পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নির্মূলে ১০ দিনের বিশেষ অভিযান গতকাল মঙ্গলবার শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় সাত লাখ ৯৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে মোট ২১ জন ডেঙ্গু রোগী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছে।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। ঢাকার বাইরে কোনো হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী নেই বলেও জানানো হয়।
এ নিয়ে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে মোট ভর্তি হওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২২৪। এর মধ্যে ২০৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এ সময়ে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি। গত বছর সারা দেশে ২৮ হাজার ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে ২৮ হাজার ২৬৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে। মারা যায় ১০৫ জন।
গুলশানে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পার্ক সংলগ্ন এলাকায় ১০ দিনব্যাপী বিশেষ মশা নিধন অভিযান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা।
এ সময় সেলিম রেজা বলেন, মেয়রের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে, যেকোনো ভবনে, নির্মাণাধীন বাড়িতে, সরকারি-বেসরকারি বা আধাসরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠানে, এমনকি সিটি করপোরেশনের কোনো অফিসে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে সারা বছর নিয়মিত মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম চলমান থাকে। এই মৌসুমে মেয়রের নির্দেশনায় আমরা এরই মধ্যে হটস্পট চিহ্নিত করে অঞ্চল ও ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। ’
উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনটি নির্মাণাধীন ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মোট ছয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ডিএনসিসির অঞ্চল-১-এর আওতাধীন ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর ৪, ৬ ও ৮ এবং ওয়ার্ড ১৭-এর নিকুঞ্জ-১, ২ ও জামতলা, টানপাড়া এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকারনাইন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাঁড়ে কিউলেক্স মশকবিরোধী অভিযান ও সমন্বিতভাবে এডিসবিরোধী অভিযান চালানো হয়। পাঁচটি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় পাঁচটি মামলায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং দুটি নিয়মিত মামলা করা হবে।
অঞ্চল-৬-এ ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরা সেক্টর-১১-এ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান চালান। অভিযান পরিচালনাকালে দুটি স্থানে মালিকবিহীন পরিত্যক্ত টায়ারে ও দুটি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। সেখানে লার্ভা ধ্বংস করে দুজন ভবন মালিককে দুটি মামলায় ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এর আগে গত ১১ মে সকালে উত্তরায় এডিস ও ডেঙ্গুবিরোধী নাগরিক সচেতনতামূলক পথসভায় অংশ নিয়ে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসি এলাকায় ১০ দিনের মশা (ডেঙ্গু ও এডিস) নিধন কর্মসূচির ঘোষণা দেন। ১৭ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।