কোরআন তেলাওয়াতে বদলে যায় নাফিসের জীবন

কোরআন তেলাওয়াতে বদলে যায় নাফিসের জীবন

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : অর্থের অভাবে পড়ে কাজের সন্ধানে থাইল্যান্ড থেকে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান নাফিস ইয়াকুব নামের এক তরুণ। কিন্তু অবৈধভাবে আসায় সর্বদা তাঁকে পুলিশের ভয়ে থাকতে হতো। তদুপরি কাজের সন্ধানে দিন গুজরান করতে থাকেন।

তখন রমজানের কয়েক দিন বাকি। বিভিন্ন মসজিদ থেকে তারাবি নামাজ পড়ানোর ডাক আসা শুরু হয়। এমনি সময় একদিন রাতে ইউসুফ খাবার খেতে ঘর থেকে বের হন। ঘটনাক্রমে টহলরত মালয় পুলিশ তাঁকে পরিচয়পত্র দেখাতে বলে। কিন্তু কোনো বৈধ নথিপত্র না থাকায় পুলিশ ইউসুফকে জেলে নিয়ে যায়। অবৈধভাবে মালয়েশিয়া আসায় তাঁকে কারাগারে রাখা হয়। যেন উপযুক্ত সময়ে তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো যায়।

কারাগারের কোনো ফ্যান ছিল না। পুরো সময় ঘুমিয়ে কাটাতেন ইউসুফ। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে গায়ের জামা খুলে তাতে বসতেন। খাবারের আগে ঘুম থেকে জেগে বসতেন। খাবারের অপেক্ষার সময় তাঁকে বসে থাকতে হতো। এ সময় তিনি অত্যন্ত সুন্দর কণ্ঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতেন। কণ্ঠস্বর মনমুগ্ধকর হওয়ায় সবাই তাঁর কোরআন তেলাওয়াত শুনতে আসতেন।

দায়িত্বরত এক নিরাপত্তাকর্মী ইউসুফের সুন্দর কোরআন তেলাওয়াতের দৃশ্য ভিডিও করেন। ভিডিওতে দেখা যায় বন্দীরা ভিড় করে তার তেলাওয়াত শুনছে। পরবর্তীতে তা ইন্টারনেটে ভাইরাল হয় এবং তাঁর সুন্দর কণ্ঠে সবাই মুগ্ধ হয়। সবার মুগ্ধতার পাশাপাশি ইউসুফের দুঃখ-কষ্টে ভরা জীবন দেখে মালয়েশিয়ার মুসলিমরা তাঁর প্রতি সহানুভূতি দেখান। এমনকি মালয়েশিয়ার একজন মন্ত্রী কারাগারে এসে ইউসুফের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

অজ্ঞাত কারণে কয়েক দিন পর ইউসুফের ছয় মাসে জেল কমিয়ে চার মাস করা হয়। এ সময় তিনি বন্দীদের নিয়ে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করতেন। রমজানে তারাবি নামাজ আদায় করতেন। বন্দীদের তিনি ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো শেখাতেন। তাঁর নিজস্ব কর্মতৎপরতায় অনেক কারাবন্দীর জীবন বদলে যায়।

নির্দিষ্ট সময়ের পর ইউসুফ কারাগার থেকে মুক্তি পান। মালয়েশিয়ার একটি দাওয়াহ বিষয়ক কোর্স সম্পন্ন করে তিনি একটি মসজিদে ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হোন। পরবর্তীতে কম্বোডিয়ায় তাহফিজ আল কালাম নামে একটি মাদরাসা পরিচালনা করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *