সহজিয়া কড়চা । আমিনুল ইসলাম কাসেমী
কওমীর সন্তান তুমি কোন পথে?
শাহ ওয়ালী উল্লাহর উত্তরসুরী, কাসেমী বাগানের প্রস্ফুটিত ফুল তুমি। শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসান দেওবন্দীর চেতনা, হুসাইন আহমাদ মাদানী এর রাজনৈতিক ময়দানের অজেয়-মুজাহিদ- সৈনিক। কিন্তু তুমি আজ কোন পথে? কোথায় পা বাড়িয়েছ? তোমার চাল- চলন এ কেমন? , তোমার রাজনৈতিক দর্শন কি? তোমার রাহবার এখন কে? কওমীর লেবাস গায়ে লাগিয়ে, দেওবন্দী তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের দৃষ্টি ভঙ্গি লালন করে তুমি কোথায় ছুটে চলেছ? তুমি কি ভেবে দেখেছ? তোমার আকাবির- আছলাফ কোনদিকে, কোন মেজাজে চলেছেন। তুমি কি জান? তোমার পুর্বসুরীদের কি আখলাক, কি গুণে- গুণান্নিত তারা।
হে কওমীর কান্ডারী! হে দেওবন্দের সন্তান! তুমি তো দ্বীন ইসলামের অতন্দ্র প্রহরী। অকুতোভয় সৈনিক। তোমার শিরা- উপশিরায় সেই সব বীর মুজাহিদের রক্ত প্রবাহিত হয়, যারা জীবনের শেষদিন পর্যন্ত বাতিলের সাথে কোন আপোস করেনি। তুমি তো সেই পথের এক বিপ্লবী সৈনিক, যারা তাবেদার – অসত্যের পথের যাত্রীকে উৎখাত করে সত্যের বিজয় নিশান উড়িয়েছে। তুমি তো তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ কর, যারা ছিলেন তাকওয়া- পরহেজগারীর উজ্জল দৃষ্টান্ত। যারা দিনের বেলায় বাতিলের টুটি চেপে ধরেছে, আর রাতে মহান রবের দরবারে লুটিয়ে পড়েছে।
হে ওলামায়ে দেওবন্দের উত্তরসুরী! আজ তোমার কলম, তোমার লিখনী – বক্তৃতা, তোমার যবান কোনদিকে ব্যবহার হচ্ছে। তুমি জান না? তোমার পুর্বসুরীগণেরর লিখনী, বক্তৃতা, তাদের যবান কত সামঞ্জস্যপুূর্ণ ছিল। যারা সুযোগ পেয়েও কখনো কলমের কালি অবৈধ – অন্যায়ের রাস্তায় ব্যবহার হয় নি।
হে কলম সৈনিক! কোনদিকে ছুঁটে চলেছে তোমার কলম। ওলামায়ে হকের লিখনীতে ভোতা হয়েছে ফেরাকে- বাতেলার কলম। শক্তি হারিয়েছে তাদের লিখনী। হক্কানী লেখক- কলামিষ্টদের ক্ষুরধর লিখনীর কাছে ঘাপটি মেরে থাকা বতিল স্যারেন্ডার করেছে।
আজ কেন তোমার কলম চলে এলেমেলো। কেনইবা তোমার যবান দরাজ হয় ভিন্নপথে। বড় আফসোস! তুমি হাদীস পড়নি? তুমি বুজুর্গদের সোহবতে বসনি? তুমি দেখনি আমাদের পুর্বসুরীগণ কেমন ছিলেন?
