাক

শতবর্ষী বটগাছে ৭২টি মৌচাক

শতবর্ষী বটগাছে ৭২টি মৌচাক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশ কেন্দ্রের শতবর্ষী একটি বটগাছে মৌমাছির দল ৭২টি চাক বেঁধেছে। একসঙ্গে এত মৌচাক দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন ভ্রমণপিপাসুরা। এছাড়া স্থানীয় উৎসুক মানুষের উপস্থিতি তো আছেই।

গজনী অবকাশ কেন্দ্রের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী বটগাছ। এর গোড়া থেকে শুরু করে মগডাল পর্যন্ত চাক বেঁধে বসবাস করছে মৌমাছির দল। তাদের গুঞ্জনে মুখরিত পুরো এলাকা।

জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার আহসান হাবীব বলেন, ‘অবকাশ কেন্দ্রে বেড়াতে এসে একটি বটগাছে ৭২টি মৌচাক দেখলাম। একটি গাছে এত চাক হতে পারে কখনও ভাবিনি।’

গজনী অবকাশ কেন্দ্রের বটগাছে মৌচাকমৌচাষি আব্দুল হালিম জানিয়েছেন, অবকাশ কেন্দ্রের বটগাছে চাক বাঁধা মৌমাছিগুলো ডাচ জাতের বন মৌমাছি। তারা সংঘবদ্ধভাবে এক জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। গারো পাহাড়সংলগ্ন বনে এখন প্রচুর ফুল ফুটেছে। এসব ফুল থেকে মধু আহরণের সহজ উৎস হওয়ায় মৌমাছিগুলো প্রাচীন বটগাছটিতে বাসা বেঁধেছে।
ঝিনাইগাতীর কাপড় ব্যবসায়ী আকরাম উল্লেখ করেন, মৌচাকগুলোতে কেউ ঢিল ছোড়ে না। তাই মৌমাছিরা নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারছে। দর্শনার্থীরা অবকাশ কেন্দ্রে বেড়াতে এসে বটগাছটির সামনে দাঁড়িয়ে সময় কাটান।

মৌচাক দর্শনার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়। তাই গজনী অবকাশ কেন্দ্রে ভ্রমণপ্রেমীদের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ এই তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘একটি গাছে এত মৌচাক সচরাচর দেখা যায় না। এসব মৌচাক থেকে কেউ যেন মধু আহরণ এবং মৌমাছিদের বিরক্ত না করে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।’

ভারতের মেঘালয়ের কোলঘেঁষে ও বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তে অরণ্যরাজি আর গারো পাহাড়ের পাদদেশে পাহাড়ি নদী ভোগাই, চেল্লাখালি, মৃগী, সোমেশ্বরী, মালিঝি, মহারশীর ঐশ্বরিক প্রাচুর্যস্নাত অববাহিকায় সমৃদ্ধ জনপদ শেরপুর। এ জেলার বিশাল অংশজুড়ে গারো পাহাড়ের বিস্তৃতি। লাল মাটির উঁচু পাহাড়। গহীন জঙ্গল, টিলা, মাঝে সমতল। দু’পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে ছন্দ তুলে পাহাড়ি ঝরনার বয়ে চলা। পাহাড়, বনানী, ঝরণা, হ্রদ এতসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে কৃত্রিম সৌন্দর্যের অনেক সংযোজনই রয়েছে গজনী অবকাশ কেন্দ্রে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য– ডাইনোসর, ড্রাগন, জলপরী, ফোয়ারা, দন্ডায়মান জিরাফ, ওয়াচ টাওয়ার ও পদ্ম সিঁড়ি।

গজনী অবকাশ পর্যন্ত রয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মসৃণ পিচঢালা পথ। রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ হয়ে যাতায়াতই সবচেয়ে উত্তম। উত্তরবঙ্গ থেকে টাঙ্গাইল-জামালপুর হয়েও আসা যাবে সড়কপথে। শেরপুর শহর থেকে গজনীর দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে সরাসরি মাইক্রোবাস অথবা প্রাইভেট কারে সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রে যাওয়া যায়। ঢাকার মহাখালী থেকে ড্রিমল্যান্ড বাসে শেরপুর আসা যায়। ভাড়া ২৫০ টাকা। মহাখালী থেকে দুপুর ২টায় ছাড়ে এসি বাস। ভাড়া ৩৫০ টাকা। ড্রিমল্যান্ডে এলে শেরপুর নেমে নিউমার্কেট থেকে মাইক্রোবাসে ৫০০ টাকা ভাড়ায় গজনী পৌঁছানো যায়। শেরপুর থেকে লোকাল বাস, টেম্পু, সিএনজি অথবা রিকশায় গজনী অবকাশ কেন্দ্রে যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ৪ নং গেট থেকে সরাসরি বিকাল ৩টা-৪টায় শিল্প ও বণিক সমিতির গাড়ি ঝিনাইগাতীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ভাড়া ৩০০ টাকা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *