অপরাধীদের যেন সংসদ সদস্যরা রক্ষা না করেন : প্রধানমন্ত্রী

অপরাধীদের যেন সংসদ সদস্যরা রক্ষা না করেন : প্রধানমন্ত্রী

অপরাধীদের যেন সংসদ সদস্যরা রক্ষা না করেন : প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : সংসদ সদস্যদের প্রতি অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংসদ সদস্যদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, তারা যেন এই ধরনের অপরাধীদের কখনো রক্ষা করার চেষ্টা না করেন। অপরাধ যে করে এবং অপরাধীকে যারা রক্ষা করে তারা সমান দোষী।

বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুন-অর-রশিদের করা এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে। আসলে বিষয়টা কী, সেটা আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে আরো কী কী ঘটনা থাকতে পারে সেগুলো যথাযথভাবে দেখা হচ্ছে। তাকে হেলিকপ্টারে করে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে আসাসহ তার চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অপরাধী কোন দলের, কে, কি আমি কিন্তু সেটা বিচার করি না। সেটা আপনারা দেখেছেন। আমি অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখি। সেখানে যদি আমার দলেরও লোক হয়, সমর্থক হয় তাকেও আমি ছাড়ি না, ছাড়ব না। এটা হলো আমার নীতি এবং সেই নীতি নিয়ে আমি চলছি।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের সময়ে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকে আমাদের প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, পুলিশ বাহিনী ও আমাদের দলের নেতাকর্মী ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ আন্তরিকতার সাথে মাঠে কাজ করেছে। এই কাজ করতে গিয়ে আমাদের বহু নেতাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকে মারা গেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটার পর একটা ধাক্কা আসলো। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে সেই ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ২৪ লাখ মানুষকে আমরা সরিয়ে তাদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। আম্ফানের ধাক্কা কাটতে না কাটতে আসলো বন্যা। সেই বন্যা মোকাবিলা করা এবং এই প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের সাহায্য করা এটা কিন্তু সকলে মিলে সম্মিলিতভাবে করা হয়েছে। এটা করার ফলে আমরা সেখান থেকে মুক্তি পেয়েছি।

তিনি বলেন, যারা এত আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে তাদেরকে এইভাবে আঘাত করা কখনো গ্রহণযোগ্য না। আমরা কিন্তু ইতোমধ্যে অপরাধী শনাক্ত করা এবং যাদেরকে ধরা হয়েছে এর পেছনে কারা আছে সেটাও কিন্তু তদন্ত করা হচ্ছে। এটা খুব ভালোভাবেই তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে কোনো ঘাটতি নেই। অপরাধী ঠিকই শাস্তি পাবে সেই ব্যবস্থা আমরা করব।

বিএনপির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বলেছেন, ‘অতীত টেনে কথা বলি কেন?’ অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনের চলার পথ নির্দিষ্ট করতে হয়। তা না হলে শিক্ষা হয় না। সেই কারণেই অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হয়। এখানে অতীত নিয়ে কথা না একানব্বই সালের কথা আমি বলেছি, সেই ঘূর্ণিঝড়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা।

তিনি বলেন, আমরা তো দেখেছি কত অবহেলার শিকার হয়েছিল এই দেশের মানুষ, ঠিক সত্তরের ঘূর্ণিঝড়ের পর যেমন মানুষ অবহেলিত ছিল। সেই সময় আমরা বিরোধী দলে থেকে আমরাই সেই দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। তারপর সরকার গিয়েছিল, সরকারতো ঘুমাচ্ছিল। আর এই পার্লামেন্টে বলেছিল, ‘যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরেনি’। এটা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছিল। এইটা হলো দুর্ভাগ্য। অতীতকে স্মরণ করতে হবে, সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তাহলে আমরা আগামী দিনের পথ চলতে পারবো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *