কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলায় ৮ যাত্রী হত্যা মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো এবং মামলার পরবর্তী তারিখে তাকে আদালতে হাজির রাখতে নির্দেশ (পিডব্লিউ) দিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত।
সোমবার এ আদেশ দেন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মুস্তাইন বিল্লাহ। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ২৮ মার্চ ধার্য করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার কোর্ট পরিদর্শক সুব্রত ব্যানার্জি।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে থাকা খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাজা পেয়ে খালেদা জিয়া এখন পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। বকশিবাজারের কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত ঢাকা বিশেষ জেলা জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আথখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ রায় দেন। বিগত সেনা-সমর্থিত সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া গত ২০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে আপিল করেন। আপিল গ্রহণ ও শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার তাকে চার মাসের জামিন দেন। এর পর আজ বিকেলে কুমিল্লার মামলায় খালেদা জিয়াকে হাজিরের জন্য প্রজেকশন ওয়ারেন্ট জারি করে নিম্ন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, সোমবার কুমিল্লার ৫ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুস্তাইন বিল্লাহর আদালতে ঢাকার গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানান। শুনানি শেষে বিকালে আদালত খালেদাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন গ্রহণ করে আদেশ দেন। এ ছাড়া মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার আদেশ দেয়া হয়।
এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম জয়নব বেগম ওই মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৪৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর মধ্যে জামিনে আছেন ২৯ জন এবং জেল হাজতে রয়েছেন একজন।
২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে একটি বাসে পেট্রোলবোমা ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে ৮ জন যাত্রী দগ্ধ হয়ে মারা যান এবং আহত হন আরও ২০ জন। এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৭৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ৬ জন নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে ৩ জন আসামি মারা যান এবং ৫ জনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়। গত ২ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক ফিরোজ হোসেন কুমিল্লার আদালতে খালেদা জিয়াসহ ৬৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।