আমি তোমাদের জন্য সিহাহ সিত্তার প্রসিদ্ধ এক কিতাব আবু দাউদ শরীফের একটা হাদীস তুলে ধরছি, যে হাদীস খানা ফকীহুল উম্মাহ মুফতী মাহমুদ হাসান গাঙ্গুহী রহ, এর কিতাব, যেটা সংকলন করেছেন, তাঁর খলিফা মুফতী ফারুক রহ, “হুদুদে ইখতেলাফ” এর মুকাদ্দামায় ( সংকলকের অভিমত) অনুবাদ- সম্পাদনা, মাওলানা মামুনুর রশীদ দামাত বারাকাতুহুম।(আযিযী প্রকাশনী- ফেব্রয়ারী – ২০১০)
হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ” হাল্লা সাকাকতা আন কালবিহি” ” তুমি তাঁর হৃদয় চিরে দেখলে না কেন?
আবু দাউদ শরীফের হাদীসের অংশ, যা মুলত; একটা ঘটনার দিকে ঈঙ্গিত করেছে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম , মুজাহিদদের একটা জামাতকে হরাকাতের কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য পাঠালেন। তখন কাফেররা মুজাহিদ বাহিনীর আগমনের সংবাদ পেয়ে পালিয়ে গেল। সে যুদ্ধে মাত্র একজন কাফেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হল।অত:পর যখন তাকে মুজাহিদরা হত্যা করতে উদ্ধ্যত হলেন, তখন সে কালিমা ” লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু” পড়ল কিন্তু এতদসত্বেও তাকে হত্যা করা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ঘটনা শুনে নারাজ হয়ে বললেন, ” কিয়ামতের দিন সে যখন ” লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ ” নিয়ে উপস্হিত হবে তখন তোমাকে কে নাজাত দিবে? সাহাবী উত্তর দিলেন, ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! সে তো অস্ত্রের ভয়ে কালিমা পড়েছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ” হাল্লা সাকাকতা আন কালবিহি” তুমি তার দিল চিরে দেখলে না কেন? তাহলে বুঝতে পারতে যে, সে কি জন্য কালিমা পড়েছিল। অত:পর তিনি বার বার এ কথাই বলতে ছিলেন, কিয়ামতের দিন সে যখন ” লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ” নিয়ে উপস্হিত হবে তখন তোমাকে কে রক্ষা করবে? সাহাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ কথাটা বার বার বলার কারণে আমার মনে চাচ্ছিল যে, হায়! এ ঘটনার পুর্বে যদি আমি ইসলাম গ্রহণ না করতাম তাহলে ভাল হত। কারণ, ইসলাম গ্রহণ করলে পিছনের সব গোনাহ মাফ হয়ে যায়। তাই এ গোনাহও মাফ হয়ে যেত।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথার উদ্দেশ্য হল, ‘ লোকটা শুধু অস্ত্রের ভয়ে কালিমা পড়েছিল, আসলে সে মুসলমান হয়নি” এটা বোঝার কোন উপায় নেই। দিল চিরে দেখলেও তা বোঝা যাবে না। সুতরাং শুধু ধারণার উপর ভিত্তি করে,নিজের পক্ষ থেকে এমন কথা বলার অনুমতি নেই। বরং তাঁর বাহ্যিক কথার ভিত্তিতেই তাঁর ঈমান আছে বলে বিস্বাস করতে হবে।আর দিলের ব্যাপারে আল্লাহ পাকের উপর ছেড়ে দিতে হবে।
এখানে লক্ষনীয় বিষয়, যুদ্ধের ময়দানে সব কাফের পলায়ন করল, শুধু মাত্র একজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হল। আর সেই ব্যক্তিটির সাথে এমন আচরণ করা হচ্ছে, যা কোন মুসলমানের সাথে করা হয়। অথচ ঐ ব্যক্তির এমন কোন আমলনেই, যেটা ইসলামে সমর্থন করে। সে তো সারাজীবন ছিল ভিন্ন মত- পথের।
এবার চিন্তা কর ভাই – বন্ধু, আপাদামস্তক যাদের দ্বীনের ছাঁচে গড়ে উঠেছে। পুরো জীনটাই যাদের নুরানী শোভায় সুশোভিত। তাদের কে গালিগালাজ করা হচ্ছে। কাফের ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে। কোন আলেমকে বলা হয় “মুলহিদ”। বড় পরিতাপের বিষয়। যুদ্ধের ময়দানে একজন কাফের শুধু মুখ দিয়ে ” লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বলেছে,তাও অস্ত্রের মুখে। সেই ব্যক্তিটি কিয়ামতের দিন ” লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ” নিয়ে আল্লাহর সামনে হাজির হবে। এবং জওয়াবদিহি করতে হবে। কিন্তু আজ যে সমস্ত আলেম, উস্তাদুল আসাতিযা, মুহাদ্দিস, মুফতী, শায়েখে তরিকত- মারেফত, তাদেরকে কটাক্ষ করা হচ্ছে, অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া হচ্ছে, তাদের এই কৃত- কর্মের কারণে কি আল্লাহর কাছে জওয়াব দিতে হবেনা?
কিয়ামতের ময়দানে আসামী হয়ে আল্লাহর আদালতে দাঁড়াতে হবে কোন সন্দেহ নেই। শুধুমাত্র ধারণাবশত: অন্য কোন মুসলিম বা কোন আলেমকে গালি দেওয়া শরীয়াতে সমর্থন করে না। একজন মানুষের প্রতি বদগোমানী করা তো অবৈধ। গোনাহের কাজ। কুরআনুল কারীমের সুরা হুজুরাতে আল্লাহ বলেছেন, ” হে মু’মিনগন! তোমরা বহুবিদ অনুমান থেকে দুরে থাকো, অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ” ( সুরা হুজুরাত- ১২)
বর্তমানে আমাদের কওমীর সন্তানদের মুখ দিয়ে বের হচ্ছে গালিগালাজ। আপন উস্তাদ, মুরুব্বী আলেম , দেশ সেরা আলেমদের যা- ইচ্ছে- তাই ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। এক সময় দেখতাম, বাতিলপন্হীরা আলেমদের কটাক্ষ করে যবানদারাজী করত। বিশেষ করে বেদআতী এবং ভ্রান্ত চিন্তা- চেতনা লালনকারী সংগঠনের নেতা কর্মিরা ওলামায়ে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতকে অকথ্য ভাষায় গালি দিত। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, নিজের ঘরের সন্তানেরা আলেমদের হেয় প্রতিপন্ন করছে। তাঁদের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
আরো দুঃখজনক হলো, এমন এমন আলেমদের শানে আজ যবানদারাজী হচ্ছে, যারা আলেমদের মাথার মুকুট। তাঁরা একেকজন মুকুটহীন সম্রাট। যাদের হাজার হাজার ছাত্র রয়েছে।যে সব ছাত্ররা এখন সমাজের উচ্চ মর্যাদায় আসীন। সে সমস্ত ব্যক্তিবর্গকে অপমান- অপদস্ত হতে হচ্ছে বার বার।
তবে কেন এই বিপথে কওমীর সন্তানেরা?
অনেক চিন্তা- ভাবনা, তথ্য- উপাত্তের ভিত্তিতে কয়েকটি কারণ বোঝা যায়। অনেক বিজ্ঞজনের ধারণাও এমন। কওমীর কিছু সন্তানের এই পদস্খলন এর পিছনে যে সব বিষয় গুলো নজরে ভাসে তা নিম্নরুপঃ
এক, তরবিয়্যাতবিহীন ছাত্র সংগঠন এর বদ-আছরঃ আগে কওমী মাদ্রাসাগুলোতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। কোন প্রকার রাজনীতি মাদ্রাসার আঙিনায় করা যাবে না। আমাদের উস্তাদে মোহতারম, আল্লামা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহ রহ, তিনি ছাত্র রাজনীতির ঘোর বিরোধী ছিলেন। মালিবাগ মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার সময় অঙ্গীকার করায়ে নিতেন প্রতিটি ছাত্রকে, কেউ ছাত্রাবস্হায় রাজনীতি করতে পারবে না। হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ; তিনিও ছাত্র রাজনীতির বিরোধী ছিলেন। তিনি বলতেন, ভাল করে লেখা- পড়া করাই ছাত্রদের রাজনীতি।
কিন্তু হাফেজ্জী হুজুরের ইন্তেকালের পর থেকে ছাত্র রাজনীতি ছড়িয়ে পড়েছে। এখন দেশের অধিকাংশ মাদ্রাসায় ছাত্ররা নানান রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সম্পর্ক রেখে চলে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, অধিকাংশ ছাত্র সংগঠন লাগামহীন ভাবে চলছে। কোন তরবিয়্যাত দেওয়া হয় না। কোন আত্মশুদ্ধির ব্যবস্হা নেই। কিছু কিছু সংগঠনে আত্মশুদ্ধির ব্যবস্হা থাকলেও বাকি গুলোর অবস্হা খুবই শোচনীয়। আদব- কায়দার বালাই নেই। একটা ভবঘুরে ভাব।
এজন্য এই সকল তরবিয়্যাতবিহীন সংগঠনগুলো বড় ক্ষতি করছে শিক্ষাব্যবস্হাকে। ছাত্রদের আদব- আখলাকের চরম অবনতি ঘটছে। বেপরোয়া চলাফেরার কারণে কোন মুরুব্বীকে তোয়াক্কা করছেনা। বরং বেয়াদবি করছে বার বার। এ কারণে কওমী মাদ্রাসাগুলো ছাত্র রাজনীতি মুক্ত থাকা সময়েরদাবী। কেননা, এই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে এখন মুরুব্বীদের বিরুদ্ধে কলমধরা শুরু করেছে, এগুলো যদি বন্ধ না করা হয়, অদুর ভবিষ্যতে আরো অবনতির দিকে যাবে আমাদের ছাত্রদের অবস্হা।
দুই, ফেরাকে বাতেলার সংস্রবঃ ছাত্র সংগঠনগুলোতে ফেরাকের বাতেলার ছোঁয়া লেগেছে। রাজনীতি করতে গেলে কমবেশী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে লিয়াঁজো করে চলতে হয়, যার কারণে তখন বাছ- বিছার হয় না।কে হক আর কে না হক সেটা দেখা হয় না।
বেশী ক্ষতি হয়েছে আমাদের ফেরাকে বাতেলার সাথে রাজনৈতিক ঐক্য। এই রাজনৈতিক ঐক্যে আমরা দুর্বল হয়েছি তাদের উপর। কথায় আছে, ” আল ইনছানু আব্দুল ইহসান” মানুষ দয়ার দাস। জোট গঠন করে নির্বাচনী ঐক্যের কারণে বাতেল সংগঠন এর ব্যাপারে মুখে এখন তালা লেগে গেছে। কেউ আর সেসব বাতিলপন্হীদের বিষয়ে মুখ খোলে না। একদম মিশে গেছে বাতিল ফেরকার সাথে।
