কবে যাবো ক্যাম্পাসে | আশরাফ উদ্দীন রায়হান
কোভিড-১৯ তথা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে গত ১৮ মার্চ যখন ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়, তখন আমরা ভেবেছিলাম, এই তো দশ-বারোদিন পরেই আবার অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই পড়ালেখার কোনো ম্যাটারিয়াল সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে আসিনি। কিন্তু এরপরের অবস্থা কী হয়েছিল এবং এখনো হচ্ছে তা তো সবারই জানা।
সরকারঘোষিত ও বাস্তবায়িত পদক্ষেপের মধ্যে দফায় দফায় লকডাউন ঘোষণা, আন্তঃজেলার সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ, রেডজোন চিহ্নিতকরণ থেকে বর্তমানের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করা উল্লেখযোগ্য। লেখাই বাহুল্য যে, করোনার থাবা থেকে দৃশ্যত আজ কোনো কিছুই রেহাই পায়নি। প্রভাবমুক্ত থাকতে পারেনি কোনো খাতই। আমি যেহেতু শিক্ষার্জন করছি তাই পড়ালেখা নিয়েই আমার উদ্বেগ বেশি।
দুদিন আগে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর স্যারের সাথে ফোনালাপের সুযোগ হয়েছিল। কথা বলার এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস খোলা-না খোলার প্রসঙ্গে আসলাম। তাঁর ভাষায়, ‘সবকিছুই এখন নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপরে। যদি তা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসে, তাহলে খোলা হবে। না হলে আরও অপেক্ষা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নভেম্বরের দিকে খুলে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। তাই আপাতত বলা যেতে পারে যে, নভেম্বরের আগে সম্ভবত খোলা হবে না। আর আমাদের ক্যাম্পাস তো আরেকটু দেরিতেই খুলবে মনে হয়।’
সম্প্রতি সরকারের অনুমতিতে দেশের মাদরাসা (হিফজ) খুলে দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানা যাচ্ছে না। তাই আমাদের কৌতূহলী মনের অস্থিরতারও শেষ নেই। ইউজিসির পক্ষ থেকে অমুক কথা বলা হয়েছে বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে তমুক খবর বেরিয়েছে শুনতে শুনতে আজ আমরা অনেকটাই দিশেহারার মতো হয়ে গেছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সেপ্টেম্বরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য নির্দেশনাই আজ শুধু সামনে আছে। এছাড়া নির্ভরযোগ্য আর কোনো তথ্যই আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়গুলো তাঁকে শোনালে তিনি বলেন যে, ‘It totally depends on Prime Minister and Ministry’s decision.’
আমরা আমাদের লেখাপড়া নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। তবে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হাইস্কুল ও প্রাইমারি স্কুল খোলার সিদ্ধান্তকে সময়োচিত না বলে উপায় নেই। আমাদের দেশের মাদরাসাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে যদি চালু করা যেতে পারে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ব্যাপারে এখনো কেন কার্যকর কোনো তৎপরতা নেই, তা আমাদেরকে ভাবিত করে। দায়িত্বশীল মহল আমাদের সবার কল্যাণের জন্য একটু ভাববেন কী?
লেখক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী
ই-মেইল : auraihan3824@gmail.com