আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার চাইতে বড় কিছু নেই : আল্লামা মাসঊদ

আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার চাইতে বড় কিছু নেই : আল্লামা মাসঊদ

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার চেয়ে বড় কিছু মানবজীবনে নেই বলে মন্তব্য করেছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান, শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।

তিনি বলেন, বান্দার জন্য আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার চাইতে বড় কিছু নাই। আমরা গোলাম, আল্লাহ তাআলা মালিক। গোলামের কাজই হলো মালিককে সন্তুষ্ট করা। আল্লাহ তাআলা যদি আমাদের উপর খুশি হয়ে যান, তাহলে দুনিয়া ও আখিরাতের সবকিছু আমাদের হয়ে যাবে।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) হাজীপাড়া ঝিল মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার বয়ানে ফিদায়ে মিল্লাতের সুযোগ্য এই খলীফা এসব কথা বলেন।

রমজানে সবাইকে আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে ধাবিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এ বছর আমরা শুক্রবার দিয়ে রমজান শুরু করতে পেরেছি। দেখতে দেখতে রমজানের প্রায় ৮ দিন চলে যাচ্ছে। আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। রমজান আমাদের জীবন থেকে অতি দ্রুত চলে যাচ্ছে। তাই আমরা যত দ্রুত পারি, আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির দিকে ধাবিত হই।

তিনি বলেন, কেমন করে নিজেদের জীবনকে উন্নত করতে পারি? কীভাবে আখিরাতের জন্য তৈরী হতে পারি? এনিয়ে আমাদের সচেতন হওয়া দরকার, সচেষ্ট হওয়া দরকার।

রহমতের বাকী দিনগুলো আমলের সাথে কাটানোর আহ্বান জানিয়ে ফিদায়ে মিল্লাত রহ.-এর এই খলীফা বলেন, আমরা নিজেদেরকে জিজ্ঞেস করি, আল্লাহর রহমত টানতে পারার মতো আমরা কোনো ইবাদাত করেছি কি না? যদি করে থাকি, তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি না করে থাকি, তাহলে আর যে দুই দিন আছে আল্লাহর কাছে এতোটা কান্নাকাটি করি, দুআ করি, ইবাদাত করি, যেন আল্লাহ তাআলা আমাদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান।

তিনি বলেন, যদি আল্লাহ তাআলা নারাজ থাকেন, আর পৃথিবীর সবকিছু রাজি থাকে, তাহলে আমার কিছুই নেই। সুতরাং রমজানের সময়টাকে আমরা গুরুত্ব দিই।

রহমত না পেলে মাগফিরাত পাওয়া যাবে না জানিয়ে তিনি আল্লামা মাসঊদ বলেন, রমজানের প্রথম দশকে যে রহমতের অধিকারী হবে, যে আল্লাহর রহমতকে নিজের দিকে টানতে পারবে, সেই দ্বিতীয় দশকে মাগফিরাতের উপযুক্ত হবে। আর যে মাগফিরাতের উপযুক্ত হবে সেই তৃতীয় দশকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে। এটা একটা তারতীব। কারণ আল্লাহর রহমত ছাড়া কিছুই হবে না। রহমত ছাড়া মাগফিরাত পাওয়া যাবে না। মাগফিরাত ছাড়া জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, রহমতের সাথে মাগফিরাতের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কেউ ইবাদাতের হুকুম মেনে, কেউ দাবী করে আল্লাহ তাআলার কাছ থেকে রহমত নিতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা নিজ ইচ্ছায় বান্দাকে মাগফিরাত করবেন। সুতরাং মাগফিরাতকে পেতে হলে আমাদের আগে রহমত পেতে হবে।

কোন কোন আমলের মাধ্যমে রহমত পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে শাইখুল ইসলাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, আল্লাহর রাস্তায় দান খয়রাত করার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়। কুরআনে আল্লাহ তাআলা নিজে বলেছে, ‘জান্নাতের বদলায় তোমাদের জান-মাল সবটা তোমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছি।’ অর্থাৎ তোমাদেরকে জান্নাত দিবো বিনিময়ে তোমাদের জান-মাল আমার।

তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনিতেই প্রচুর দান করতেন। কিন্তু রমজানে তাঁর দান-সাদাকার পরিমান বহু গুণে বেড়ে যেত। প্রবাহিত বাতাস যেমন শেষ হয় না, রমজানে নবীজীর দান-সাদকাও শেষ হতো না।

কুরআনের দাওর–পরস্পরকে তেলাওয়াত শোনানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রমজানে কুরআন তেলাওয়াত করার মাধ্যমেও আল্লাহর রহমত লাভ করা যায়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানে হযরত জিবরাইলের সাথে কুরআনের দাওর করতেন। আফসোস, আজ আমাদের মাঝে এই আমলটা নাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাঁর রহমত পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *