পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : একজন খাঁটি আলেমকে শয়তান তাকাব্বুরের মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি ধোঁকা দিয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেছেন শাইখুল ইসলাম সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.) এর পৌত্র, জানেশীনে ফিদায়ে মিল্লাত, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম অধ্যাত্মিক রাহবার, জমিয়তে উলামা হিন্দের কেন্দ্রীয় সভাপতি আওলাদে রাসূল, হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ আসআদ মাদানী।
তিনি বলেছেন, শয়তান যে জিনিসটির মাধ্যমে একজন খাঁটি আলেমকে সবচেয়ে ভয়ঙ্করভাবে ধোঁকা দিতে পারে তা হলো ‘তাকব্বুর’, অহংকার প্রদর্শন করা। আর শয়তান আলেমকে ধোঁকা দেয় নিজের ‘ইলমের তাকাব্বুর’, নিজের অনেক জ্ঞান, ইলম আছে এমন ধারণা আলেমের মাঝে প্রোথিত করে দেয়ার মাধ্যমে। কারণ, ইলম দুনিয়া ও আখিরাতের সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু। তাই ইলমের মাধ্যমে আলেমকে ধোঁকা দেয়া শয়তানের জন্য অত্যন্ত সহজ একটি কাজ। তাই ভাইয়ো, একজন আলেমের এক্ষেত্রে খুবই সাবধানী হওয়া উচিত। কখনো তাকাব্বুর বা অহংকার প্রদর্শন করা উচিত না। কারণ অহংকারকারীকে আল্লাহ তাআলা পছন্দ করেন না।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রামপুরায় অবস্থিত জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসায় ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বয়ান করতে গিয়ে মাওলানা মাহমুদ মাদানী এসব কথা বলেন।
ফিদায়ে মিল্লাত (রহ.)-এর অন্যতম খলীফা মাওলানা মাহমুদ মাদানী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের উপর আল্লাহর অনেক ফজল ও করম আছে। আপনারা যার শুকরিয়া আদায় করে শেষ করতে পারবেন না। আল্লাহ তাআলা আপনাকে মুসলিম ঘরে জন্ম দিয়েছেন। আপনার উপর আল্লাহ তাআলার এটা অনেক বড় মেহেরবানী। আপনি যদি মুসলিম ঘরে জন্ম গ্রহণ না করতেন, হয়ত আজ আপনি কোনো মূর্তির সামনের সেজদা করতেন। আর তাই, আল্লাহর প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত। তারপর আপনার বাবা-মা আপনাকে মাদরাসায় পাঠিয়েছেন। তারা যদি আপনাকে মাদরাসায় না পাঠাতেন, হয়ত আজ আপনি কোনো দোকানে কাজ করতেন, কোনো ব্যবসা করতেন। এটাও আল্লাহ তাআলার এক মহান মেহেরবানী। আল্লাহ তাআলার এরকম হাজারো মেহেরবানী আপনার উপর আছে। তাই আমাদের আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা আদায় করা উচিৎ।
আপনারা মাদরাসায় কী জন্য এসেছেন? —ছাত্রদের সামনে এ প্রশ্ন রেখে আওলাদে রাসূল বলেন, আপনারা কী জন্য মাদরাসায় এসেছন, দুনিয়ার ধনসম্পদ কামানোর জন্য? নাকি প্রসিদ্ধি উপার্জনের জন্য? কোনোটার জন্যই আপনারা মাদরাসায় আসেন নাই, আপনারা মাদরাসায় এসেছেন একমাত্র ইলম হাসিলের জন্য। যদি আপনারা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে মাদরাসায় এসে থাকেন, তাহলে এখনই আপনার ইচ্ছাকে পরিবর্তন করুন। অন্যথায় মাদরাসার এই ইলম আপনার কোনো কাজে আসবে না।
মাওলানা মাদানী আরও বলেন, আপনাদের জানতে হবে যে, আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে নবীর ওয়ারিস হিসেবে নির্বাচন করেছেন। আপনারা কোনো সাধারণ মানুষ নন। আপনারা আল্লাহ তাআলার নির্বাচিত বান্দা। আমরা জানি, কেয়ামতের আগে আর কোনো নবী আসবেন না। তাই নবীর অবর্তমানে নবুওয়াতের কাজ আঞ্জাম দেয়ার জন্যই আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে বাছাই করেছেন। আর আমাদের যদি উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য জানা থাকে, তাহলে আমাদের জন্য ইলম অর্জন সহজ হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নবুওয়াতি কাজের জন্য কবুল করুন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ইয়ইয়া মাহমুদ, মাওলানা আসআদ আল হুসাইনী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন, মাওলানা সদরুদ্দীন মাকনুন প্রমুখ।