আলোচিত চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন আর নেই

আলোচিত চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন আর নেই

পাথেয় রিপোর্ট : সময় চলে গেলে কেউ থাকেন না। তাকে রাখা যায় না। যে চলে যাবার সে নিজের মতো করেই চলে যায়। পৃথিবীতে রেখে যায় দাগ। চলে গেছেন আলোচিত চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।

থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন।

চলচ্চিত্র পরিচালক এস এ হক অলিক জানান, শুক্রবার দুপুরে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের চিকিৎকরা আমজাদ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

নভেম্বরের মাঝামাঝি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আমজাদ হোসেন। তখন তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরিস্থিতির একটু উন্নতি হলে তাকে নেওয়া হয় থাইল্যান্ডে। দুই ছেলে সোহেল আরমান ও সাজ্জাদ হোসেন দোদুলও সেখানে তার সঙ্গে ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া হিসেবে ২২ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং চিকিৎসার ব্যয় হিসাবে ২০ লাখ টাকা একুশে পদকজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনের পরিবারের হাতে তুলে দেন।

গত ১৮ নভেম্বর আমজাদ হোসেন রাজধানীর নিজ বাসভবনে স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তিনি রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আমজাদ হোসেনের শারীরিক অবস্থা বিশেষ ভালো ছিল না। বার্ধ্যক্যজনিত রোগও ছিল। তবে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় এজন্যই তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল।

আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট, জামালপুরে। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।

যাত্রার শুরুটা ছিল মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি অভিনয় করেন মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে।

আমজাদ হোসেনের লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সালাহউদ্দিন। এতে আমজাদ হোসেন নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর তিনি জহির রায়হানের ইউনিটে কাজ শুরু করেন।

এভাবেই দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে ১৯৬৭ সালে নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। নাম ‘জুলেখা’। তার পরিচালিত ব্যাপক দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র হচ্ছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।

১৯৮১ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত পালন করেন আমজাদ হোসেন। গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *