অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে অঙ্গীকার হোক

অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে অঙ্গীকার হোক

অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখতে অঙ্গীকার হোক

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : দেশে কোনো অপশক্তিকেই সুযোগ দেয়া উচিত হবে না। দেশবান্ধব বিশ্লেষকগণ এমন ধারণা করছেন। তবে অপশক্তি চিহ্নিত করণের ক্ষেত্রে বুদ্ধির পরাজয় যাতে না হয় সেদিকেও ভ্রুক্ষেপ থাকা জরুরি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে একাত্তরের পরাজিত শক্তিগুলো এখনো নানাভাবে সক্রিয়। ১৯৭৫ সালে এরাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। দেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল। গোলাম আযম, নিজামীদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।

জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের ধারায় ফিরে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করায় নিজামী-মুজাহিদসহ বেশ কিছু জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু পরাজিত শক্তি ও তাদের অনুসারীরা থেমে যায়নি। কখনো জঙ্গিবাদকে উসকে দিয়ে, কখনো আগুন সন্ত্রাস করে, কখনো গুপ্তহত্যার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেয়েছে। এখন ওরা উঠেপড়ে লেগেছে ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যের আড়ালে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিতে। সংগত কারণেই এবারের বিজয় দিবসে লাখো কণ্ঠে উচারিত হয়েছে যে এদের সঙ্গে কোনো আপস নয়, এদের মূলোৎপাটন করতেই হবে। মহান বিজয় দিবসে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি। সুযোগ পেলেই ওরা ছোবল মারার চেষ্টা করে। বঙ্গবন্ধুর মতোই তাঁর কন্যাকেও বহুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের জনসভায় তাঁর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। দেশে একযোগে পাঁচ শতাধিক বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। আদালতে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। বিচারকদের হত্যা করা হয়েছে। এদের আর কোনোভাবেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে চলা নানামুখী ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের ঘটনাকে পারিবারিক ঘটনা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তাদের আসল চেহারা বের হলো যখন ৩ নভেম্বর ওরা জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করল। বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে ওরা সাম্প্রদায়িক দিকে নিয়ে গেল। ওরা যুদ্ধাপরাধীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছিল। সেখান থেকেই ওদের লক্ষ্য বোঝা গিয়েছিল। তিনি বলেন, সবাই এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রক্ত দিয়েছিল বলেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। কাজেই এ দেশের মাটিতে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে। যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সবারই থাকবে।

ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এবং বহু মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছি, সেই বাংলাদেশে আমরা আবারও স্বাধীনতাবিরোধীদের কোনো আস্ফাালন দেখতে চাই না। আমরা চাই না, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতোই দশা হোক আমাদের প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশের। যারা আগুন নিয়ে খেলতে চায়, তাদের কোনোভাবেই আশকারা দেওয়া যাবে না। তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সর্বোচ সতর্কাবস্থায় রাখতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *