পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : আদালত পুলিশের ৩১তম বিসিএস কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১০ জনের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) ঢাকার মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, কিচেন সেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান।
আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. ফারুক মোল্লা আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিদের পক্ষে ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মামুন, আবুল কালাম আজাদ, মাহমুদুল হাসান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলায় বলা হয়, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফাইজুদ্দীন আহম্মেদ বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ছয় থেকে সাত জন টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।
/এএ