‘দলবান্ধব বাজেটের পরিবর্তে জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর বাজেট চাই’
পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : জাতীয় প্রেসক্লাব চত্ত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে দুর্নীতিবাজদের বৈধতাদানের বাজেট প্রত্যাহার এবং জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর বাজেট ঘোষণার দাবিতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। এতে ইসলামী আন্দোলন বাংলদেশ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতিবাজদের বৈধতাদানের বাজেট। ত্রাণের মাল চুরি, দেশের সম্পদ লুটেপুটে যারা খেয়েছে তাদের সকল অন্যায়ের অনুমোদনের বাজেট। দলবান্ধব বাজেট নয়, জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর বাজেট প্রত্যাশা দেশবাসীর। নেতৃবৃন্দ বলেন, সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা বাঁচানোর কোন নির্দেশনা নেই বাজেটে। বাজেটে কর্পোরেট কর কমিয়ে দিয়ে মোবাইল সিম ও সিম কার্ডের মাধ্যমে দেয়া সেবার ওপরে সম্পূরক শুল্ক ৫শতাংশ বাড়ানোর মাধ্যমে করোনার এই কঠিন আর্থিক সংকটের মুহুর্তে সাধারণ মানুষের খরচ বাড়িয়ে শোষণ করছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ প্রচার সম্পাদক মু. হুমাযুন কবীর প্রমুখ। অত্যন্ত বৈরী আবহওয়ার মধ্যেও বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী বৃষ্টি ভিজে মানববন্ধনে অংশ নেন।
সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বাজেটের আকার বাড়িয়ে ঋণ ও সুদের বোঝা বাড়ানো হচ্ছে। সুদ ও ঋণনির্ভরতা কমাতে হলে যাকাতভিত্তিক অর্থ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে সরকারের পক্ষে ঘাটতি বাজেট থেকে বের হয়ে আসা কখনোই সম্ভব হবে না। করোনার বাস্তবতা ও দেশের রাজস্ব আদায়ের অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নতুন অর্থবছরে সরকারের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব। ফলে বাজেটে ঘাটতি ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি থেকে আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। হিরামনিকে ধর্ষণ করে হত্যা করার পরও জোরালো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। কালো টাকার মালিক অসৎ ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদেরকে সাদা মানুষে পরিণত করতে সরকার বাজেটে অনৈতিক প্রস্তাব এনেছে।
প্রধান বক্তা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্যখাত নিয়ে নির্মম তামাশা জাতিকে হতভম্ব করেছে। দক্ষিণ এশিয়াতেই স্বাস্থ্যখাতে মাথাপিছু মালদ্বীপ ব্যয় করে ২০০০ ডলার, শ্রীলংকার ৩৬৯, ভারত ২৬৭, পাকিস্তান ১২৯, আর বাংলাদেশ করে মাত্র ৮৮ডলার। জিডিপির তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে কম ব্যয় করে যথাক্রমে মোনাকো, পাপুয়া নিউগিনি ও ব্রুনাই। বাংলাদেশ এই তিনটিরও পেছনে। মহাকাশ থেকে মহাসমুদ্র কত কিছু তারা জয় করেছে বলে বিলবোর্ডে দেখি। কিন্তু এই এক যুগেও তারা স্বাস্থ্য সেবার মতো মৌলিক খাতকে তারা সমৃদ্ধ করতে পারেনি এবং সেটা সংসদে প্রকাশ্য ঘোষণাও দেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু হতে পারে না। তিনি উচ্চাভিলাষী বাজেট প্রত্যাহার করে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নতুন বাজেট ঘোষণার দাবি জানান।