পাথেয় রিপোর্ট : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রোববার ২৮ অক্টোবর এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে নিবন্ধন দেওয়া হয়েছিল। দলটির নিবন্ধন নম্বর ছিল ১৪।
২০০৯ সালে হাইকোর্টে দায়ের করা ৬৩০ নম্বর রিট পিটিশনের রায়ে আদালত জামায়াতে ইসলামীর অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০ এইচ ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হলো।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে তখন থেকে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পরে আমরা প্রজ্ঞাপন জারি করেছি। হাইকোর্টের নির্দেশে যেহেতু বাতিল, রায় পেতে সময় লেগেছে। এখন প্রজ্ঞাপণের মাধ্যমে এটা বতিল করা হয়েছে।’
আপিল বিভাগের কোনও নির্দেশনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপিল বিভাগ থেকে আমরা ইনফরমেশন স্লিপের মাধ্যমে অ্যাডভোকেটের প্রত্যায়নপত্র নিয়েছি। দেয়ার ইজ নো স্টে অর্ডার। আপিল বিভাগের কোনও স্থগিতাদেশ নেই।’
নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। ওই দিনই রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করে জামায়াত।
এদিকে সব প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থায় জামায়াতের অংশ নেওয়ার সব পথ মোটামোটিভাবে বন্ধ হয়ে গেলো বলে মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা। তাদের মতে, হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে যদিও জামায়াত আপিল করেছে। কিন্তু আপিল কর্তৃপক্ষ আগের রায় স্থগিত করে আপিল গ্রহণ না করায় নিবন্ধন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন। এখন আপিলে যদি জামায়াতের নিবন্ধন প্রক্রিয়া বৈধ হয়, তবে জামায়াতকে নিয়ে আবারও ভাবতে হবে ইসিকে।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব মাওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে এক রিট পিটিশন দায়ের করেন। কয়েক দফা শুনানির পর হাইকোর্ট রিট পিটিশন নং ৬৩০/২০০৯ এর ওপর ২০১৩ সালের ১ আগস্ট এক রায়ে, জামায়াতকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন প্রদানকে আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও আইনগত অকার্যকর এবং জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেন।
