দাসপ্রথার জন্য ক্ষমা চাইলেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী

দাসপ্রথার জন্য ক্ষমা চাইলেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী

পাথেয় টোয়েন্টিফোর ডটকম : নেদারল্যান্ডে দীর্ঘ সময় ধরে দাসপ্রথা অনুযায়ী মানুষ কেনা-বেচার সংস্কৃতির কারণে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশটির রাজধানী হেগে এক বক্তব্যের সময় তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। “আজ আমি ক্ষমাপ্রার্থী” শিরোনামে ২০ মিনিট ধরে তার দেওয়া বক্তব্যের সময় মৌনতা বজায় রেখে এই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বাগত জানায় অতিথিরা।

যদিও এই সংক্রান্ত অধিকারকর্মীদের দাবি ছিল, ১ জুলাই “দাস প্রথার সমাপ্তি”র ১৫০ বছর পূর্তি দিবসে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করার।

প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, “শতাব্দি ধরে ডাচ রাষ্ট্রের কর্তৃত্বের অধীনে সবচেয়ে সম্ভাব্য ভয়ঙ্কর উপায়ে মানুষের মর্যাদা লঙ্ঘন করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “অতীতের দাসপ্রথা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। সেটি এখনও চলমান। ১৮৬৩ সালের পরের ডাচ সরকারগুলো সেটি বুঝতে ও স্বীকার করতে পারেনি। এজন্যও আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”

ডাচ প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ আমি ক্ষমা চাইছি।”

মার্ক রুট বলেন, “এই দাসপ্রথা থেকে ডাচ রাষ্ট্র এবং এর প্রতিনিধিরা সুবিধা নিয়েছে। ওই সময় মানুষকে পণ্যে পরিণত করা হয়েছিল, শোষণ করা হয়েছিল এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছিল।”

ডাচ রাষ্ট্র ক্রীতদাস তাদের বংশধরদের ভয়ানক দুর্ভোগের দায়ভার বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এখন আমরা কেউ এই দাসত্বের জন্য দায়ী নই। তবে এই দাসপ্রথা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। ফলে এর বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো উচিৎ।”

আজকের আগেও ডাচ সরকার দাসপ্রথায় জাতির ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেছিল। এমনকি দেশটির সংসদেও সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনপ্রণেতা ক্ষমা চাওয়াকে সমর্থন করেন।

ক্ষমা চেয়ে ডাচ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের সময় মৌনতা বজায় রেখে এই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বাগত জানায় অতিথিরা/ সংগৃহীত
মার্ক রুট বলেন, “নেদারল্যান্ডস সরকার ও এর প্রাক্তন উপনিবেশগুলোতে দাসত্বের উত্তরাধিকার মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি তহবিল প্রতিষ্ঠা করবে।”

ডাচরা প্রায় ৬ লাখ আফ্রিকানকে প্রধানত ক্যারিবিয়ান এবং দক্ষিণ আমেরিকায় দাস হিসেবে কাজ করার জন্য পাচার করেছিল।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রি ইউনিভার্সিটি অফ আমস্টারডামের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ইতিহাসের অধ্যাপক পেপিজন ব্র্যান্ডন বলেন, “ইউরোপীয় সমাজগুলোর মধ্যে নেদারল্যান্ডস অন্যতম যাদের দাসপ্রথার সাথে সবচেয়ে প্রত্যক্ষ এবং ব্যাপক সম্পর্ক ছিল।”

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, নেদারল্যান্ডসে অশ্বেতাঙ্গ কর্মকর্তারা নানা সময় বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার হয়ে থাকেন ও তারা পদোন্নতিতেও পিছিয়ে থাকেন।

এমনকি অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে আফ্রিকান দেশগুলোকে বানরের দেশ হিসেবেও উল্লেখ করে থাকেন এই শ্বেতাঙ্গরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *