উইকেট কাজে লাগিয়ে মাশরাফির ঢাকা প্লাটুনের বাজিমাত
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :: ঢাকা প্লাটুন বাজিমাত করেছে উইকেটকে কাজে লাগিয়ে। অলরাউন্ডার মেহেদী করেছেন দারুণ পারফরমেন্স। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের আফগান রহস্য স্পিনার মুজিব উর রহমানকে সামলানোর জন্য অভিনব উপায় বের করেছিল ঢাকা প্লাটুন। খেলতে কষ্টও হয়েছে তবে প্রস্তুতি থাকায় ভালো করেছে ঢাকা। টেনিস বলের এক পাশে টেপ পেঁচিয়ে, অন্য পাশে খালি রেখে ম্যুভমেন্টের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিল তারা। এরসঙ্গে আবার পরিবর্তন এনেছিল নিজেদের গেমপ্ল্যানেও।
যে কারণে ইনিংসের প্রথম ওভারে ওপেনার এনামুল হক বিজয় খালি হাতে ফিরে যাওয়ার পর তিন নম্বরে পাঠানো হয় অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানকে। যাকে মূলত স্পিনার হিসেবেই খেলাচ্ছে ঢাকা। মুজিবের শুরুর ওভারগুলো সামাল দেয়ার জন্যই মূলত নামানো হয়েছিল মেহেদীকে।
আর এই মেহেদীর ঝড়ো ব্যাটিংয়েই কুমিল্লার করা ১৬০ রানের সংগ্রহ তাড়া করার ভিত পেয়ে যায় ঢাকা। প্রতিপক্ষের অফস্পিনার রবিউল ইসলাম রবির করা ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে লাইফ পেয়েছিলেন মেহেদী। পরের পাঁচ বলে তার শটগুলো ছিলো যথাক্রমে ৪, ৬, ৬, ৬ ও ৬ অর্থাৎ ২৮ রান।
সেই ওভারে ২৮-সহ মাত্র ২১ বলে ফিফটি করেন মেহেদী। আউট হওয়ার আগে ২ চার ও ৭ ছয়ের মারে ২০৩.৪৪ স্ট্রাইকরেটে ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এর আগে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচায় নিয়েছিলেন ২টি উইকেট। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই পেয়ে যান ম্যাচসেরার পুরস্কার।
পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে মেহেদী কথা বলেছেন নিজের ব্যাটিংয়ের ব্যাপারে। জানিয়েছেন, ছক্কা হাঁকানোর ক্ষমতাটা তার আরও আগে থেকেই ছিল। সাধারণত ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি এমন মেরেই খেলে থাকেন। তবে বিপিএলে নির্দিষ্ট ব্যাটিং পজিশন না থাকায়, তেমনভাবে ব্যাটিং করতে পারেন না।
মেহেদী বলেন, ‘আমি খেললে এরকমই খেলি। আমার প্রথম শ্রেণির ম্যাচ দেখেন, ঘরোয়া ম্যাচ দেখেন, আমি খুব মারতে পারি। তবে বিপিএল একটু ভিন্নরকম জায়গা। এখানে আমি ওভাবে সুযোগ পাই না সত্যি বলতে। আমার ইনিংসগুলো দেখুন, সবসময় একই জায়গায় ব্যাটিং করতে পারি না। কখনো ১০, কখনো ৯ নম্বর- সেই ক্ষেত্রে শেষের দিকে আমার জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। নতুন বলের জন্য আমি ঠিক আছি। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করতে পারি, কোচেরও সেই পরিকল্পনাটা ছিল আর কী!’
কুমিল্লার বিপক্ষে মিরপুরের ম্যাচেও তিন নম্বরে পাঠানো হয়েছিল মেহেদিকে। সে ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল ১৭ বলে ১২ রান। তবে পরিকল্পনা মোতাবেক মুজিবের ওভারগুলো ভালোই সামলেছিলেন তিনি। তাই আজকের ম্যাচেও একই পরিকল্পনায় তাকে ওপরে দেয়া হয়েছিল। কারণ, ঢাকা প্লাটুনের ইনিংসে তার উইকেটটিই ছিলো মূল্যহীন। যদিও ব্যাট হাতে দিনের সবচেয়ে মূল্যবান ইনিংসটাই খেলেছেন।
মেহেদীর ভাষ্যে, ‘আমি আগেও বলেছি, মুজিব ছিল তো! ওকে খেলা একটু মুশকিল। এজন্য আমাকে আগে পাঠানো। কারণ আমার উইকেট ছিল মূল্যহীন। আমার উইকেট তো হিসাবে ধরে না। এ জন্য মুজিবকে সামাল দেয়ার জন্য আমাকে পাঠিয়েছে। আমি অফস্পিনার পেয়ে গেছি, সুযোগ নিয়েছি আর সফলও হয়ে গিয়েছি।’
এসময় নিজের ব্যাটিং পরিকল্পনার বিষয়ে মেহেদী জানান, ‘আমি আসলে অফস্পিনারের ওভারে পুরোটাই সুযোগ নিতে গিয়েছি। যদি এখান থেকে সাকসেস হতো আমার জন্য ভালো, আমি সেটাই করেছি। দেখেন আমি একটা বলও আরামে খেলিনি। এদিক ওদিক করে খেলছি, যেন সে ভালো জায়গায় বোলিং করতে না পারে। আমি আমার শক্তির জায়গায় বল পেয়ে গেছি, সাকসেস হয়ে গেছি।’