২৬শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ , ৩রা রমজান, ১৪৪৪ হিজরি
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অতি জরুরি না হলে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। শ্রীলঙ্কার হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও যন্ত্রপাতি সংকটের কারণে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ন্যাশনাল হসপিটাল অব শ্রীলঙ্কা যেমন, তেমনি পল্লী অঞ্চলের হাসপাতালগুলোও ওষুধ সংকটে ভূগছে
এ বিষয়ে রোববার শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর গুরুতর সংকট দেখা দেওয়ায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে ‘আবশ্যকীয়’ ও ‘অতি জরুরি’ নয় এমন অস্ত্রোপচার বিলম্বের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি ও আবশ্যকীয় সার্জারি চলবে।
জানা গেছে, অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আমদানি বন্ধ থাকায় শ্রীলঙ্কায় জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষত অ্যানেসথেটিকস ও ব্যথা নিবারক ওষুধের মজুত তলানিতে ঠেকেছে। এ কারণে হাসপাতালগুলোতে অস্ত্রোপচার ও জরুরি রোগী ব্যবস্থাপনা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে।
শ্রীলঙ্কা সরকারের মেডিকেল সাপ্লাইস ডিভিশনের (এমএসডি) তথ্য মতে, অপরিহার্য বা এসেনশিয়াল হিসেবে শ্রেণীভুক্ত ৩০০ ওষুধের মধ্যে ১৬০টির মজুত সম্পূর্ণ শেষ হয়ে গেছে। উল্লিখিত ১৬০টি ওষুধের মধ্যে কোনো কোনোটির সীমিত মজুত দুএকটি হাসপাতালে থাকতে পারে, যারা এর আগে এমএসডি থেকে সরবরাহ পেয়েছে। তবে বর্তমানে এমএসডিতে ১৬০টি অপরিহার্য ওষুধের মজুত শূন্য।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শ্রীলঙ্কার হাসপাতাল তো বটেই, খোলাবাজারেও স্থানীয় ও জেনেরিক এনেসথেটিক এজেন্টের মজুত শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে আবশ্যকীয় নয় এমন অস্ত্রোপচার বিলম্বিত করে জরুরি অস্ত্রোপচারে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কা মেডিকেল এসোসিয়েশনের (এসএলএমএ) এক প্যানেল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, জরুরি ওষুধের সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে শ্রীলঙ্কা আক্ষরিক অর্থেই জরুরি পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। আবশ্যকীয় ও অপরিহার্য ওষুধের সংকটের কারণে আইসিইউ, পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ার ও সিজারিয়ান সেকশনের রোগী নিয়ে হাসপাতালগুলো বিপাকে পড়েছে।
এসএলএমএ’র প্যানেল আলোচক প্রফেসর ডা. অনোমা পেরেরা বলেছেন, গ্রামের কোনো হাসপাতাল হোক অথবা কলম্বোর ন্যাশনাল হসপিটাল অব শ্রীলঙ্কা হোক, ওষুধ সংকটের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সবখানে। এক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতাল সবার অবস্থা এক।
তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা সীমিত থাকবে। এরইমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে একপর্যায়ে কেবল জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা বন্ধ করে দিতে হবে।