এক সময় কওমী মাদ্রাসাগুলোতে ফেরাকে বাতেলার ব্যাপারে হুশিয়ার থাকতে বলা হত। দেশের প্রায় সকল কওমী মাদ্রাসায় ফেরাকে বাতেলা সম্পর্কে বিস্তর লেখাপড়া হত। তর্ক- বিতর্ক অনুষ্ঠান হত। একজন বিজ্ঞ উস্তাদের নেগরানীতে বাতিল ফির্কা কি কি? এবং তাদের পরিচয় কি? বিস্তারিত আলোকপাত হত তখন। বিভিন্ন বই পুস্তক,প্রবন্ধ, বিভিন্ন লেখনী পড়ে ছাত্ররা গভীর পান্ডিত্য অর্জন করতে পারত। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বর্তমানে কওমী মাদ্রাসাতে ফেরাকে বাতেলা সম্পর্কে আগের মত ছাত্রদের প্রস্তুত করা হচ্ছে না। ওদের সাথে ইলেকশন করতে গিয়ে সব ভেস্তে গেছে।
আর এই ফেরাকের বাতেলা সম্পর্কে ছাত্রদের গভীর জ্ঞান না থাকা। এবং তাদের সংস্রবে আমাদের ছাত্ররাও বেয়াদব- বে আমল – উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যাচ্ছে। এখন গীবতের মজলিস বসে মাদ্রাসাতে। অনলাইনে – অফলাইনে ছাত্ররা উস্তাদদের শেকায়েতে লিপ্ত হয়।
ফেরাকে বাতেলার সংস্রব থেকে কওমীর ছাত্রদের দুরে থাকা চাই। ওদের সাখে মিশে গেলে অপুরণীয় ক্ষতি হবে আমাদের সন্তানদের।
তিন, সোহবতে আহলুল্লাহর অভাবঃ কওমীর শিক্ষার্থীদের আল্লাহ ওয়ালাদের সংস্পর্শে যাওয়া জরুরী। প্রত্যেক ছাত্রকে লেখাপড়ার সাথে সাথে বুজুর্গদের সোহবতে সময় কাটাতে হবে। বিশেষ করে নবীন ফারেগীনদের কোন বুজুূর্গ ব্যক্তির সোহবতে দীর্ঘ সময় পার করা চাই। আগে প্রতিটি কওমী মাদ্রাসা যেন একটা খানকা ছিল। আমল- আখলাকের তরক্কীর জন্য ছাত্রদের ট্রেনিং দেওয়া হত। ইসলাহী মজলিস বসত। মাশায়েখে কেরামদের আগমন ঘটত প্রায় সময়।
আমাদের পুর্বসুরীগণ আত্মশুদ্ধির মেহনতে জোর দিয়েছেন বেশী। আকাবির – আছলাফগণ মাদ্রাসাতে খানকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দারুল উলুম দেওবন্দ, সাহারাণপুর, গাঙ্গুহতে মাদ্রাসার সাথেই রয়েছে বুজুর্গানেদ্বীনের খানকা। তাঁরা তালীমের পাশাপাশি খানকাতে ইসলাহী কাজ করেছেন।
হযরত মাদানী রহ: তাঁর খানকাতে ছাত্র -শিক্ষক, সাধারণ জনতার ইসলাহী প্রশিক্ষণ হত। দুর- দুরান্তের আলেম- উলামা ছুটে আসতেন। বিশেষ করে ফারেগীন ছাত্রদের বিশেষ ভাবে মেহনত করতেন। আমাদের আল্লামা কাজী মু’তাসিম বিল্লাহ রহ; দেওবন্দ থেকে ফারেগ হওয়ার পর প্রায় একবছর যাবত মাদানী রহ; এর খানকায় রিয়াযত- মুজাহাদার কাজ করেছেন। তারপরে তিনি দেশে ফিরেছিলেন।
এরকম আমাদের মুরুব্বীদের সকলেই আহলুল্লাহ এর সোহবতে থাকাকে আবশ্যকীয় ভাবতেন। যত বড় বুজুর্গ ব্যক্তি আমরা দেখিনা কেন, সকলের ইসলাহী প্রশিক্ষণে সময় কেটে গেছে।
আমাদের এ প্রজন্মের সন্তানদের আল্লাহ ওয়ালাদের খেদমতে যেতে হবে। হক্কানী বুজুর্গদের খানকার সাথে জুড়ে থাকতে হবে। তাহলে জীবনের মোড় ঘুরে যাবে। ছাত্রদের থেকে এসকল অনাকাংখিত ঘটনা আর হবে না। আদব- ইহতেরামের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে। আল্লাহ আমাদের সকলকে সহী বুঝ দান করুন। আমিন।
লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট